সুকুমার সরকার, ঢাকা: ফের এক নৃশংস ঘটনায় কেঁপে উঠল বাংলাদেশ। বোরখা পরে শ্বশুরবাড়িতে হামলা চালিয়ে স্ত্রী-সহ শ্বশুরবাড়ির সবাইকে কুপিয়ে হত্যা করল এক যুবক। শেরপুর জেলায় বৃহস্পতিবার রাতে ঘটা ওই ঘটনার পর অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, শেরপুর জেলার শ্রীবরদীতে পারিবারিক কলহের জেরে শ্বশুরবাড়িতে হামলা চালায় মিন্টু মিয়াঁ নামের এক যুবক। স্ত্রী, শ্বশুর, শাশুড়ি ও জেঠাশ্বশুরকে কুপিয়ে হত্যা করে সে। হামলায় জখম হয়েছে আরও দুজন। ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার রাতে খোশালপুর পুটল গ্রামে। শুক্রবার ভোরে পুলিশ অভিযুক্ত মিন্টু মিয়াঁকে গ্রেপ্তার করেছে। নিহতদের নাম – মনু মিয়া (৬০), তাঁর মেয়ে ও মিন্টু মিয়াঁর স্ত্রী মনিরা বেগম (৩৫), অভিযুক্তের স্ত্রী শেফালি বেগম (৬০) ও মনু মিয়াঁর বড় ভাই হাজী মহম্মদ মাহমুদ (৭০)। জখম হয়েছেন মনু মিয়াঁর ছেলে শাহাদাত হোসেন (২৫) ও হাজী মহম্মদ মাহমুদের স্ত্রী ফুল সাহারা বেগম (৬৫)।
[আরও পড়ুন: বাংলাদেশে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, মৃত কমপক্ষে ৪২]
স্থানীয়দের কথায় , প্রায় ১৭ বছর আগে মনিরা বেগমের সঙ্গে মিন্টু মিয়াঁর বিয়ে হয়। এই দম্পতির দুই সন্তান রয়েছে। বেশ কিছুদিন ধরে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিবাদ চলছিল। কয়েকদিন আগে মনিরা রাগ করে স্বামীর বাড়ি থেকে বাপের বাড়িতে চলে যায়। এরপর থেকে স্ত্রীকে নিজের বাড়িতে ফিরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছিল মিন্টু। তবে মনিরা ফেরেননি। বৃহস্পতিবার রাতে মিন্টু মিয়াঁ বোরকা পরে খোশালপুর পুটল গ্রামে শ্বশুরবাড়িতে যায়। সেখানে গিয়েই দা দিয়ে সবাইকে কোপাতে থাকে সে। এতে স্ত্রী মনিরা বেগমের ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়। মনু মিয়াঁ, শেফালি বেগম, জেঠাশ্বশুর হাজী মহম্মদ মাহমুদ-সহ কয়েকজন গুরুতর জখম হন। এ সময় আহতদের চিৎকারে এলাকাবাসী এসে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাদের বকশীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে শেফালী ও হাজী মহম্মদ মাহমুদকে মৃত ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। উন্নত চিকিৎসার জন্য মনু মিয়াঁকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার ভোরে তাঁর মৃত্যু হয়।
শেরপুরের পুলিশ সুপার মহম্মদ হাসান নাহিদ চৌধুরী জানান, পারিবারিক কলহের জেরে মিন্টু মিয়াঁ দা দিয়ে কুপিয়ে স্ত্রী, শাশুড়ি ও জেঠাশ্বশুরকে হত্যা করে। শ্রীবরদী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবু সাইম বলেন, ঘটনার পরপরই অভিযুক্ত পালিয়ে গেলেও অভিযান চালিয়ে শুক্রবার ভোরে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে অভিযুক্ত।