সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের ‘গোঁসাইবাগানের ভূত’ উপন্যাসে বুরুন অঙ্কে ১৩ পেয়েছিল। পরে অবশ্য অঙ্কের স্যার করালীবাবু মেনে নিয়েছিলেন, সকলেরই উচিত জীবনে একবার অন্তত অঙ্কে ১৩ পাওয়া। যেন সেই নিয়মই অনুসরণ করে ব্রিটিশ এমপিরা (UK MP) ডিগবাজি খেলেন পঞ্চম-ষষ্ঠ শ্রেণির অঙ্কে (Maths)। সেই সঙ্গে হাবুডুবু ইংরাজিতেও (English)। অঙ্কে পাশ করলেন মাত্র ৪৪ শতাংশ। তাও অনেকেই কোনও মতে পাশ নম্বরটুকু জোগাড় করতে পেরেছেন। ইংরাজিতে পাশও মাত্র ৫০ শতাংশ। জনপ্রতিনিধিদের এই হাল দেখে শোরগোল পড়ে গিয়েছে।
ব্যাপারটা কী খুলেই বলা যাক। লন্ডনের ওয়েস্ট মিনস্টারে অপ্রয়োজনীয় পরীক্ষা বাতিলের উদ্দেশ্যে আয়োজন করা হয়েছিল একটি পরীক্ষার। বলা যায় মক টেস্ট। আয়োজক ‘মোর দ্যান আ স্কোর’ নামের এক প্রচার গ্রুপ। সেদেশের ষষ্ঠ বছরের পরীক্ষায় বসেন ব্রিটিশ সাংসদরা। তাঁদের মধ্যে অন্যতম সেদেশের শিক্ষা নির্বাচন কমিটির চেয়ারম্যান রবিন ওয়াকার। আর সেই পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হতেই চক্ষু চড়কগাছ সকলের। অঙ্কে ফেল অর্ধেকের বেশি পরীক্ষার্থী! ইংরাজিতেও তথৈবচ অবস্থা। দেখা গিয়েছে ব্যাকরণ, বানান ও যতিচিহ্নেও গড়বড় করেছেন অধিকাংশ এমপি!
[আরও পড়ুন: মহিলাদের উরু, স্তন, গোপনাঙ্গ লক্ষ্য করে গুলি, হিজাব বিরোধী আন্দোলন রুখতে মরিয়া ইরান প্রশাসন!]
মজার বিষয় হল এবছর ষষ্ঠ বছরের পরীক্ষায় ইংরাজি ও অঙ্কে পাশ করেছে যথাক্রমে ৭২ ও ৭১ শতাংশ পড়ুয়া। কিন্তু তাদের পারফরম্যান্সের ধারেকাছে পৌঁছতে পারেনি বড়রাই। কেবল বড়ই নয়, দেশ চালানোর ভার যাঁদের উপরে তাঁরাই চিৎপটাং হয়ে গিয়েছেন পরীক্ষা দিতে বসে। এমপি এমা হার্ডি এই অভিজ্ঞতা সম্পর্কে বলতে গিয়ে জানিয়েছেন, ”এই ধরনের পরীক্ষা নেওয়া খুব দরকার। যাতে আমরা ওই ছোটদের পরিস্থিতিটা বুঝতে পারি। জানতে পারি, কতটা চাপ থাকে ওদের উপরে।”
প্রসঙ্গত, ‘বাংলার বাঘ’ আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ের একটি গল্প প্রচলিত। যা থেকে জানা যায়, পরীক্ষার প্রশ্নপত্র দীর্ঘ করার অভিযোগ ওঠায় পরীক্ষককেই পরীক্ষার আসনে বসিয়ে ছিলেন আশুতোষ। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত সময়ে লেখা শেষ তো করতে পারেনইনি তিনি। বরং হয়ে গিয়েছিলেন হতভম্ব। সেই গল্পই যেন নতুন করে মনে করিয়ে দিচ্ছে ব্রিটিশ এমপিদের এহেন দুর্দশা।