shono
Advertisement

২৫ বছর পরেও কি মন ছোঁবে সিম্বার গর্জন? ‘দ্য লায়ন কিং’ মুক্তির আগে তুঙ্গে উন্মাদনা

হলিউডের ইতিহাসে এখনও সর্বোচ্চ অর্থ উপার্জন করা ‘জি’ রেটেড ফিল্ম ‘দ্য লায়ন কিং’। The post ২৫ বছর পরেও কি মন ছোঁবে সিম্বার গর্জন? ‘দ্য লায়ন কিং’ মুক্তির আগে তুঙ্গে উন্মাদনা appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 03:40 PM Jul 18, 2019Updated: 04:04 PM Jul 19, 2019

আগামিকাল রিলিজ করছে লাইভ অ্যাকশন ‘দ্য লায়ন কিং’। ২৫ বছর আগে মুক্তি পাওয়া অরিজিনাল ফিল্মের ম্যাজিক কি ধরে রাখতে পারবে রিমেক? নতুন কী থাকছে ছবিতে? লিখছেন প্রিয়দর্শিনী রক্ষিত

Advertisement

সিম্বা। নালা। মুফাসা। স্কার। টিমন। পুম্বা। জাজু। এক-একটা নামের সঙ্গে জড়িয়ে মুঠো-মুঠো নস্টালজিয়া। শুনলে কারও মনে পড়ে ছোটবেলার গন্ধ। কেউ ফিরে যান টিনএজের হুল্লোড়ে। সৌজন্যে ওই নামগুলো। সৌজন্যে ‘দ্য লায়ন কিং’।  ১৯৯৪ সালে মুক্তি পাওয়া ডিজনির অ্যানিমেটেড মেগা হিট ফিল্ম এখনও সিনেপ্রেমীর মনে উজ্জ্বল। হলিউডের ইতিহাসে এখনও সর্বোচ্চ অর্থ উপার্জন করা ‘জি’ রেটেড ফিল্ম ‘দ্য লায়ন কিং’। শুধু তাই নয়, মার্কিন মুলুকে এখনও কোনও কোনও থিয়েটারে দেখানো হয় ‘দ্য লায়ন কিং’। আর এখনও শো হাউসফুল হয়! আশ্চর্যের কিছু নেই বোধহয়। শেক্সপিয়রের ‘হ্যামলেট’ থেকে আংশিক অনুপ্রাণিত এই গল্পে কী নেই? মূলত রিভেঞ্জ ড্রামা + কামিং অফ এজ ফিল্ম। সঙ্গে কমেডি। প্রেম। পারিবারিক সম্পর্ক। চক্রান্ত। এর সঙ্গে যোগ করুন দুর্দান্ত অ্যানিমেশন (যা পঁচিশ বছর পরেও সেকেলে লাগে না), স্মরণীয় সব গান আর দৃশ্য।

[ আরও পড়ুন: ফুটবলটা এখন ভালই খেলতে পারি: দেবাদৃতা]

একজোড়া উদাহরণ দেওয়া যাক। প্রথমত, ফিল্মের ওপেনিং সিকোয়েন্স। আবহে আফ্রিকান বিট সমৃদ্ধ এলটন জনের ‘সার্কল অফ লাইফ’। স্ক্রিন জুড়ে আফ্রিকার চোখধাঁধানো প্রাণী রাজত্ব আর ঝলমলে ফুল-ফল-গাছপালা। জঙ্গলের এপ্রান্ত সেপ্রান্ত থেকে সবাই হাজির শাসনকেন্দ্র প্রাইড রকে। উপলক্ষ পশুরাজের উত্তরাধিকারী প্রাপ্তি। সদ্যোজাত সিংহছানা সিম্বাকে দু’হাতে তুলে ধরেছে রাজমন্ত্রী রাফিকি আর গাবলুগুবলু রাজপুত্র অবাক চোখে পিটপিট করে তাকিয়ে, বোধহয় ফিল্মের সবচেয়ে আইকনিক দৃশ্য। না কি ছবির মাঝামাঝি ‘হাকুনা মাতাতা’ সিকোয়েন্সটা বেশি স্মরণীয়? বাড়ি থেকে পালানো সিম্বাকে আপন করে নিয়েছে মিরক্যাট টিমন আর ওয়ার্টহগ পুম্বা। একপেট খিদে নিয়ে সিম্বা যখন গোটা জলহস্তী খেতে চাইছে, তারা তাকে পোকামাকড় খেতে শেখাচ্ছে।

এর পরেই শুরু সেই গান, যা আজও অনেকের হোয়াটসঅ্যাপ স্টেটাস। গানের তালে তালে সিম্বার বড় হয়ে ওঠা, সিংহসুলভ শৌর্য ছেড়ে অতিকায় নেকুপুষু বেড়ালে রূপান্তর। তিন বছর আগে ওয়াল্ট ডিজনি কোম্পানি ঘোষণা করে, আরও কয়েকটা অ্যানিমেটেড ফিল্মের পাশাপাশি ‘দ্য লায়ন কিং’-এরও উত্তরাধিকারী আসতে চলেছে। অ্যানিমেটেড নয়, লাইভ অ্যাকশন ফিল্ম। ঠিক তার পরপর আরও বড় অ্যানাউন্সমেন্ট পপ-কুইন বিয়ন্সে নোলসের বিশ্ববিখ্যাত গলায় কথা বলবে ফিল্মের ‘নায়িকা’ নালা। প্রাদেশিক ভার্সনগুলোতেও যথেষ্ট চমক রয়েছে। যার মধ্যে ভারতীয়দের কাছে সবচেয়ে আকর্ষণীয়, পিতাপুত্র মুফাসা-সিম্বার ‘ভূমিকায়’ শাহরুখ খান-আরিয়ান খান।


