নন্দিতা রায়, নয়াদিল্লি: ন্যূনতম মজুরি কত? কবে থেকে তা কার্যকর হবে? তা নিয়ে এখনও কোনও নির্দিষ্ট দিশা দেখাতে পারল না কেন্দ্রীয় সরকার। ২০১৯ সালে সংসদে এই সংক্রান্ত বিল, ‘কোড অন ওয়েজেস’ (Code on Wages) পাশ হওয়ার পর প্রায় দু’বছর হতে চলেছে। অথচ এ বিষয়ে কোনও কাজই এগোয়নি।
শ্রমিক সংগঠনগুলির দাবির জেরে কেন্দ্রের তরফে গত ৩ জুন একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির মেয়াদ তিন বছর। সমস্যা এখানেই, মনে করছে শ্রমিক সংগঠনগুলি। তাদের মতে, কমিটির মেয়াদ শেষের আগেই দ্বিতীয় মোদি সরকারের মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে ন্যূনতম মজুরির বিষয়টি চূড়ান্ত হওয়ার প্রক্রিয়া মাঝপথেই আটকে থাকতে পারে। শ্রমিক সংগঠনগুলির চাপের মুখে শ্রমমন্ত্রকের পক্ষে শনিবার বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, “কমিটির মেয়াদ তিন বছরের অর্থ এই নয় যে, তারা রিপোর্ট তিন বছর পরে জমা দেবে। তার আগেই কমিটি সুপারিশ জমা দেবে।” আরও বলা হয়েছে, “কমিটির প্রথম বৈঠক ১৪ জুন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২৯ জুন আবার বৈঠক ডাকা হয়েছে। ন্যূনতম মজুরির বিষয়টি ঠিক করতে দেরি করার কোনও অভিপ্রায় নেই সরকারের।”
[আরও পড়ুন: ডাক্তার বা স্বাস্থ্যকর্মীদের হেনস্তা করলেই FIR, রাজ্যগুলিকে নির্দেশ কেন্দ্রের]
সরকার সদিচ্ছার বার্তা দিলেও কবে থেকে ন্যূনতম মজুরি চালু হবে তা এড়িয়েই যাওয়া হয়েছে। বর্তমানে দেশের ৫০ কোটি শ্রমিকের মধ্যে ২০ কোটি শ্রমিক, অর্থাৎ ৪০ শতাংশ ন্যূনতম মজুরি পান। সবাইকে ন্যূনতম মজুরির আওতায় আনার লক্ষ্যেই ‘কোড অন ওয়েজেস’ তৈরি হয়েছিল। প্রশ্ন উঠেছে, কেন্দ্রীয় সরকার বিল পাস করিয়েও আইন করতে কেন দেরি করছে। শ্রমিক সংগঠনগুলির মতে, ২০২৪-র লোকসভা নির্বাচনের আগে ন্যূনতম মজুরি কার্যকর করে শ্রমিকমহলের মন জয়ের চেষ্টা হবে।
অতীতে শ্রমমন্ত্রক ন্যূনতম মজুরি ঠিক করতে একটি কমিটি গঠন করেছিল। সেই কমিটি দৈনিক ৩৭৫ টাকা ন্যূনতম মজুরির সুপারিশ করে। কেন্দ্রীয় সরকার সেই প্রস্তাবে আমল দেয়নি। কেন পূর্বতন কমিটির সুপারিশ মানা হল না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে শ্রমিক সংগঠনগুলি। শ্রম মন্ত্রক এই কমিটি গঠনের পর আরএসএস অনুমোদিত বৃহত্তম মজদুর সংঘের (বিএমএস), সাধারণ সম্পাদক বিনয় কুমার সিনহা জানিয়েছেন, “পুরনো কমিটির রিপোর্ট কেন খারিজ করা হল আর নতুন কমিটি কেনই বা গঠন করা হল তা নিয়ে আমরা সরকারের কাছে কৈফিয়ত চাইব।”