সুমন করাতি, হুগলি: অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী থেকে লোকসভায় তৃণমূলের সৈনিক। প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে দিল্লির লড়াইয়ে শামিল আরামবাগের মিতালী বাগ। অত্যন্ত গরিব পরিবারের সন্তান মিতালীর বেড়ে ওঠা মোটেও সহজ নয়। জীবনযুদ্ধের কথা বলতে গিয়ে আজও চোখে জল আসে তাঁর। দিল্লির সংসদ ভবনে প্রান্তিকদের জন্য আওয়াজ তোলার স্বপ্ন দুচোখে নিয়ে ভোটযুদ্ধে শামিল মিতালী।
ছোটবেলা থেকে বার বার প্রতিকূলতার মুখে মিতালী। পড়াশোনায় ভালো ছিলেন। পড়াশোনার খরচ সামলাতে টিউশন করতেন। খুব কষ্ট করে মাস্টার্স করেন। শুধুমাত্র টাকার অভাবে মাস্টার্সের পর আর পড়াশোনা এগোতে পারেননি। চোখের জল মুছতে মুছতে মিতালী বলেন, “খুব কঠিন পরিস্থিতিতে বড় হয়েছি। গ্রামের স্কুলে পড়াশোনা করেছি। টিউশন করেছি। একটি স্কুলে পড়াতাম। প্রথম জীবনে মোটে ১৫০ টাকা বেতন পেতাম। ভালো কাজ করার জন্য অবশ্য মাঝেমধ্যে ২০০ টাকা বেতন পেয়েছি।”
[আরও পড়ুন: গর্জনই সার! ডায়মন্ড হারবারে অভিষেকের বিরুদ্ধে প্রার্থী হচ্ছেন না নওশাদ]
মায়ের জীবন সংগ্রামের কথা বলতে গিয়ে আবেগে ভেঙে পড়েন। মিতালী বলেন, “আমার মা আমাকে এবং ভাই-বোনদের মানুষ করতে অনেক কষ্ট করেছেন। আমি মায়ের ত্যাগ দেখে অত্যন্ত অনুপ্রাণিত হয়েছি। ২০১৬ সালে হঠাৎ আমি আমার বাবাকে হারাই। এবং আমার মায়ের একমাত্র ভরসা হয়েছিলাম। আমার মা আমার সব কিছু এবং আমার সেরা বন্ধু। অনেকদিন আমি দুবেলা খাবারের ব্যবস্থাও করতে পারিনি। এখনও বাড়ির অবস্থা ভালো নয়।”
তৃণমূলের একনিষ্ঠ কর্মী মিতালী ২০১৮ সালে পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য হন। ২০২৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় জেলা পরিষদের সদস্য ছিলেন। লোকসভা নির্বাচনের টিকিট নিয়ে আবেগাপ্লুত মিতালী বলেন, “আমি গ্রামের কাউকেই কষ্ট পেতে দেব না। একজন নারী হিসেবে এবং দিদির দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে আমি নারীদের এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। আমি সংসদ ভবনে প্রান্তিকদের জন্য আওয়াজ তুলতে চাই।” মিতালী লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থী হওয়ায় অত্যন্ত খুশি তাঁর প্রতিবেশীরা। মিতালী লোকসভা নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়ী হোন, চাইছেন তাঁরা।
দেখুন ভিডিও: