বিপ্লব চন্দ্র দত্ত, কৃষ্ণনগর: ‘দিদির সুরক্ষা কবচ’ (Didir Suraksha Kavach) কর্মসূচি প্রচারে এসে বৃহস্পতিবার নদিয়ার (Nadia) চাকদহ ব্লকের ঘেটুগাছি গ্রাম পঞ্চায়েতের সহিসপুরে গ্রামবাসীদের বিক্ষোভের মুখে পড়লেন বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক (Jyotipriya Mallick)। পুলিশের সামনেই তাঁর গাড়ি দীর্ঘক্ষণ আটকে বিক্ষোভ দেখায় জনতা। এলাকার বেশ কয়েকটি পরিবারের অভিযোগ, তাঁরা আবাস যোজনার ঘর পাওয়ার যোগ্য হওয়া সত্ত্বেও তা পাননি। এছাড়াও বার্ধক্য ভাতা এবং বিধবা ভাতা নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করেন তাঁরা। আরও অভিযোগ, মন্ত্রীর কনভয়ের একটি গাড়িতে থাকা পঞ্চায়েতের উপপ্রধান পরেশ ঘোষ বিক্ষোভকারী জনতাকে গালিগালাজ করেন। শেষ পর্যন্ত ভুলের জন্য ক্ষমা চাইলে এবং সমস্যার সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিলে শান্ত হয় স্থানীয় জনতা।
সহিসপুরে রাস্তায় মন্ত্রীর গাড়ি প্রায় ১৫ মিনিট আটক ছিল। ওই সময় স্লোগান তুলে নিজেদের দাবি-দাওয়া জানাতে থাকে জনতা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাচ্ছে অনুভব করে গাড়ি থেকে নেমে পড়েন বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয়। জনতা তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে। জনতার বিক্ষোভ সামাল দিতে মন্ত্রীকে শেষপর্যন্ত তাঁদের সামনে হাতজোড় করে ক্ষমা চাইতে হয়।
[আরও পড়ুন: প্রলোভন দেখিয়ে হোটেলে নিয়ে গিয়ে নাবালিকাকে ধর্ষণের অভিযোগ, কাঠগড়ায় কাঁথির ছাত্রনেতা]
বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, এলাকার প্রায় ৬৫টি পরিবার আবাস প্লাস যোজনার ঘর পাওয়ার যোগ্য হয়েও ঘর পাননি। এমনকী, তাঁরা বার্ধক্য ভাতা এবং বিধবা ভাতাও পাচ্ছেন না। তার ওপরে মন্ত্রীর কনভয়ের একটি গাড়িতে থাকা পঞ্চায়েতের উপপ্রধান পরেশ ঘোষ বিক্ষোভকারীদের গালিগালাজ করেন বলে অভিযোগ। গ্রামবাসীদের অভিযোগ শোনার পর জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, ” আপনাদের মধ্যে যাঁরা ঘর পাননি, তাঁরা একটি তালিকা তৈরি করে আমার কাছে পাঠিয়ে দেবেন।” যাঁরা বার্ধক্য এবং বিধবা ভাতা পাচ্ছেন না বা তা নিয়ে সমস্যা হচ্ছে, তাঁদের আশ্বাস দেন, গ্রামে একদিনের ক্যাম্প হবে। ওই ক্যাম্পে বার্ধক্য ও বিধবা ভাতা সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান হবে।
মন্ত্রীর আশ্বাস পাওয়ার পরেই শান্ত হয় জনতা। পরে ৬৫ টি পরিবার তাঁদের নামের তালিকা মন্ত্রীর কাছে পাঠিয়ে দেয়। উপপ্রধানের অভব্য ব্যবহার নিয়ে জ্যোতিপ্রিয় বলেন, “আমার দলের কোনও কর্মী, সে যে-ই হোক, যদি কারও সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে থাকে, তার জন্য আমি ক্ষমা চাইতে রাজি আছি। কারণ, ক্ষমা চাওয়াটা মহৎ গুণের পরিচয়।” আরও বলেন, “তিনি (উপপ্রধান) কেন এমন করলেন, তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হবে।” যদিও যাঁকে নিয়ে এত অভিযোগ, সেই ঘেটুগাছি গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান পরেশ ঘোষ এই নিয়ে মুখ খোলেননি।
[আরও পড়ুন: লাগাতার অশান্তি বিশ্বভারতীতে, সমস্যা সমাধানে এবার রাষ্ট্রপতির দ্বারস্থ বিশ্বের শিক্ষাবিদরা]
প্রসঙ্গত, এদিন নবদ্বীপ বিধানসভার কৃষ্ণনগর ১ নম্বর ব্লকের ভালুকা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় দিদির সুরক্ষা কবচের প্রচার চালান সাংসদ মহুয়া মৈত্র। শান্তিপুর বিধানসভার বাগআচড়া গ্রাম পঞ্চায়েতে প্রচার চালান বিধায়ক ব্রজকিশোর গোস্বামী, রানাঘাট দক্ষিণ বিধানসভার নপাড়া-মুসুন্ডা গ্রাম পঞ্চায়েতে প্রচার চালান তৃণমূল নেতা রঞ্জিত সরকার। নবদ্বীপ বিধানসভার চরমাঝদিয়া-চরব্রহ্মনগর এলাকায় প্রচার চালান বিধায়ক পূণ্ডরীকাক্ষ সাহা। পলাশীপাড়া বিধানসভার মুরুটিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতে প্রচার চালান বিধায়ক বিমলেন্দু সিংহ রায়, চাপড়া বিধানসভার বৃত্তিহুদা গ্রাম পঞ্চায়েতে দিদির সুরক্ষা কবচ কর্মসূচির প্রচার চালান রুকবানুর রহমান।