shono
Advertisement

করোনা আতঙ্কে মহিলার শবদেহ ছুঁল না পরিবার, দাহ করলেন মুসলিম যুবকরা

করোনা আবহেই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির নজির বিহারের গয়া জেলায়।
Posted: 06:58 PM Apr 26, 2021Updated: 06:58 PM Apr 26, 2021

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: করোনার (Corona Pandemic) দ্বিতীয় ঢেউয়ে পুরোপুরি বিধ্বস্ত ভারত (India)। দৈনন্দিন আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়ে গিয়েছে সাড়ে তিন লক্ষের গণ্ডি। পরিস্থিতি যেদিকে এগোচ্ছে আগামিদিনে এই দেশে করোনা আরও ভয়াবহ রূপ ধারণ করতে চলেছে। এই অবস্থায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির নজির গড়লেন বিহারের (Bihar) গয়া (Gaya) জেলার একদল মুসলিম যুবক। করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন, এই ভয়ে এক মহিলার মৃতদেহ ছুঁতে চায়নি পরিবারের লোক। শেষপর্যন্ত রীতি মেনে ওই হিন্দু মহিলার শেষকৃত্য সম্পন্ন করলেন ওই মুসলিম যুবকরাই। ইতিমধ্যে ভাইরাল হয়েছে তাঁদের সেই কাজ। অনেকেই প্রশংসাও করেছেন।

Advertisement

একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, ঘটনাটি ঘটেছে বিহারের গয়া জেলার ইমামগঞ্জ পুলিশ স্টেশনের তেতারিয়া গ্রামে। সম্প্রতি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন প্রভাবতী দেবী নামে ৫৮ বছরের ওই মহিলা। তাঁকে তড়িঘড়ি একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। আরটি-পিসিআর টেস্টও করা হয়। কিন্তু সেই রিপোর্ট নেগেটিভ আসলেও পরবর্তীতে চিকিৎসা চলাকালীনই মৃত্যু হয় ওই মহিলার। করোনাতেই মারা গিয়েছেন তিনি, এই ভয়ে ওই মহিলার স্বামী এবং দুই ছেলে দেহ নিতে রাজি হননি। ফলে দীর্ঘক্ষণ গাড়িতেই পড়েছিল মৃতদেহটি। শেষপর্যন্ত খবর পেয়ে ওই মহিলার শেষকৃত্য সম্পন্ন করতে এগিয়ে আসেন মহম্মদ রফিক, মহম্মদ শারিক, মহম্মদ কালামি, মহম্মদ বারিক, মহম্মদ লাদ্দান-সহ এলাকারই বেশ কয়েকজন মুসলিম যুবকরা।

[আরও পড়ুন: মাস্ক কেনার টাকা নেই, বাবুই পাখির বাসা পরে সরকারি অফিসে হাজির পশুপালক]

এই প্রসঙ্গে সমাজকর্মী মহম্মদ শারিক জানান, “চিকিৎসা চলাকালীনই ওই মহিলার শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হতে থাকে। এরপরই চিকিৎসকরা তাঁর করোনা পরীক্ষা করতে বলেন। রিপোর্ট নেগেটিভ এলেও চিকিৎসা চলাকালীনই মারা যান তিনি। এদিকে, করোনা আতঙ্কেই মৃত্যু হয়েছে প্রভাবতী দেবীর, এই ভয়ে তাঁর স্বামী বা দুই ছেলে কেউই মৃতদেহ নিতে রাজি হননি। ফলে দুপুর ১২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত গাড়িতেই পড়েছিল তাঁর মৃতদেহ। শেষপর্যন্ত আমরা খবর পেয়ে সেখানে যাই, পরিবারের লোকজনকে শেষকৃত্য সম্পন্ন করতে বলি। কিন্তু তবুও তাঁরা দূরেই দাঁড়িয়েছিলেন। শেষপর্যন্ত আমরা কয়েকজন গাড়ি থেকে মৃতদেহটি নামাই। এরপর বাঁশ দিয়ে মড়া নিয়ে যাওয়ার খাট তৈরি করে শবদেহটি নিয়ে শ্মশানের উদ্দেশে রওনা হই। তখন অবশ্য পরিবারের অন্যরা নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে আমাদের সঙ্গ দেন।” এই প্রসঙ্গে মৃতের এক ছেলে বলেন, “এলাকার মুসলিম যুবকরা আমার মায়ের শেষকৃত্য সম্পন্ন করতে সাহায্য করেন। ওঁরা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনন্য উদাহরণ গড়েছে। আমাদের পরিবার ওঁদের প্রত্যেকের কাছে ঋণী।” এদিকে, এই ঘটনা সামনে আসার পর অনেকেই ওই মুসলিম যুবকদের কাজের প্রশংসা করেছেন।

[আরও পড়ুন: জন্মদিনের প্রচুর উপহার পেতে একসঙ্গে ৩৫ জন মহিলার সঙ্গে ‘প্রেম’ এই ব্যক্তির]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement