ধীমান রায়, কাটোয়া: নিজের কান নিজে পরিষ্কার করতে অনেকেই অপারগ। আর পথেঘাটে মাঝে মধ্যেই দেখা যায় পেশাদার ‘কান সাফাইকারী’দের। যারা ২০-৩০ টাকার বিনিময়ে ‘যত্ন’ করে কান পরিষ্কার করে দেন। ওই ধরনের পেশাদার ‘কান সাফাইকারী’দের কাছে কান পরিষ্কার করার খেসারত দিচ্ছেন পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়ার কোঁয়ারা গ্রামের বাসিন্দার গাড়িচালক।
কাটোয়ার (Katwa) কোঁয়ারা গ্রামের বাসিন্দা তমাল প্রামানিক। তাঁর একটি পিকআপ ভ্যান রয়েছে, নিজেই চালান। বাড়িতে রয়েছেন বৃদ্ধা মা, স্ত্রী ও এক মেয়ে। জানা যায়, বুধবার ভাড়ার আশায় কাটোয়ার সিঙ্গির মোড়ে গাড়ি নিয়ে দাড়িয়েছিলেন তিনি। ঘড়ির কাঁটায় তখন বেলা দুটো। দেখেন এক অপরিচিত ব্যক্তি কাঁধে ব্যাগ নিয়ে হাঁক পাড়ছেন, “কান পরিষ্কার করবেন?” তখন লোকজন তেমন ছিল না। ফলে তমালবাবু কান পরিষ্কার করতে বসে পড়েন। কান পরিষ্কার হতে না হতেই ওই ব্যক্তি এম সিল গুঁজে দেন বলে অভিযোগ। তমালবাবুর কথায়, “তখন কিছু বুঝিনি। কান পরিষ্কার করে ওই ব্যক্তি বলে, এখন হাত দেবেন না। পনেরো মিনিটের মধ্যে আপনাআপনি খুলে যাবে।” তারপর আমার কাছ থেকে ২০ টাকা নিয়ে মেমারি রুটের একটি বাসে উঠে চলে যায়।”
[আরও পড়ুন: একজন বাঙালি মহিলা IAS-কে অপমান! নন্দিনীর অপসারণ নিয়ে রাজ্যপালকে তোপ কুণালের]
জানা যায়, প্রতিক্রিয়া শুরু হয় ঘন্টাদুয়েক পর। তমালবাবু জানান, তাঁর ওই কান ভারী হয়ে আসে। যন্ত্রণা শুরু হয়। মুখ ফুলে যায়। যন্ত্রণা বাড়লে স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে সন্ধেয় কাটোয়ায় ই এন টি বিশেষজ্ঞ ভাস্করজ্যোতি বর্মণের চেম্বারে যান। ডাক্তারবাবু তখনই বুঝতে পারেন কান পরিষ্কার করার সময় খোঁচাখুঁচিতে রক্তক্ষরণ শুরু হয়েছিল। তা ঢাকা দিতে কানে ওই এম সিল গুঁজে দিয়ে পালিয়ে যায় সেই অপরিচিত ব্যক্তি। ভাস্করজ্যোতি বাবু জানিয়ে দেন, অস্ত্রপচার করতে হবে। বৃহস্পতিবার দুপুরে প্রায় ঘণ্টাখানেক ধরে অস্ত্রোপচার হয় কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে। ভাস্করজ্যোতিবাবুর সহযোগী চিকিৎসক ছিলেন অ্যানাসথেসিষ্ট পার্থ সাহা। বেশ কিছুক্ষণের চেষ্টায় ওই আঠা বের করা হয়। অস্ত্রপচারের পর চিকিৎসক ভাস্করজ্যোতি বর্মণ বলেন,” কানের পর্দা নষ্ট হয়ে গিয়েছে।” আপাতত কাটোয়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তমালবাবু। তমালবাবুর শ্রবণশক্তি হারানোর আশঙ্কা রয়েছে।