সুকুমার সরকার, ঢাকা: খুশির ইদ (Eid 2023)। প্রিয় জনের কাছে তো ফিরতেই হবে। গরমের তীব্র দাবদাহ উপেক্ষা করেও রাজধানী ঢাকা ছাড়ছেন বাংলাদেশের শত শত নাগরিক। নদীমাতৃক বাংলাদেশে বুধবার ভোর থেকে পদ্মা সেতু, বঙ্গবন্ধু সেতু, লঞ্চ-স্টিমার-ফেরিতে করে পদ্মা-মেঘনা-যমুনা-ধলেশ্বরী নদী পার হচ্ছেন তাঁরা। টোল বুথে দেখা গিয়েছে মোটরবাইকের দীর্ঘ লাইন। এর আগে পদ্মা সেতুতে মোটরবাইক চলাচল ছিল নিষিদ্ধ। তবে ইদের জন্য সেই নিয়মে ছাড় দেওয়া হয়েছে এবং কড়া শর্তেই বাইক যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে।
মঙ্গলবার অফিসে হাজিরা দিয়েই ঢাকা ছেড়েছেন অনেকে। তাই পদ্মা পাড়ি দিতে শরীয়তপুরের মাঝিরকান্দিগামী ফেরিতে মোটরবাইকের ভিড় ছিল। তবে বৃহস্পতিবার থেকে পদ্মা সেতুতে মোটরবাইক চলাচলের নিষেধাজ্ঞা থাকছে না। সকাল ছ’টা থেকে শর্ত সাপেক্ষে পদ্মা সেতু দিয়ে মোটরবাইক চলাচলের অনুমতি দিয়েছে সরকার। যেমন, নির্ধারিত টোল দিয়ে সর্বোচ্চ ৬০ কিলোমিটার গতিতে সেতু পারাপার হতে হবে। মোটরবাইকের জন্য নির্ধারিত টোল বুথ ও নির্ধারিত লেন ব্যবহার করতে হবে। সেতুতে ওভারটেকও করা যাবে না। চালক ও আরোহীকে হেলমেট-সহ প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা সামগ্রী ব্যবহার করতে হবে। কোনও অবস্থাতেই সেতুর ওপর দাঁড়ানো বা ছবি তোলা যাবে না। চালক-সহ সর্বোচ্চ দু’জন মোটর সাইকেলে চড়তে পারবেন।
[আরও পড়ুন: ‘এবার দিল্লিতেও ২০০ পেরবে না’, ২০২৪-এ বিজেপিকে নিয়ে ‘ভবিষ্যদ্বাণী’ মমতার]
বাড়ির উদ্দেশে যাত্রার শুরুতেই ঢাকায় যানজটের কবলে পড়তে হয়েছে ঘরমুখী মানুষকে। একদিকে সড়কে বাস-সহ সব ধরনের যানবাহনের চাপ, অন্যদিকে ইদ-যাত্রা ও শপিংমলে মানুষের ভিড়। সবমিলিয়ে গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোয় দীর্ঘক্ষণ যানজট হয়েছে। দূরপাল্লার বাসগুলোর বিশেষ ইদ সার্ভিস এখনও শুরু হয়নি। তাই যাত্রীরা রামপুরা, বাড্ডা, চিটাগাং রোড, সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ী, আমিনবাজার-সহ বিভিন্ন স্থান থেকে বাস, মাইক্রোবাস, প্রাইভেট কার, মোটরবাইক, অটোরিকশা এমনকী ট্রাক ও পিকআপে করেও গন্তব্যে রওনা হয়েছেন।
এছাড়া ভেঙে ভেঙেও বাড়ি ফেরার চেষ্টা করেছেন অনেকেই। ফেরিতে গাদাগাদি করে নদী পার হয়েছে হাজার হাজার মানুষ। ইদ ঘিরে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে যানবাহন ও ঘরমুখী যাত্রীর চাপ বেড়েছে। ফলে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ অংশে ১০ কিলোমিটার সড়কে তীব্র যানজট দেখা দিয়েছে। স্পেশাল ট্রেন সার্ভিসের গতকাল ছিল দ্বিতীয় দিন। দেশের বেশির ভাগ রেলপথই সিঙ্গল লাইনের। প্রচণ্ড গরমে ট্রেনের গতি কম রাখতে হচ্ছে। যার জেরে ট্রেনের সময়সূচিতে হেরফের হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনের ব্যবস্থাপক মাসুদ সারওয়ার বলেন, “যাত্রীদের নিরাপদে বাড়ি পৌঁছে দেওয়া নিশ্চিত করেই ট্রেন ছাড়া হচ্ছে। কয়েকটি ট্রেন ছাড়তে কিছুটা দেরি হয়েছে।”