বাবুল হক, মালদহ: ঝাড়ফুঁক-তন্ত্রসাধনার মাধ্যমে প্রতিবেশীদের ক্ষতি করছেন! স্রেফ সন্দেহের বশে ডাইনি অপবাদে এক মহিলা ও তাঁর দুই মেয়েকে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠল স্থানীয়দের বিরুদ্ধে। ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাথারি কোপানো হয় তাঁদের। নক্কারজনক ঘটনাটি ঘটেছে মালদহের (Malda) মোথাবাড়িতে।
জানা গিয়েছে, মালদহের মোথাবাড়ির (Mothabari) বাসিন্দা ওই মহিলা। স্বামী ও দুই মেয়েকে নিয়েই সংসার তাঁর। বাড়ি থেকে কিছু দূরে এক ব্যক্তির আমবাগান পাহারার দায়িত্বে ছিল ওই পরিবার। সকালে মেয়েকে নিয়ে বাগানে যেতেন বধূ। রাতে বাগানে থাকতেন তার স্বামী। অন্যান্য দিনের মতোই সোমবার সন্ধেয় মেয়েদের নিয়ে বাগান থেকে ফিরছিলেন ওই মহিলা। অভিযোগ, সেই সময় কয়েকজন প্রতিবেশী তাঁদের উপর চড়াও হয়। বেধড়ক মারধর করে। হাঁসুয়া দিয়ে এলোপাথাড়ি কোপানো হয় তাঁদের। রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তাঁরা। আক্রান্তদের আর্তনাদে স্থানীয়রা ছুটে এসে তাঁদের উদ্ধার করে নিয়ে যায় মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে (Malda Medical College and Hospital)। বধূর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় মঙ্গলবার সকালে তাঁকে কলকাতার হাসপাতালে স্থানান্তরিক করা হয়েছে। তাঁর মেয়েরা মালদহ হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন।
[আরও পড়ুন: ‘বিষক্রিয়া’য় মৃত বাবা-ছেলে, উদ্ধার মায়ের ঝুলন্ত দেহ, এক পরিবারের ৩ জনের মৃত্যুতে রহস্য]
কেন এই হামলা? আক্রান্তদের পরিবারের সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিবেশীদের ধারণা ছিল ঝাড়ফুঁক করতেন ওই বধূ। তার কারণেই এলাকার বহু মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ছিলেন। বধূর ক্রিয়াকলাপের উপর নজর রাখতে তাঁদের বাড়ির সামনে সিসিটিভিও বসানো হয়েছিল। স্রেফ ওই সন্দেহের বসেই হামলা। উল্লেখ্য, এই নিয়ে বছর খানেক আগেও বধূর পরিবারের সঙ্গে অশান্তি হয় গ্রামের অন্যান্য বাসিন্দাদের। সালিশি সভাও বসেছিল। যদিও পুলিশের অনুমান, ঘটনার নেপথ্যে পুরনো বিবাদও থাকতে পারে। পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। দ্রুতই ঘটনার সত্যতা প্রকাশ্যে আসবে। অভিযুক্তরা শাস্তি পাবে।