সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রকৃতি রুষ্ট হলে যে কী বিপদ, তা টের পাচ্ছেন শিল্পপতিরাও। তাই এখন ব্যবসা-বাণিজ্য ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে তোলার আগে তাঁরা প্রকৃতিকে সন্তুষ্ট রাখায় মন দিচ্ছেন। সম্প্রতি ব্রিটিশ সরকার স্থির করেছে, জঙ্গল কাটা রুখতে নতুন করে আইন আনবে। আর তার পরিপ্রেক্ষিতেই ম্যাক ডোনাল্ডস (McDonald’s)-সহ একাধিক আন্তর্জাতিক মানের বেশ কয়েকটি খাবারের সংস্থার আবেদন, আইন যেন বেশ কড়া হয়। সকলের জন্য যেন তা সমানভাবে প্রযোজ্য হয়। পুঁজিপতিদের এহেন চিন্তা দেখে অনেকেই বলছেন, দেরিতে হলেও বোধোদয় হয়েছে তাদের, প্রকৃত বিপদ টের পেয়েছেন।
ম্যাক ডোনাল্ডস-সহ মোট ৬টি সংস্থা সম্প্রতি বরিস জনসন সরকারকে একটি চিঠি লিখেছেন, যাতে আবেদন, ”বেআইনিভাবে জঙ্গল কাটা রুখতে কড়া নিয়ম জারি করলেই প্রকৃতি সুস্থ থাকবে না, বজায় থাকবে না ভারসাম্য। বরং এ ব্যাপারে সরকারের বিচক্ষণতাতেই ভরসা রাখছি।” প্রয়োজনে সরকার তাঁদের সঙ্গেও পরামর্শ করতে পারে বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে। আসলে এই সংস্থাগুলোর নিজেদের খামার তৈরির জন্য বড় জায়গা অর্থাৎ জঙ্গলের অনেকটা অংশ কাটা পড়ে। তাই প্রকৃতির ক্ষতিতে তাদেরও একটা বড় ভূমিকা থেকে যায়। কিন্তু এবার তারাই নিজেদের খামারের আয়তন ছোট করে আনার ভাবনাচিন্তা করেছে।
[আরও পড়ুন: করোনার কোপে বন্ধ অর্থসাহায্য, বিলুপ্তপ্রায় প্রাণীদের নিয়ে চিন্তায় অধিকাংশ চিড়িয়াখানা]
জানা গিয়েছে, ব্রিটিশ সরকার এই কয়েকটি আন্তর্জাতিক সংস্থাকে বড় জায়গায় খামার তৈরির জন্য জঙ্গল সাফ করার অনুতি দিয়েছিল। এমনকী নতুন আইন আনা হলেও, এদের ছাড় দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল ব্রিটিশ প্রশাসনের। তবে প্রকৃতি রক্ষায় এগিয়ে এসেছে এই সংস্থা নিজেরাই। তাঁদের বক্তব্য, এবার থেকে বড়সড় ফার্মের চেয়ে মাঝারি মাপের খামারে খাদ্যসামগ্রী মজুত এবং সেখান থেকে দ্রুত সরবরাহের দিকে নজর দেবেন। তাহলে বেশি পরিমাণ জঙ্গল এলাকা সাফ করার দরকার হবে না, বাঁচবে প্রকৃতি। আবার কম জায়গার মধ্যে অতিরিক্ত খাদ্যসামগ্রী জমা করার চাপও পড়বে না।
[আরও পড়ুন: করোনা ভ্যাকসিন তৈরির জন্য মারা হতে পারে পাঁচ লক্ষ হাঙরকে! আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের]
ব্রিটিশ প্রশাসনের অবশ্য প্রস্তাব, কোকো, সয়ার মতো খাদ্যশস্য নিত্যপ্রয়োজনীয় হলেও তা জঙ্গল থেকে যদি কম সংগ্রহ করা যায়, তাহলে গাছ বাঁচাতে খুব বেশি কষ্ট করতে হবে না। সেই প্রস্তাব কতটা মানা সম্ভব, তা তো পরীক্ষামূলক ভাবেই বোঝা যাবে। তবে আন্তর্জাতিক খাবার সংস্থাগুলোর এই সচেতনতা কিছুটা অবাক করেছে পরিবেশপ্রেমীদের।