সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক:পড়াশোনায় একেবারেই মন ছিল না ছেলের। কীভাবে তাকে পড়তে বসানো যায়, সর্বক্ষণ সেই চিন্তাতেই ডুবে থাকতেন মা। অনেকে ভেবে চিন্তা উপায় বের করলেন মা। ছেলের সঙ্গে নিজেও পড়তে শুরু করলেন। সেই থেকেই শুরু। একসঙ্গে পড়াশোনা করার যাত্রা শেষ হল চাকরির পরীক্ষার পরে। একইসঙ্গে চাকরি পেলেন মা এবং ছেলে। কেরালার (Kerala) পাবলিক সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষায় পাশ করেছেন দু’জনেই।
সদ্য চাকরি পাওয়া মায়ের নাম বিন্দু। ৪২ বছর বয়সে সরকারি চাকরির (Public Service Commission) পরীক্ষায় পাশ করে চাকরি পেয়েছেন। সেই একই পরীক্ষায় পাশ করে চাকরি পেয়েছেন তাঁর ২৪ বছর বয়সী ছেলেও। বিন্দু নিজেই জানিয়েছেন, এবার লাস্ট গ্রেড সার্ভেন্ট পদে চাকরিতে যোগ দেবেন তিনি। তাঁর ছেলে লোয়ার ডিভিশন ক্লার্ক হিসাবে চাকরি জীবন শুরু করবে।
[আরও পড়ুন: বিহারে ট্রেনের কামরায় ষাঁড়! ভিডিও দেখে তাজ্জব নেটিজেনরা]
বিন্দু জানিয়েছেন, গত দশ বছর ধরে অঙ্গনওয়াড়ি শিক্ষিকা হিসাবে কাজ করছেন তিনি। শুধুমাত্র ছেলে যেন মন দিয়ে পড়াশোনা করে, সেই জন্যই ফের নতুন করে পড়তে শুরু করেছিলেন তিনি। যখন তাঁর ছেলে দশম শ্রেণির ছাত্র, সেই সময় থেকেই পড়াশোনা করছেন বিন্দু। স্কুলের পাট চুকিয়ে ছেলে যখন চাকরির জন্য চেষ্টা করছে, সেই সময়ও তিনি সঙ্গে ছিলেন। চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে একসঙ্গেই একটি কোচিং সেন্টারে ভরতি হন মা-ছেলে।
তবে প্রথমবার পরীক্ষা দিয়েই চাকরি পাননি দুজনের কেউই। কিন্তু সেই সময়ে ভেঙে না পড়ে একে অপরকে সাহস জুগিয়েছেন। অঙ্গনওয়াড়ির শিক্ষিকা বিন্দু চারবারের চেষ্টায় চাকরি পেয়েছেন। তাঁর ছেলে জানিয়েছেন, “সারাক্ষণই পড়াশোনা করতাম না আমরা। মা যখন সময় পেত, তখন পড়তে বসতাম। অন্য সময়ে না পড়লেও বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করতাম।”
ব্যর্থতা আসলেও নিজের লক্ষ্যে অবিচল থাকতে হবে, সাফ কথা বিন্দুর। তিনি বলেছেন, “ধৈর্য্য ধরে কাজ করলে শেষ পর্যন্ত ভাল ফল পাওয়া যায়। বারবার ব্যর্থ হবে, কিন্তু তাও এগিয়ে যেতে হবে।” এখন মা-ছেলে একই সঙ্গে চাকরিতে যোগ দেবেন, সেই অপেক্ষাতেই রয়েছেন দু’জনে।