সোমনাথ রায়, নয়াদিল্লি: মারধর করা হচ্ছে মহিলাদের। ট্রেনে উঠতে গেলে ঘাড় ধরে টেনে হিঁচড়ে নামিয়ে দেওয়া হচ্ছে। কারণ জানতে চাইলে বন্দুক তাক করছে ইউক্রেনের সেনা। কখনও বাঁট দিয়ে মারা হচ্ছে, কখনও আবার শূন্যে চালানো হচ্ছে গুলি। ভারতীয় পড়ুয়ারা কি তাহলে সত্যিই ইউক্রেনে পণবন্দি? বুধবার এমনটাই দাবি করেছিলেন রাশিয়ার সেনার মুখপাত্র। কিন্তু রুশ বাহিনীর সেই দাবি উড়িয়ে দিয়েছে ভারতীয় বিদেশমন্ত্রক। সাফ জানিয়েছে, কোনও ভারতীয় পড়ুয়ার পণবন্দি হওয়ার খবর নেই।
রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রকের পক্ষ থেকে একটি বিবৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, ইউক্রেনীয় সেনা খারকভে ভারতীয় পড়ুয়াদের পণবন্দি করে রেখেছে। এদেরকে ‘মানব বর্ম’ হিসেবে ব্যবহার করতে চাইছে ইউক্রেন। জানানো হয়েছিল, ভারতীয় পড়ুয়াদের একটি দল খারকভ থেকে রাশিয়ার সীমান্ত বেলগারোদে আসতে চেয়েছিল। কিন্তু তাদের আসতে দেওয়া হয়নি। ভারতীয় পড়ুয়াদের ইউক্রেনের পশ্চিমে পোল্যান্ড সীমান্তে যেতে বলা হচ্ছে। যেটা খারকভ থেকে ২০ ঘণ্টার রাস্তা। এই রাস্তার বিভিন্ন অঞ্চলে তীব্র লড়াই চলছে। রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের ধারনা ভারতীয় পড়ুয়াদের এই অঞ্চলে ঢাল হিসেবেই ব্যবহার করতে চাইছে ইউক্রেন। এই দাবি ঘিরে স্বাভাবিকভাবেই চাঞ্চল্য ছড়ায়। আতঙ্কিত হয়ে পড়েন সে দেশে থাকা ভারতীয় পড়ুয়াদের পরিবারও।
[আরও পড়ুন: যুদ্ধবিধ্বস্ত কিয়েভে বাড়ছে ধর্ষণ, ডাকাতি! জেলেনস্কির প্রশাসনকে দুষলেন ইউক্রেনীয় সাহিত্যিক]
এমন পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার সকালে এই ইস্যুতে বিবৃতি দিল ভারতের বিদেশমন্ত্রক। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচী টুইটারে জানান, “ভারতীয় পড়ুয়াদের পণবন্দি হওয়ার বিষয়ে কোনও খবর এখনও আমাদের কাছে নেই। খারকভ-সহ পশ্চিমাঞ্চলে আটকে থাকা পড়ুয়াদের বের করে আনতে বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করার জন্য ইউক্রেন প্রশাসনের কাছে আরজি জানিয়েছি আমরা। দ্রুত ব্যবস্থা হবে।”
জানা গিয়েছে, শুধুমাত্র খারকভেই চার হাজার ভারতীয় পড়ুয়া আটকে রয়েছে। এরা সব মেডিক্যাল কলেজের ছাত্র। এরমধ্যে বহু বাঙালি রয়েছে। রাশিয়া জানিয়েছে, তারা ভারতীয় পড়ুয়াদের তাদের সীমান্ত দিয়ে ‘সেফ প্যাসেজ’ দিতে তৈরি। বস্তুত, মোদি-পুতিনের বৈঠকের পর বুধবার রাতেই খারকভ থেকে একদল মহিলা ভারতীয় পডু়য়াকে রুশ সীমান্তের দিকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এরপরে ছেলেদের দলকে ‘সেফ প্যাসেজ’ দিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। রাশিয়া আশ্বাস দিয়েছে, সীমান্তে পৌঁছতে পারলে প্রয়োজনে তাদের উড়ানে করে তারা ভারতীয় পড়ুয়াদের দেশে ফেরত পাঠাবে।