সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অবশেষে মঙ্গলের (Mars) রুক্ষ জমিতে চলাফেরা শুরু করে দিল চিনের (China) রোভার জুরং (Rover Zhurong)। গত শনিবারই লাল গ্রহের মাটিতে নেমে ইতিহাস ছুঁয়েছিল বেজিং। তারপর জুরং মঙ্গলের ছবি তুলেও পাঠিয়েছিল। মঙ্গলের প্রতিকূল আবহাওয়ায় এই রোভার ঠিকমতো কাজ করবে কিনা তা নিয়ে উৎকণ্ঠা ছিল বিজ্ঞানীদের। অবশেষে সব সংশয় দূর করে চলতে শুরু করল রোভার। আমেরিকা ছাড়া আর কোনও দেশ এই কৃতিত্ব দেখাতে পারেনি। আগামী তিন মাস এভাবেই ঘুরে ঘুরে কাজ করে চলবে সে।
সম্পূর্ণ সৌরশক্তির সাহায্যে চালিত ২৪০ কেজি ওজনের ছ’চাকাওয়ালা গাড়িটি চলাফেরা শুরু করে দিয়েছে। তার সঙ্গে থাকা উচ্চ রেজোলিউশন টোপোগ্রাফি ক্যামেরার সাহায্যে মঙ্গলের মাটি ও আবহাওয়া জরিপ করবে সে।
[আরও পড়ুন: হদিশ মিলল করোনা ভাইরাসের নয়া প্রজাতির, ছড়াচ্ছে কুকুর থেকে]
গত শনিবার গভীর রাতে মঙ্গলপৃষ্ঠে অবতরণ করেছিল বেজিংয়ের মঙ্গলযান তিয়ানওয়েন-১ (Tianwen-1)। চিনের উপাস্য পৌরাণিক অগ্নিদেবতার নামানুসারে নামকরণ করা হয়েছে রোভার জুরং-এর। অন্তত ৯০টি মঙ্গল দিবসে সেখানে ঘুরে বেড়াবে জুরং। এই দীর্ঘ সময়ে নানা নমুনা সংগ্রহ করবে সেটি। খতিয়ে দেখবে মঙ্গলপৃষ্ঠের গঠন। করবে বরফের সন্ধান। যদি কোনও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নজরে আসে তবে সেটিকে বিশেষ ভাবে পর্যবেক্ষণও করবে জুরং। মঙ্গল অভিযান নিয়ে অত্যন্ত উচ্চাশা রয়েছে চিনের।
আমেরিকার পরে চিনই দ্বিতীয় দেশ যারা সফল ভাবে রোভারের অবতরণ ঘটিয়েছে মঙ্গলের মাটিতে। প্রসঙ্গত, ১৯৭১ সালে রাশিয়া (তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন) একটি রোভার সেখানে পাঠালেও নামার পরেই তার সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। সেদিক থেকে প্রথম অভিযানেই মঙ্গলের কক্ষপথে আবর্তন করে, রোভারকে মঙ্গল পৃষ্ঠে নামিয়ে এভাবে সেটিকে চলাফেরা করাতে পেরে অনন্য নজির গড়ল বেজিং। মহাকাশ রেসে আমেরিকাকে টক্কর দেওয়ার বিষয়ে তারা অনেকটাই এগিয়ে গেল এই সফল অভিযানের মাধ্যমে।
প্রসঙ্গত, গত ফেব্রুয়ারিতে মঙ্গলের কক্ষপথে ঢুকে পড়েছিল চিনের মহাকাশযান। একই সময়ে লাল গ্রহের কক্ষপথে প্রবেশ করেছিল আমেরিকা ও আরব মহাকাশযানও। মার্কিন রোভার পারসিভিয়ারেন্স (Perseverance) মঙ্গলের মাটিতে নেমেছিল গত ফেব্রুয়ারিতে। তিন মাস পরে সেখানে অবতরণ করল চিনের রোভারও।