অর্ণব দাস, বারাকপুর: বহুদিন ধরেই পানিহাটি পুরসভার ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের তারাপুকুর রোড এলাকায় ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছিল। কারা এই কাজ করছে তাদের ধরতে সতর্ক ছিলেন বাসিন্দারা। বুধবার ভোরে সন্দেহভাজন এক ছিনতাইকারীকে ধরে বেধড়ক মারধর করেন তাঁরা। হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত্যু হয় ওই যুবকের। এদিকে ছেলের মৃত্যুতে ক্ষোভে ফেটে পড়ে বিচার চাইলেন মা।
পুলিশ সূত্রে খবর, মৃতের নাম সুমন মাইতি (২১)। তিনি ঘোলা থানার নিমাই চ্যাটার্জি রোড এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। সুমনের বিরুদ্ধে চুরি, ডাকাতি, আগ্নেয়াস্ত্র রাখা-সহ একাধিক অভিযোগ রয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, খড়দহ থানার অন্তর্গত পানিহাটির তারাপুকুর রোড এলাকায় প্রায় দিনই ভোরে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটত। তাই এনিয়ে সতর্ক ছিলেন বাসিন্দারা।
[আরও পড়ুন: দলীয় কর্মীকে ‘ইডিয়ট’ বলে তিরস্কার, প্রচারে গিয়ে মেজাজ হারালেন শতাব্দী]
অভিযোগ, এদিন আনুমানিক ভোর সাড়ে চারটে নাগাদ এক প্রাতঃভ্রমনকারীর উপর তিনজন চড়াও হয়ে ছিনতাইয়ের চেষ্টা করে। সেসময়ই স্থানীয়রা তাদের মধ্যে সুমনকে ধরে ফেলেন। অন্যজন দুজন কোনওমতে এলাকা ছেড়ে চম্পট দেয়। এর পর উত্তেজিত জনতা সুমনকে ব্যাপক মারধর করলে সে গুরুতর আহত হন। তাঁকে উদ্ধার করে খড়দহ বলরাম সেবা মন্দির হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন।
ঘটনা প্রসঙ্গে স্থানীয় ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলর সুব্রত রায় বলেন, "বিগত বহুদিন ধরে এই অঞ্চলে তিন-চারজন যুবক ভোরে প্রাতঃভ্রমণকারী, অফিস যাত্রীদের উপর হামলা করে ছিনতাই করত। আগেও এই রকম ছিনতাইকারী একটি দলকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল। তার পর ছিনতাই বন্ধ হয়েছিল। সম্প্রতি আবার একইরকম ভাবে এলাকায় ছিনতাই শুরু হয়। এদিনও একজনের উপর হামলা করে ছিনতাইয়ের চেষ্টা হলে অন্যান্যরা একজনকে ধরে ফেলে তাকে মারধর করে।"
[আরও পড়ুন: উলুবেড়িয়ার খালে নরকঙ্কাল! পুলিশি তদন্তে ফাঁস কোন ষড়যন্ত্র?]
এদিকে, মারধরের ঘটনায় ছেলের মৃত্যু নিয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন মা মিঠু মাইতি। তিনি প্রশাসনের কাছে বিচার চেয়ে জানিয়েছেন, "ছেলে আমাদের বলে গিয়েছিলে ভূতনাথ মন্দির পুজো দিতে যাচ্ছে। এখন শুনছি চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়ার পর ওকে পিটিয়ে মেরে ফেলেছে। আমার ছেলে চুরি করলেও ওকে পুলিশে দিত, মেরে ফেলল কেন। আমি এর বিচার চাই।" এই বিষয়ে পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে। সবদিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।