অভিরূপ দাস: কাজে ফাঁকি আটকাতে চালু করা হয়েছিল বায়োমেট্রিক সিস্টেম। বাস্তবে হয়েছে বিপরীত। সকাল-বিকেল যন্ত্রে আঙুল ছুঁইয়ে বাড়ি চলে যাচ্ছেন কর্মীরা। মাঝের সময়ে তাঁদের দেখা পাওয়া যাচ্ছে না। অপরিস্কার হয়েই পড়ে থাকছে পুর এলাকার ওয়ার্ডের রাস্তা। দক্ষিণ কলকাতার হাজরা, রাসবিহারী অ্যাভিনিউ এলাকার কাউন্সিলর প্রবীর মুখোপাধ্যায়ের অভিযোগ, বায়োমেট্রিক পদ্ধতি চালু হওয়ার পরেই কাজে ঢিলেমি দিতে শুরু করেছেন এলাকার কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের কর্মীরা। যাঁদের কাজ এলাকার রাস্তা পরিস্কার রাখা। আগে সশরীরে হাজিরা দেওয়ার নিয়ম থাকাকালীন প্রতিদিন কাজ করতেন তারা। আর এখন?
পুরপিতার অভিযোগ, “সকালে যন্ত্রে আঙুল ছুঁইয়ে চলে যাচ্ছেন। তারপর তাদের আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। ফের বিকেলে ছুটির সময়ে এসে আঙুল ছুঁইয়ে চলে যাচ্ছেন।” কাউন্সিলরের দাবি, এই অবস্থায় ওয়ার্ড নোংরা থেকে যাচ্ছে। ফের পুরনো সশরীরে হাজিরার ব্যবস্থা চালু করা হোক। গোটা ঘটনায় অত্যন্ত ক্ষুব্ধ মেয়র ফিরহাদ হাকিম। শনিবার এমন অভিযোগ শুনে মেয়র বলেন, “কোনওভাবেই পুরোনো পদ্ধতিতে হাজিরা ব্যবস্থা চালু হবে না। বায়োমেট্রিক ব্যবস্থা বহাল থাকবে হাজিরার ক্ষেত্রে।”
[আরও পড়ুন: চাঁদা না দেওয়ায় বিজেপি কর্মীকে বেধড়ক মার, জল চাইলে মুখে প্রস্রাব! বর্বরতার সাক্ষী গড়বেতা]
কাউন্সিলরকে ভৎর্সনা করে মেয়র জানিয়েছেন, কর্মীদের দিয়ে কাজ করিয়ে নেওয়াটাও কাউন্সিলরদের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। এদিন পুর অধিবেশন শেষে এই সমস্যা নিয়ে পুর কমিশনার বিনোদ কুমারের সঙ্গে কথাও বলেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। সূত্রের খবর পুর কমিশনার বিনোদ কুমারকে মেয়র নির্দেশ দিয়েছেন, প্রতিটি ওয়ার্ডে হাজিরা দেওয়ার পর পুরকর্মীরা কী কী কাজ সারাদিনে করলেন তার হিসেব রাখতে হবে। নজরদারি চালাতে হবে সেই কাজের উপর। একইসঙ্গে এবার থেকে নূন্যতম ৭ ঘণ্টা ডিউটি করতে হবে কর্মীদের। কাজের ক্ষেত্রে কেউ ফাঁকি দিলেই কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। উল্লেখ্য কাজে ফাঁকি ঠেকাতেই বায়োমেট্রিক সিস্টেম আনা হয়েছিল। এদিন এক পুর কর্তা বলেন, “আগে ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে হাজিরা থাকার সময় অনেক কর্মী অফিসে না আসলেও তাদের সই অন্যজন করে দিত। কিন্তু নয়া ব্যবস্থায় সেটা সম্ভব হচ্ছে না বলেই কর্মীদের একাংশ কাজে এভাবে অসহযোগিতা করছেন। কোনওভাবেই তা বরদাস্ত করা হবে না।”