অভিরূপ দাস: বিয়ের পর পৃথিবীটাই হবে সংসার! রান্নাবান্না না জানলেও হবে। বয়স পঞ্চাশ? নো প্রবলেম। ঘরের কাজে নিপুণা না হলেও ক্ষতি নেই। চাই শুধু একটা ভ্রমণপিপাসু মন আর পায়ের তলায় সর্ষে। তবেই বিয়ে করবেন টালিগঞ্জের মুক্তিব্রত ঘোষ! সম্প্রতি সংবাদপত্রের ‘পাত্রী চাই’ কলামে আজব বিজ্ঞাপন দিয়েছেন তিনি। প্রকাশিত হতেই ঢি ঢি পড়ে গিয়েছে। কেউ বলছেন, সংসার না পেতে জীবনভর ঘুরে বেরাব! এ কেমন আবদার রে বাবা। কেউ আবার এক কথায় রাজি ভূপর্যটক হতে!
কী রয়েছে বিয়ের বিজ্ঞাপনে?
‘‘ইঞ্জিনিয়ার পাত্রের সারা পৃথিবী ঘোরার নেশা। বছরে ৫ লক্ষ খরচ করেন ঘোরার জন্য। ভ্রমণ পিপাসু যে কোনও বয়সের প্রেসেন্টেবল পাত্রী চাই।’’ নিজের বয়স খোলসা করেননি পাত্র। চানও না করতে। নিজের সমন্ধে স্রেফ বলেছেন, ‘‘চাকরি, ব্যবসা দুই-ই করি। টাকার অভাব নেই।’’
[আরও পড়ুন: ‘আমাদের প্রাক্তন ছাত্রের প্রেমপ্রস্তাবে সাড়া দাও’, ছাত্রীকে নোটিস খোদ অধ্যক্ষের!]
বছরে যে টাকা সঞ্চয় করতে স্বপ্ন দেখেন শত শত, সে টাকা ঘুরতে যাওয়ার নেশায় উড়িয়ে দেন মুক্তিব্রত। বিয়ের পর ঘর গোছানোর স্বপ্ন দেখেন যাঁরা। তাঁরা তাঁর পছন্দ নয়। বরং এমন কাউকে চাই যে লন্ডন আইতে উঠতে রাজি, চড়তে রাজি আইফেল টাওয়ারে কিংবা হেলসিঙ্কির সমুদ্রে স্কুবা ডাইভিং করবেন অনায়াসে।
আগামী মে মাসেই যে লম্বা ইউরোপ ট্যুরে বেরোচ্ছেন মুক্তিব্রত। তার আগেই বিয়ে করতে চান। ঘরে তার বিশেষ মন টেকে না। দেখেছেন অনেক দ্রষ্টব্য স্থান। তারপরেও আফশোস, “কিই বা আর দেখলাম।” তাঁর এলাকার এক রিকশা চালক তিনচাকা নিয়ে সিয়াচেন গিয়েছেন। তেমনই স্বপ্ন দেখেন তিনিও। পাত্র হিসেবে নিজেকে উদার শংসাপত্র দিয়েছেন।। নিজের সমন্ধে বলতে গিয়ে বলেছেন, ‘‘আমার স্রেফ একটাই নেশা। ওই ভ্রমণের। মদ, চা, সিগারেট কিচ্ছু খাই না। শুধু টাকা জমিয়ে ঘুরতে ভালবাসি। অনেক দেশ ঘুরেছি। ২ মে ইউরোপ ট্যুরে যাচ্ছি।’’
[আরও পড়ুন: শিশির অধিকারীকে প্রণামের ‘শাস্তি’! শোকজের পর সুবল মান্নাকে ইস্তফার নির্দেশ তৃণমূলের]
এক জীবনে সারা পৃথিবী ঘোরা যায়? আক্ষেপ রয়েছে মুক্তিব্রতর। ‘‘কোথায় আর যায়। চাকরি রয়েছে। টাকা জমাতে জমাতেই কুড়ি বছর লেগে যায়।’’ শুধু ঘুরে বেরানো নয়। ভ্রমণ কাহিনী পড়তেও ভালোবাসেন। ‘‘আগেকারদিনে কত মানুষ পায়ে হেঁটে ঘুরে বেড়াত। আমি তো উড়োজাহাজে চেপে ঘুরি।’’ এহেন মুক্তিব্রত আর একা একা নন। ঘুরে বেড়াতে চান স্ত্রীর সঙ্গে। সঙ্গিনী থাকলে ঘোরার একাকিত্ব কমে। ৫ ফুট 8 ইঞ্চি উচ্চতার মুক্তিব্রতর একটাই দাবি, ‘‘বয়স কোনও বাঁধা নয়। চল্লিশ হোক বা পঞ্চাশ কিম্বা ষাট। ভ্রমণপিপাসু একজন প্রেসেন্টবল পাত্রী চাই।’’