অভিজ্ঞান সাহা: আইপিএলে (IPL) ক্রিকেটারদের নিলামে এমনটা দেখেছি। পাঁচ মিনিটের মধ্যে কোটি টাকার ক্রিকেটার বিক্রি হয়েছেন পনেরো কোটিতে। দশ লাখের ক্রিকেটারকে কেউ কিনেছে পাঁচ কোটিতে। এ সব দেখার পরও প্রশ্ন উঠেছে। সত্যিই কী এই বিশাল অঙ্কের টাকা পাওয়ার যোগ্য সেই ক্রিকেটার? কিন্ত চোখের সামনের ঘটে যাওয়া বাস্তবকে কী করে উড়িয়ে দেওয়া যায়!
ডিজিটাল অনলাইন অকশনে এ সব দেখার সুযোগ নেই। এখানে একটা সিস্টেমের মধ্যে দিয়ে এগোতে হয়। বেস প্রাইজের পর নিদির্ষ্ট অঙ্কের টাকা ধরে সামনে পা ফেলতে হয়।তারপর যার টাকা বেশি, বাজি তার। সহজভাবে সব কিছু হলে প্রশ্ন ওঠে না। কিন্ত সিস্টেমকে তোয়াক্কা না করে চল্লিশ মিনিটে দাম যদি ২২ লাখে পৌঁছয়, তখনই অবাক লাগে। এমন কান্ডই ঘটল বাংলাদেশ ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিমের (Mushfiqur Rahim) ব্যাটের অকশনে। খেলার দুনিয়ায় যা অনেককে অবাক করেছে। উদ্দেশ্য মহৎ। করোনা ভাইরাসে আক্রান্তদের পাশে দাঁড়াতে ডিজিটাল অকশনে টাকা সংগ্রহ করতে বিশ্বে অনেকেই নেমে পড়েছেন। ইংল্যান্ডের জোস বাটলার, বেন স্টোকসরা ২০১৯ বিশ্বকাপের জার্সি, ব্যাট নিলামে তুলেছেন। বাংলাদেশের শাকিব আল হাসান, সৌম্য সরকার, তাসকিন আহমেদরা নিজেদের জিনিস অকশনে দিয়েছেন। সেদিন কিছু না হলে আজ কেন এমনটা হচ্ছে? ২০১৩ সালে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে গল টেস্টে প্রথম বাংলাদেশি ক্রিকেটার হিসেবে মুশফিক ডাবল সেঞ্চুরি করেছিলেন। সেই ব্যাট তোলা হল অকশনে। আর সেখানেই যত গন্ডগোল। এখনও পর্যন্ত ৫৩টি বিড জমা পড়েছে। ব্যাটের দাম উঠেছে ৪২ লাখ টাকা।
[আরও পড়ুন: ধর্মের ভেদাভেদ ভুলে ফের মানুষের পাশে আফ্রিদি, হিন্দু মন্দিরে খাবার বিলি করলেন পাক তারকা]
১০ মে বেলা এগারোটায় বাংলাদেশে এই ব্যাটের অকশন শুরু হয়। ঘন্টা দু’য়েকের মধ্যে তা বন্ধও করা হয়। কেন? মুশফিকের ম্যানেজার বর্ষণ কবিরের সঙ্গে বুধবার সকালে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “ ব্যাটের বেস প্রাইজ ছিল ৬ লাখ টাকা। বলা হয়েছিল, যারা অংশ নিতে রাজি তাদের বেস প্রাইজের উপর দশ হাজার টাকা করে এগোতে হবে। ইচ্ছে থাকলেও বড় অঙ্কে যাওয়া যাবে না। কিন্তু দেখা গেল সিস্টেমের তোয়াক্কা না করে ৪০ মিনিটে ব্যাটের দাম ২২ লাখ টাকায় উঠল। এখানেই অবাক হই। তাই অকশন বন্ধ করে বিড পরীক্ষা করা হয়। আর তখনই ব্যাপারটি ধরা পড়ে। দশ হাজার টাকায় না গিয়ে কেউ কেউ লাফিয়ে লাখ টাকার উপর দাম চড়িয়ে দিচ্ছেন। বাধ্য হয়ে বিড ঘন্টা তিনেক বন্ধ রাখার পর আবার চালু করা হয়।
শুধু সেদিনই নয়। মঙ্গলবার বিকেল তিনটেয় আবার পরীক্ষা করতে অকশন বন্ধ করা হয়। ঘন্টা পাঁচেক বিড পরীক্ষার পর আবার চালু হয়। ১৪ মে রাত দশটা পর্যন্ত এই অকশন চলবে। জানি না, আরও কিছু দেখার বাকি আছে কিনা। তবে এমন ইস্যুতে আমাদের এভাবে হেনস্তা হতে হবে ভাবিনি।” আপনাদের দেশে আগের অকশনগুলি একদিনেই শেষ হয়েছে। আপনার পাঁচদিন কেন টানলেন? কবির থামিয়ে দিলেন। বললেন,“ পাঁচদিন টেনেছি বেশি টাকা তুলতে যে কাজের জন্য নেমেছি, সেখানে বেশি টাকা তুলে দেওয়া যাবে। তবে একদিনের জন হলেও এমন হত। ওই যে বললাম, প্রথমদিন দু’ঘন্টার মধ্যে দাম উঠল ২২ লাখে। বিড ঠিকঠাক হলে না হয় কথা ছিল। সেখানেই তো গন্ডগোল। আর কী বলব!” কবিরের কাছ থেকে জানা গেল, এমন কাজে মুশফিকও হতাশ।
[আরও পড়ুন: ‘একদিন ধোনির কাছে সবকিছুর জবাব চাইব’, বলছেন ‘অভিমানী’ মনোজ তিওয়ারি]
কেন এমন হল? এর পিছনে কোনও চক্র কাজ করেছে? মুশফিকের ভাল যাঁরা চান না, তাঁরা এমন কাজ করতে পারেন? এভাবে এগিয়ে সঠিক ক্রেতাকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা? কবিরদের কাছে এর উত্তর নেই। তাঁরা মনে করছেন, এমন হলেও হতে পারে। কিন্ত তাদের কীভাবে ধরা যাবে? শোনা যাচ্ছে, মুশফিকের ব্যাটের নিলামে যাঁরা বিড করেছেন, তাঁদের মধ্যে একজনের নাম নাকি সানি লিওন!
The post মুশফিকুরের ব্যাটের নিলাম ঘিরে চূড়ান্ত নাটক! চল্লিশ মিনিটে দাম উঠল ২২ লক্ষ টাকা appeared first on Sangbad Pratidin.