‘দ্য লায়ন কিং’-এর রিমেক ঘোষণার দিন থেকেই ফিল্ম নিয়ে আগ্রহ ছিল তুঙ্গে। পাশাপাশি এই জল্পনাও শুরু হয়ে গিয়েছিল যে, রিমেক কি অরিজিনালের জাদু ধরে রাখতে পারবে? কারণ ‘দ্য জাঙ্গল বুক’ থেকে ‘আলাদিন’, নতুন বোতলে পুরনো সুরা পেশ করার যে রাস্তায় হালফিল হাঁটছে ডিজনি, তাতে আর্থিক লাভ নিশ্চয়ই হচ্ছে। কিন্তু প্রজন্মের পর প্রজন্মের হৃদয়ে সযত্নে সংরক্ষিত নস্টালজিয়া খানখান হয়ে যাচ্ছে।

উন্নততর প্রযুক্তির স্পর্শে টু-ডাইমেনশনাল চরিত্রগুলো জ্যান্ত তো হচ্ছে, কিন্তু আগের মতো জীবন্ত থাকছে কি?  হাতেগরম উদাহরণ ‘আলাদিন’। মাসকয়েক আগে রিলিজ করা লাইভ অ্যাকশন ‘আলাদিন’ বক্স অফিসে সফল। গোটা বিশ্বে পাঁচশো মিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও বেশি আয় করেছে। কিন্তু দর্শকের মনে দাগ কাটতে অতটাও সফল নয়। বিশেষ করে অরিজিনাল ফিল্মে ‘জিনি’-র ভূমিকায় স্রেফ গলা ব্যবহার করে রবিন উইলিয়ামস যে জাদু সৃষ্টি করেছিলেন, পুরো শরীর দিয়েও উইল স্মিথ তার ধারেকাছে আসতে পারেননি।

[ আরও পড়ুন: ‘আজকের গান আমি বুঝতে পারি না’, বললেন গায়ক শান]

‘দ্য লায়ন কিং’ নিয়ে উত্তেজনার পাশাপাশি উদ্বেগ তাই স্বাভাবিক। ফিল্মের সামনে দুটো বড় চ্যালেঞ্জ। এক, নতুন প্রজন্মের মন জয় করা। আর দুই, পুরনো ফ্যানদের সন্তুষ্টি। বিশেষ করে অরিজিনাল ফিল্মটা যেখানে আড়াই দশক ধরে এত মানুষের ভালবাসায় পুষ্ট। তবে একটা সুখবর, মার্কিন মিডিয়ার একাংশকে আগেই দেখানো হয়েছে ছবিটা। আর হাতের নাগালে প্রচুর রিভিউ চলে এসেছে। যার বেশিরভাগ প্রশংসাসূচক। বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য ফিল্মে ব্যবহৃত টেকনোলজি। অ্যানিমেটেড সংস্করণের সঙ্গে শটের প্রচুর মিল থাকলেও প্রযুক্তিতে আকাশপাতাল তফাৎ।

সিজিআই অ্যানিমেশন আর লাইভ অ্যাকশনের মধ্যিখানের সরু রাস্তায় নাকি একবারও পা হড়কায়নি ‘দ্য লায়ন কিং’। জায়গায় জায়গায় নাকি এত জীবন্ত হয়ে ওঠে আফ্রিকার উপত্যকা যে মনে হবে নেচার ডকুমেন্টারি দেখছেন। পরিচালক জন ফাভরু গোটা ফিল্মের শুটিং করেছেন ভারচুয়াল রিয়্যালিটিতে। যে প্রযুক্তিকে ফিল্মমেকিংয়ের ভবিষ্যৎ হিসেবে দেখছেন অনেক বিশেষজ্ঞ। এই প্রযুক্তি সাধারণ দর্শকের কাছে এতটাই খটমট যে, ব্যাপারটা বোঝানোর চেষ্টায় প্রচুর লেখালিখিতে উপচে পড়ছে ইন্টারনেট।

[ আরও পড়ুন: ‘আমার মতো পরপর হিট সিরিয়াল কোন অভিনেত্রী দিয়েছে?’, প্রশ্ন তুললেন ইন্দ্রাণী]

প্রযুক্তির চড়া আলোয় নস্টালজিয়ার নেগেটিভগুলো অক্ষত থাকবে কি না, জানতে বাকি আর কয়েক ঘণ্টা। তবে একটা ব্যাপার নিশ্চিত। ‘দ্য লায়ন কিং’ দেখতে সিনেমাহল ভরবেই ভরবে। ১৯৯৪ সালে কোনও টিনএজার হয়তো বাবার হাত ধরে নন্দনে ‘দ্য লায়ন কিং’ দেখতে
গিয়েছিল। আজ সেই টিনএজার হয়তো নিজেই পিতা। ছেলের হাত ধরে হয়তো তাকে কোনও মাল্টিপ্লেক্সে নিয়ে যাবে ‘দ্য লায়ন কিং’ দেখাতে। এটাই তো জীবনের বৃত্ত। দ্য সার্কল অফ লাইফ।

The post ২৫ বছর পরেও কি মন ছোঁবে সিম্বার গর্জন? ‘দ্য লায়ন কিং’ মুক্তির আগে তুঙ্গে উন্মাদনা appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement