সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ২৩৪ আসন এক ধাক্কায় কমে দাঁড়াতে পারে ২২৮-এ। পরিস্থিতি যে পথে এগোচ্ছে তাতে জিতেও স্বস্তি নেই বিরোধী শিবিরে। সদ্য জয়ী ইন্ডিয়া জোটের ৬ সাংসদের মাথার উপর ঝুলছে শাস্তির খাঁড়া। আদালতের নির্দেশ এলে তাঁদের ঠিকানা হবে জেল। সেক্ষেত্রে নিয়ম অনুযায়ী খারিজ হবে তাঁদের সাংসদ পদ। লোকসভা নির্বাচনে ভালো ফল করলেও এই ঘটনায় সিঁদুরে মেঘ দেখছে ইন্ডিয়া শিবির।
সংবাদ মাধ্যম সূত্রের খবর, এই তালিকায় সবার উপরে নাম রয়েছে আফজল আনসারির। বাহুবলী নেতা মুক্তার আনসারির বড় ভাই আফজল আনসারি। গ্যাংস্টার এই নেতা এবার গাজিপুর কেন্দ্র থেকে সমাজবাদী পার্টির টিকিটে নির্বাচন লড়ে জয়ী হয়েছেন। ইতিমধ্যেই তাঁকে ৪ বছর কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। যদিও গত মাসে সেই শাস্তির উপর স্থগিতাদেশ দেয় আদালত। এবং তাঁকে নির্বাচন লড়ার সুযোগ দেওয়া হয়। আগামী জুলাই মাসে এই মামলার শুনানি রয়েছে। সেখানে স্থগিতাদেশ উঠলেই জেলযাত্রা হবে আফজলের সেক্ষেত্রে খারিজ হবে সাংসদ পদ।
[আরও পড়ুন: শেয়ার বাজারে বড়সড় দুর্নীতি! মোদি-শাহের বিরুদ্ধে তদন্তের দাবিতে সেবির দ্বারস্থ তৃণমূল]
তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে আর এক সপা সাংসদ ধর্মেন্দ্র যাদব। আজমগড় কেন্দ্র থেকে এবার জয়ী হয়েছেন তিনি। তাঁর বিরুদ্ধে রয়েছে ৪টি ফৌজদারি মামলা। যার মধ্যে ২টিতে ইতিমধ্যেই দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন তিনি। ২ বছরের বেশি কারাদণ্ড হতে পারে এই সাংসদের। সেক্ষেত্রে সাংসদ পদ খোয়াবেন তিনি। সাংসদ পদ হারানোর সম্ভাব্য তালিকায় তৃতীয় স্থানে নাম রয়েছে জৌনপুরের সপা সাংসদ বাবু সিং কুশওয়াহার। উত্তরপ্রদেশের NRHM দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্ত এই সাংসদ। পাশাপাশি আয় বহির্ভূত সম্পত্তি মামলাতেও দোষী সাব্যস্ত তিনি। জানা গিয়েছে, মোট ২৫ টি মামলা রয়েছে বাবুর বিরুদ্ধে। এর মধ্যে ৮টি মামলায় ইতিমধ্যেই দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন।
এই তালিকায় আরও এক সপা সাংসদ হলে রামভুয়াল নিশাদ। সুলতানপুরে মানেকা গান্ধীকে হারিয়ে এবার সাংসদ হয়েছেন নিশাদ। এই গ্যাংস্টার নেতার বিরুদ্ধে রয়েছে ৮টি মামলা। যার মধ্যে গোরক্ষপুরে খুনের চেষ্টা সংক্রান্ত ২ টি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন তিনি। মামলায় শাস্তি ঘোষণা হলেই বিপাকে পড়বেন তিনি। উত্তরপ্রদেশের চন্দৌলি কেন্দ্র থেকে সপার টিকিটে এবার সাংসদ হয়েছেন বীরেন্দ্র সিং। একাধিক অপরাধমূলক মামলা রয়েছে এই সাংসদের বিরুদ্ধে যার মধ্যে একটি মামলায় গত বছর দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন বীরেন্দ্র। সেই মামলায় সাজা ঘোষণা হলে ২ বছরের বেশি কারাদণ্ড হবে তাঁর। ফলে সাংসদ পদ খোয়াবেন এই নেতা।
[আরও পড়ুন: জিসকা স্পিকার, উসকি সরকার! টিডিপি-বিজেপির টানাপোড়েনে জিতবে কে?]
সপা সাংসদদের পাশাপাশি এই তালিকায় রয়েছেন আর এক নেতা। ইনি কাশীরামের আজাদ সমাজ পার্টির চন্দ্রশেখর আজাদ। এই নেতার বিরুদ্ধে ৩৬ টি অপরাধমূলক মামলা রয়েছে। এর মধ্যে ৪ মামলায় ইতিমধ্যেই দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন আজাদ। সাজা ঘোষণা হলে তাঁর ২ বছরের অধিক সাজা নিশ্চিত। ফলে সাংসদ পদ খোয়াতে পারেন তিনি। এছাড়াও তালিকায় রয়েছেন সাহারানপুরের কংগ্রেস সাংসদ ইমরান মাসুদ। ৮ মামলা রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে, এর দুই মামলায় দোষী সাব্যস্ত তিনি।
[আরও পড়ুন: NEET কাউন্সেলিংয়ে স্থগিতাদেশের আর্জি খারিজ, কী জানাল সুপ্রিম কোর্ট?]
উল্লেখ্য, বিধায়ক হোক বা সাংসদ। ভারতীয় রাজনীতিতে জেল যাত্রা ও পদ খোয়ানোর ঘটনা একেবারেই বিরল নয়। নিয়ম অনুযায়ী, আদালত যদি কাউকে ২ বছরের বেশি কারাদণ্ডের নির্দেশ দেয় সেক্ষেত্রে সাংসদ পদ হারাতে হয় ওই রাজনৈতিক নেতাকে। এর আগে এই নিয়মের গেরোয় পদ খুইয়েছেন সপা সাংসদ আজম খান, খাবু তিওয়ারি, বিক্রম সাইনি, কুলদীপ সেনগার, অশোক চান্ডেলের মতো একাধিক বিজেপি নেতা।