সুকুমার সরকার, ঢাকা: বাংলাদেশে ভূমিদস্যু বা ভূমিখেকো নতুন শব্দ নয়। কয়েক বছর ধরে দেশে এ ধরনের অপরাধীদের অবাধ বিচরণ চলছে। অভিযোগ, এরা ভূমি দপ্তরের লোকদের বিপুল অর্থ দিয়ে হাত করে সরকারি জমি, খাল-বিল-নদী-নালা ভরাট করে দলিল বানিয়ে বিক্রি করে ফুলে ফেঁপে উঠছে তারা। এবার এই অপরাধীরা পাহাড় কেটে জমি দখল করতে উদ্যত হয়েছে। যে কারণে আগুন লাগিয়ে গাছপালা পুড়িয়ে দিচ্ছে। এমনই খবর বনদপ্তর সূত্রে।
জানা গিয়েছে, ভূমিদস্যুরা ঢাকার নদী-খাল-বিল শেষ করার পর তারা এখন নজর দিয়েছে পাহাড় কেটে জমি দখলে। এবার ভারত সীমান্ত ঘেঁষা শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার কাংশা ইউনিয়নের গারো পাহাড়ে বনের অন্তত ১৫টি স্থানে আগুন দিয়ে গাছ-পালা পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এর ফলে বন্যপ্রাণীদেরও মৃত্যু ঘটছে। নষ্ট হচ্ছে মাটির গুণাগুণ। গত দুই সপ্তাহের উপর সেই আগুনে কয়েকটি পাহাড়ি বন পুড়ে গিয়েছে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বছরের পর বছর ধরে চলছে এই বন পোড়ানো। প্রতিবছর এই মৌসুমে বনে আগুন দেওয়ার কারণে পুড়ে যায় ছোট গজারি গাছ (শালকপিচ), ঝোপঝাড়, লতাপাতা, কীটপতঙ্গ-সহ বহু প্রাণী। মাটি নষ্ট হয়ে যাওয়ার কারণে নতুন করে গাছও জন্ম নেয় না।
[আরও পড়ুন: ‘যে কোনও মূল্যে ক্ষমতায় ফিরতে চায়’, বিএনপিকে ‘সন্ত্রাসী’ বলে তোপ আওয়ামি লিগের]
বন দপ্তর সূত্রে খবর, ময়মনসিংহ বন বিভাগের রাংটিয়া রেঞ্জের আওতায় বনভূমি রয়েছে প্রায় ৮ হাজার ৮৮০ একর। এর মধ্যে বেশিরভাগ জমিতে শাল-গজারিসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ-পালা সমৃদ্ধ বন রয়েছে। প্রতি বছরের ফাল্গুন-চৈত্র মাসে বিভিন্ন গাছপালার পাতা ঝরে পড়ে। বনাঞ্চলের মধ্য দিয়ে চলাচলের জন্যে সড়কপথ থাকায় খুব সহজেই দুষ্কৃতীরা রাতে আবার কখনও দিনেও বনে আগুন দিয়ে যায়। ঝরাপাতাগুলো শুকনো থাকায় মুহূর্তের মধ্যেই বনে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু যারা এই কাজ করছে তারা ধরাছোঁয়ার বাইরে। আইনিভাবে ব্যবস্থা না নেওয়ায় বছরের পর বছর চলছে বন পোড়ানোর ঘটনা। গতকাল বৃহস্পতিবার ঝিনাইগাতী-কামালপুর সড়কের ময়মনসিংহ বন বিভাগের রাংটিয়া রেঞ্জের গজনী বিট এলাকায় পাহাড়ের চারটি স্থানে বড় আগুন লেগেছে।