সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: সম্প্রীতিই ভারতের ঐতিহ্য। তা সত্ত্বেও ইদানীং বারবার নজরে আসে ধর্ম নিয়ে হানাহানির ঘটনা। কিন্তু সকলেই যে শুধুমাত্র ধর্মীয় কারণে মানুষে মানুষে ভেদাভেদে বিশ্বাসী নন তারই প্রমাণ দিলেন নাসির আলি। দুর্গাপুরের (Durgapur) কোকওভেন থানার রবীন্দ্রপল্লির একটি কালীমন্দিরে আলপনা এঁকে সকলকে তাক লাগিয়ে দিলেন তিনি।
মহম্মদ নাসির আলি আদতে মেটিয়াবুরুজের মানুষ। তাঁর বর্তমান ঠিকানা দুর্গাপুর মুক্ত উপসংশোধনাগার। খুনের সাজার যন্ত্রণা লুকোতে এখন হাতের কাজই ভরসা নাসিরের। অনেকটা সময় কেটে গিয়েছে অন্ধকারের অতলে। কিন্তু হার মানেনি নাসির। বেঁচে থাকার অর্থটা আজ তাঁর কাছে হারিয়ে গিয়েছে ঠিকই তবে শিল্পকলাকে বাঁচিয়ে রাখতে চান তিনি। অদম্য চেষ্টার জোরে নাসির আজও সব দুঃখ, কষ্ট ভুলে জীবনের স্বাভাবিক ছন্দের সুতোয় নিজেকে আগলে রেখেছেন। আর হবে নাই বা কেন? একসময় হাতের কাজে খুবই নাম ছিল মেটিয়াবুরুজের নাসির আলির।শনিবার দুর্গাপুরের কোকওভেন থানার অন্তর্গত রবীন্দ্রপল্লির একটি মন্দিরে নাসিরের হাতের স্পর্শে শ্যামামা যেন এক অন্য রূপ পেল। নিষ্ঠাভরে বিগ্রহের উপর, মন্দিরের মেঝে এবং বেদিতে আলপনা দেন তিনি।
[আরও পড়ুন: ৫ বছরের শিশুর যৌন হেনস্তা! নেড়া করে অভিযুক্তকে পুলিশের হাতে তুলে দিলেন প্রতিবেশীরা]
দুর্গাপুরের রবীন্দ্রপল্লির ওই কালী মন্দিরের (Kali Temple) সেবাইত দীপ মুখোপাধ্যায় বলেন, “নাসিরের হাতের কাজে অভিভূত। নাসিরের হাতের স্পর্শে মা আজ অন্য রূপ পেয়েছে। সম্প্রীতির এই বার্তা ছড়িয়ে যাক সমাজের বিভিন্ন প্রান্তে।” দুর্গাপুর মুক্ত সংশোধনাগার থেকেই নাসিরের খোঁজ পান পুজো উদ্যোক্তারা। মেটিয়াবুরুজ থেকে দুর্গাপুর নাসির আলি নিজের অজান্তেই চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছে ধর্ম নিয়ে হানাহানিতে মেতে থাকা একদল মানুষের দিকে। ধর্মীয় ভেদাভেদ যে কোনওভাবেই মনুষ্যত্বের থেকে বড় নয়, সেই বার্তাই দিয়েছেন তিনি।