সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জীবনের উনত্রিশটা বছর কেটে গিয়েছে পাকিস্তানের জেলে (Pakistani Jail)। যদিও গুপ্তচর বৃত্তির (Informer) অভিযোগে তাঁকে ২৫ বছরের কারাদণ্ডের (25 Years Imprisonment) শাস্তি দিয়েছিল পাক আদালত। সেই কুলদীপ সিং (Kuldeep Singh) শুক্রবার রাতে ঘরে ফেরার পরেই আতশবাজি পুড়িয়ে উৎসব করলেন গ্রামবাসীরা। আর কুলদীপ বললেন, “সমস্ত বন্ধু, গ্রামবাসী এবং বিশেষ করে যুবকদের প্রতি আমার বার্তা হল, ভুল পথ থেকে দূরে থাকুন। ভুল রাস্তা ক্ষতি করতে পারে। কিন্তু, দেশের জন্য কোনও ত্যাগ স্বীকার থেকে কখনও পিছপা হবেন না।”
এদিন ঘরে ফিরে পাকিস্তানের জেলে কীভাবে ভারতীয়দের উপর নৃশংস অত্যাচার চালানো হয়, সেই কথা জানান কুলদীপ। তিনি আরও বলেন, পাকিস্তানে কোনওভাবে কোনও ভারতীয় ধরা পড়লেই তাঁকে গুপ্তচর বলে দেগে দেওয়া হয়। এইসঙ্গে তাঁর উপর ভয়ংকর নির্যাতন চালানো হয়ে থাকে। যেমনটা হয়েছে তাঁর উপরেও।
[আরও পড়ুন: ১২ বছর পরে ‘মৃত’ ব্যক্তির চিঠি এল পাকিস্তানের জেল থেকে! বিহারে ঘনাচ্ছে রহস্য]
৫৩ বছর বয়সি কুলদীপ জম্মু-কাশ্মীরের (Jammu & Kashmir) সীমান্তবর্তী এলাকা কাঠুয়ার বাসিন্দা। ১৯৯২ সালে ভুল করে পাক ভূভাগে ঢুকে পড়েন তিনি। এবং পাক সেনার (Pakistani Army) হাতে ধরা পড়েন। এরপর তাঁর উপর টানা সাড়ে তিন বছর ধরে অমানবিক নির্যাতন চালায় পাকিস্তানি তদন্তকারী সংস্থাগুলি। তাঁকে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে একটি আদালতেও হাজির করা হয়। সেখানে ২৫ বছরের কারাদণ্ডের শাস্তি দেওয়া হয় কুলদীপকে।
জানা গিয়েছে, পাকিস্তানে গ্রেপ্তার হওয়ার পর, লাহোরের কোর্ট লাখপত জেল থেকে পরিবারের উদ্দেশে চিঠি লিখেছিলেন কুলদীপ। তখনই পরিবারের সদস্যরা তাঁর অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হন। তবে তিনি যে কোনও দিন বাড়ি ফিরতে পারবেন, সত্যি বলতে সেই আশা ছেড়ে দিয়েছিল পরিবার।
[আরও পড়ুন: মনে নেই ঠিকানা, সাজা শেষেও পাকিস্তানের জেলে আটকে ১৭ ‘ভারতীয়’]
জীবনের একটা বড় অংশ কেটে গিয়েছে জেলে। এইসঙ্গে ভয়ংকর অত্যাচার সহ্য করেছেন দিনের পর দিন ।সেই মানুষটাই শুক্রবার বললেন, “দেশের জন্য কোনও ত্যাগ স্বীকারে কখনও পিছপা হলে চলবে না।” সত্যি বলতে কুলদীপ সিংয়ের মতো মানুষের মুখেই মানায় এমন কথা।