কোভিডের প্রত্যাবর্তন নিয়ে ক্ষীণ আশঙ্কা আছেই। তবে লগ্নিকারী বসে না থেকে, প্যানডেমিক থেকে শিক্ষা নিয়ে ইতিমধ্যেই হেলথ ইনসিওরেন্সের ব্যাপারে সজাগ। স্বাস্থ্য বিমা নেওয়া যেমন অভ্যাসে দাঁড়িয়েছে, একইসঙ্গে বেড়েছে ক্লেম সংক্রান্ত দুশ্চিন্তা। ক্লেম মান্যতা না পেলে কী করতে হবে, জানালেন কলকাতা হাই কোর্টে প্র্যাকটিসরতা আইনজীবী শোহিনী চক্রবর্তী
মেডিক্যাল ইনসিওরেন্সের গুরুত্ব কতখানি, সে ব্যাপারে নিশ্চয়ই আর বুঝিয়ে বলতে হবে না। পাঠক অবশ্যই স্বাস্থ্য বিমার ক্ষেত্রে যথেষ্ট সতর্কতা অবলম্বন করেছেন। প্রোটেকশন এবং রিলিফ, দু্ই-ই তাঁর কাছে গুরুত্বপূর্ণ। অসুবিধা তখনই হতে পারে, যখন ক্লেম রিজেকশন হয়। একাধিক কারণে তা হতে পারে-
[আরও পড়ুন: সাবধান থাকুন ভুইফোঁড় সংস্থা থেকে, বাজারে লগ্নি করতে ভরসা রাখুন বিশ্বস্ত নামে]
এমন পাঁচটি কারণ পাঠকদের জানিয়ে রাখলাম-
১. ক্লেম ফর্ম বা পলিসি ডকুমেন্টে কোনও ভুল তথ্য আছে বা জরুরি কোনও তথ্য দেওয়া নেই।
২. ক্লেম করা হয়েছে এমন কোনও ট্রিটমেন্ট বা চিকিৎসা পদ্ধতির ভিত্তিতে যেটি ইনসিওরেন্স পলিসির আওতায় আসে না।
৩. ক্লেম করার সময়সীমা পেরিয়ে গিয়েছে-যে সময় বেঁধে দেওয়া ছিল তা লঙ্ঘিত হয়েছে।
৪. ক্লেম পেশ করার সময় ভুল ডকুমেন্ট দেওয়া হয়েছে।
৫. পলিসি ল্যাপ্স করেছে।
এই প্রসঙ্গে জেনে রাখুন গ্রেস পিরিয়ডের মধ্যে ক্লেম হলে রিজেকশনের সম্ভাবনা কম থাকে। তবে এক্ষেত্রে পলিসির কোনও বিশেষ শর্ত আছে কি না, তা বুঝতে হবে। যখন ক্লেম রিজেকশন সত্যিই হয়, তখন সংশ্লিষ্ট বিমা সংস্থা পলিসি হোল্ডারকে জানিয়ে দেয়। তা না হলে তিনি লিখিতভাবে রিজেকশনের ব্যাপারে জানতে চাইতে পারেন। এবং যদি ভুল ডকুমেন্টের জন্য এমন হয়ে থাকে, তাহলে সংশোধন করার সুযোগ (নতুন করে সাবমিশন) পেতে পারেন। তা সত্ত্বেও যদি মান্যতা না দেওয়া হয়, তাহলে ওমবাডসম্যানের অফিসে ৩০ দিনের মধ্যে দরখাস্ত করা যেতে পারে। পলিসি ডকুমেন্টে ওমবাডসম্যানের তথ্য পাবেন।
খুব গূঢ় বা বিশেষ কিছু ক্ষেত্রে, পলিসি হোল্ডার কনজিউমার কোর্টেও যেতে পারেন, তাঁর নালিশ নিয়ে। কিছু ক্ষেত্রে সংবিধানের আর্টিকেল ২২৬ ব্যবহার করে হাই কোর্টেও যাওয়া সম্ভব।
এমন ঘটনা যদি এড়িয়ে যেতে চান, তাহলে যথার্থ কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে। একটি তালিকা করে দিচ্ছি, পড়ে নিন।
# সর্বদা সময়মতো প্রিমিয়াম দেবেন।
# পলিসির শর্তাবলী খুঁটিয়ে পড়ুন।
# কতখানি কভারেজ পাবেন, বুঝে নিন।
# একটিও ‘মিস’ না করে সবক’টি জরুরি ডকুমেন্ট দিন যখন ক্লেম করবেন। সময়সূচির মধ্যেই করবেন।
# সর্বদা লিখিত কমিউনিকেশন করুন। যখন বিমা সংস্থার সঙ্গে কথা বলে তথ্য বা অন্য কিছু জানতে চাইবেন, সেখানে লিখিত বক্তব্য থাকাটাই শ্রেয়। প্রয়োজনমতো ফটোকপি থাকা বাঞ্ছনীয়, রসিদও। এ সমস্ত ভবিষ্যতে প্রয়োজন হতে পারে, তাই সাবধানে রেখে দেবেন। প্রতিটি ডকুমেন্টে ব্যবহৃত নাম, ঠিকানা বা তেমন কোনও তথ্য যেন একই থাকে, বদলে না যায়, তাও দেখতে হবে।