জ্যোতি চক্রবর্তী, বনগাঁ: দাবি পূরণ করেনি কোনও রাজনৈতিক দলই। না বিজেপি, না তৃণমূল – একুশে বঙ্গের ভোটে মতুয়া শিবির থেকে, তাঁদের দাবি মেনে কাউকেই প্রার্থী করেনি এই দুই দল। তা নিয়ে এবার ক্ষোভ মতুয়া (Motua) মহাসংঘ ঠাকুরবাড়ির অন্দরে। নিজেদের দাবি পূরণ না হওয়ায় বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুরের বাবা মঞ্জুলকৃষ্ণ ঠাকুর এবং তৃণমূল সমর্থিত মতুয়া সংঘের সংঘাধিপতি মমতাবালা ঠাকুর একযোগে দুই দলকেই তোপ দেগেছেন।তাঁদের হুঁশিয়ারি, এবার মতুয়ারা নিজেদের মতো করেই সিদ্ধান্ত নেবে, ভোটে কাকে সমর্থন করবে।
রবিবার দুপুরে ঠাকুরবাড়িতে সাংবাদিক সম্মেলন করে এ কথা জানালেন সারা ভারত মতুয়া মহাসংঘের প্রধান সেবায়েত তথা বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুরের (Shantanu Thakur) বাবা মঞ্জুলকৃষ্ণ ঠাকুর৷ তিনি বলেন, “অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘের পক্ষ থেকে ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির কাছে ৩০ টি আসন দাবি করা হয়েছিল। কিন্তু মতুয়াদের একটি আসনও দেওয়া হয়নি বিজেপির পক্ষ থেকে। এতে ক্ষিপ্ত মতুয়া ভক্তরা। আগামী দিনে তাঁরা কী সিদ্ধান্ত নেবেন, তা মতুয়ারাই ঠিক করবেন।” মঞ্জুলকৃষ্ণের সাংবাদিক সম্মেলনকে কটাক্ষ করে প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ মমতা ঠাকুর (Mamatabala Thakur) বলেন, “বিজেপি মতুয়াদের বিভ্রান্ত করছে৷ বিজেপি ও শান্তনু উভয়েই ভাঁওতা দিয়েছেন।” তবে তিনিও তৃণমূলের বিরুদ্ধে একই বঞ্চনার অভিযোগ এনেছেন। মমতা ঠাকুর জানান, তৃণমূলের কাছে তিনিও মতুয়াদের মধ্যে থেকে ৪, ৫ জনকে প্রার্থী করার আবেদন জানিয়েছিলেন। কিন্তু তা নামঞ্জুর হয়েছে।
[আরও পড়ুন: ভোটের দিন কয়েক আগে রাজনৈতিক হত্যা, তৃণমূল কর্মী খুনের অভিযোগে উত্তপ্ত ঝাড়গ্রাম]
ঠাকুরবাড়ির সূত্রে জানা গিয়েছে, শান্তনু ঠাকুর বিজেপির কাছে বেশ কয়েকটি আসন দাবি করেছিল। বিজেপি (BJP) এখনও তা দেয়নি। সেই কারণে শান্তনু ঠাকুর ক্ষুব্ধ বলে জানা গিয়েছে। যদিও গেরুয়া শিবিরের তরফে আরও ১৮টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা বাকি, যার মধ্যে রয়েছে বনগাঁর বেশ কয়েকটি আসনও। তাতে কি মতুয়াদের ভাগ্যের শিকে ছিঁড়তে পারে? আশা-আশঙ্কার এই দোলাচলটুকু তো থাকছেই। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের মত, এদিন শান্তনু ঠাকুর বাবাকে দিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করিয়ে চাপের রাজনীতি শুরু করেছেন। সাংবাদিক সম্মেলনের বিষয়ে শান্তনু ঠাকুরের প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ”এ বিষয়ে কিছু জানা নেই। পরে খোঁজ নিয়ে বলতে পারব।” নিজেই অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসংঘের সংঘাধিপতি হয়েও শান্তনু ঠাকুরের এই প্রতিক্রিয়া ঘিরে গুঞ্জন শুরু হয়েছে।