রমেন দাস: 'বিয়ের পর থেকে পণের দাবিতে লাগাতার চাপ, এমনকী খুনের হুমকি দিতেন মুকুটমণি অধিকারী।' শনিবার মিঠুন চক্রবর্তীর (Mithun Chakraborty) উপস্থিতিতে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটালের মুখোমুখি হয়ে এমনই বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন তাঁর স্ত্রী স্বস্তিকা ভুবনেশ্বরী। তাঁর দাবি, মুকুটমণিকে বিয়ে করে তিনি প্রতারিত হয়েছেন। জনগণ যাতে প্রতারিত না হন তাই স্বামীর মুখোশ খুলে দিতে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন তিনি।
পদ্ম শিবির ছেড়ে রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্রের ঘাসফুলের প্রার্থী হয়েছেন চিকিৎসক মুকুটমণি অধিকারী (Mukut Mani Adhikari)। ১৩ তারিখ রানাঘাটে (Ranaghat) ভোট। তার আগেই ভোট প্রচারের শেষবেলায় তাঁর স্ত্রী স্বস্তিকা ভুবনেশ্বরী (Swastika Bhubaneswari) যোগ দেন গেরুয়া শিবিরে। তাও আবার মিঠুন চক্রবর্তীর মতো তারকা প্রচারকের হাত ধরে। নিজের বিজেপি যোগের কারণ ব্যাখ্যা করে সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে স্বস্তিকা বলেন, "২০২৩ সালের ২৮ মে আইনিভাবে বিয়ে হয়েছিল আমাদের। তার পর থেকেই পণের দাবিতে লাগাতার আমায় শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন মুকুটমণি। এই ঘটনা থেকেই অশান্তির সূত্রপাত।" স্বস্তিকার আরও অভিযোগ, "আইনি বিয়ে হলেও সেই বিয়েকে মর্যাদা দিতে চাননি উনি। জনসমক্ষে আনতে চাননি আমাদের বিয়ে। এবং বিবাহ বিচ্ছেদের জন্য চাপ দিতে থাকেন। এমনকী খুনের হুমকিও দেন তিনি। এর বিরুদ্ধে গত বছর থেকে আমার লড়াই চলছে।"
[আরও পড়ুন: বিজেপির সভামঞ্চে অশীতিপর আদিবাসী বৃদ্ধার পা ছুঁয়ে প্রণাম মোদির, কে তিনি?]
একইসঙ্গে স্বস্তিকা বলেন, "আমাকে বিয়ে করে আমার সঙ্গে প্রতারণা করেছেন মুকুটমণি। আমি চাই মানুষ জানুক মুকুটমণির আসল রূপ। একজন প্রতারককে ভোট দিলে আমার মতোই ঠকতে হবে রানাঘাটের মানুষকে।" পাশাপাশি রানাঘাটের বিজেপি প্রার্থী জগন্নাথ সরকারের (Jagannath Sarkar) প্রশংসা করে স্বস্তিকা বলেন, "জগন্নাথ সরকার মানবদরদী। উনি মানুষের নেতা। এমনকী এই বিপদের সময় উনি আমার পাশে দাঁড়িয়েছেন। সব রকমভাবে সাহায্য করেছেন। মিঠুন স্যরও আমায় আশ্বস্ত করে বলেছেন, ভয় পেও না আমরা পাশে আছি।"
[আরও পড়ুন: ‘মহাগুরু’র মহা চমক! ভোটের আগেই মিঠুনের হাত ধরে বিজেপিতে রানাঘাটের তৃণমূল প্রার্থীর স্ত্রী]
উল্লেখ্য, বিয়ের কয়েক মাসের মধ্যেই ২০২৩ সালে বধূ নির্যাতনের অভিযোগে স্বস্তিকা ভুবনেশ্বরী তিলজলা থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। অভিযোগ, বিয়ের কয়েকদিনের মধ্যেই তাঁর উপর অত্যাচার শুরু করে রানাঘাট দক্ষিণের (Ranaghat) বিধায়ক মুকুটমণি ও তাঁর পরিবার। বিয়েও অস্বীকার করেন বিধায়ক। এনিয়ে যথেষ্ট শোরগোল পড়ে। আইনের ছাত্রী স্বস্তিকার সঙ্গে মুকুটমণির আলাপ আগেই। কংগ্রেস পরিবারের মেয়ে স্বস্তিকার অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই পণের দাবিতে অত্যাচার শুরু করেন স্বামী। ইতিমধ্যে তাঁদের বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা চলছে। এখনও পর্যন্ত খাতায়-কলমে তৃণমূল প্রার্থী মুকুটমণি অধিকারীরই স্বস্তিকা ভুবনেশ্বরীর স্বামী। অন্যদিকে, তৃণমূল প্রার্থীর বিরুদ্ধে স্ত্রীর এমন গুরুতর অভিযোগ প্রসঙ্গে তাঁর সঙ্গে সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটালে-র তরফে যোগাযোগের চেষ্টা হলেও তিনি এই বিষয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া জানাননি।
দেখুন ভিডিও: