শাহজাদ হোসেন, ফরাক্কা: স্ত্রীর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক স্বামী জেনে ফেলায় দাম্পত্য কলহ! এর পরই বাড়ির চেম্বারের ভিতর থেকে গ্রামীণ চিকিৎসকের রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শনিবার তীব্র চাঞ্চল্য ছড়ায় মুর্শিদাবাদের রঘুনাথগঞ্জ থানার সম্মতি নগরে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত ব্যক্তির নাম জয়কুমার নাথ (৪২)। পেশায় ছিলেন তিনি গ্রামীণ চিকিৎসক। বাড়ির সামনে চেম্বারের ভিতর রক্তাক্ত মৃতদেহ উদ্ধার হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালে পাঠায়। এটি খুন না, দুর্ঘটনায় মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে তা খতিয়ে দেখতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
[আরও পড়ুন: অমিত শাহকে বিদায় জানাতে বিমানবন্দরে ‘কয়লা মাফিয়া’! তালিকা প্রকাশ করে তোপ তৃণমূলের]
রঘুনাথগঞ্জ ২ নম্বর ব্লকের সম্মতিনগরের বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামানের প্রতিবেশী জয়কুমার। বাড়ির লাগোয়া চেম্বার ছিল। জয়কুমার নাথের স্ত্রী সোনামনি নাথ (সাহা)। বয়স প্রায় ২৮। নাথ দম্পতির একটি ছেলে ও মেয়ে রয়েছে। ছেলের বয়স ১২। মেয়ের বয়স ৮। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, জয়কুমারের স্ত্রী সোনামণি স্থানীয় এক যুবকের সঙ্গে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন। অভিযোগ, মাস তিনেক আগে সোনামনি নাথ স্বামী ও দুই সন্তানকে ছেড়ে প্রেমিকের সঙ্গে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। যদিও পরিবারের লোকেরা বিষয়টি জানতে পারায় সোনামনিকে বাধ্য হয়ে বাড়ি ফিরে আসতে হয়। এই ঘটনার জেরে নাথ দম্পত্তির মধ্যে চরম অশান্তি বাঁধে। গত তিনদিন ধরে বাড়িতে চরম অশান্তি চলছিল নাথ দম্পতির মধ্যে। এর মধ্যেই শনিবার ভোরে গ্রামীণ চিকিৎসকের চেম্বারের ভিতর রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয় জয়কুমারের।
স্থানীয় প্রতিবেশী অনুপম সাহা জানান, "চেম্বারের সাটার নামানো ছিল। কিন্তু তালা মারা ছিল না। মাথার পিছনটা থেঁতলে গিয়েছে। ইঁট বা ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়েছে বলে অনুমান। থুঁতনিতে আঘাত রয়েছে। বুকে আঁচড়ের দাগ রয়েছে। রক্তাক্ত মৃতদেহ দেখে অনুমান করা যাচ্ছে জয়কুমার নাথকে খুন করা হয়েছে।" মৃতের স্ত্রী সোনামনি তিনদিন ধরে দাম্পত্য কলহের কথা স্বীকার করলেও তাঁর দাবি স্বামী মদ্যপ অবস্থায় পরে গিয়ে মারা গিয়েছেন। তিনি বলেন, "সম্প্রতি স্বামী আইপিএলের জুয়াতে অনেক টাকা হেরে গিয়েছিল। বাজারে দেড় লক্ষ টাকা ধার। তা নিয়ে মানসিক চাপে ছিল। গত তিনদিন ধরে প্রচুর পরিমাণ মদ খাচ্ছিল। মদ্যপ অবস্থায় পরে গিয়ে দুর্ঘটনায় তাঁর মৃত্যু হয়েছে।" তদন্তে পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, জয়কুমার নাথকে শারীরিক নির্যাতনের পর মাথায় ভারী কিছু বস্তু দিয়ে আঘাত করার জেরে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। যদিও পুলিশের দাবি, "মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠান হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।"