সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: চারপাশ দিয়ে সমুদ্র দিয়ে ঘেরা শ্রীলঙ্কা (Sri Lanka)। এই কি ছিল রাবণের সোনার লঙ্কা? গভীর নীল এ সমুদ্রেই কি সেতু তৈরি করেছিল নল ও নীল? যা পেরিয়ে লঙ্কায় পৌঁছেছিলেন রামচন্দ্র-লক্ষ্মণ। রাবণ বধ করে সীতাকে উদ্ধার করেছিলেন রঘুপতি। রামায়ণ নিয়ে এমন অনেক প্রশ্নের উত্তর যাঁরা খোঁজেন, তাঁদের যাওয়ার আদর্শ জায়গা শ্রীলঙ্কা। বলা হয়, এখানে মহাকাব্যের নানা চিহ্ন রয়েছে। কেমন?
যেমন সীতা আম্মান মন্দির (Seetha Amman Temple)। সীতা ইলিয়া নামের ছোট্ট গ্রামে এই মন্দির রয়েছে। রামচন্দ্র, সীতা, লক্ষ্মণের পাশাপাশি হনুমানের মূ্র্তি রয়েছে এখানে। মন্দিরের পাশ দিয়ে একটি নদী বয়ে গিয়েছে। জনশ্রুতি, এখানে সীতা স্নান করতেন। পাহাড়ে নাকি হনুমানের পদচিহ্ন রয়েছে।
সীতা কোটুয়া (Sitha Kotuwa) নামেও একটি জায়গা রয়েছে। বলা হয়, এটি নাকি রাবণের প্রধান রানি মন্দোদরির প্রাসাদে অবস্থিত। সুন্দর নদী আর জলপ্রপাত দিয়ে ঘেরা এই জায়গাতেই নাকি সীতাকে বন্দি করে রেখেছিল রাবণ। অনেকে একে সীতা ফোর্টও বলেন।
কোথেমালে বলে একটি জায়গায় ‘সীতা গোলি’ দেখা যায়। শোনা যায়, রাবণ সীতাকে অপহরণ করে নিয়ে আসার সময় সীতা গোলি (সম্ভবত চাল দিয়ে তৈরি লাড্ডু) খাবার হিসেবে দিয়েছিল। জানকী তা না খেয়ে ফেলতে ফেলতে গিয়েছিলেন যাতে রামচন্দ্র তাঁর সন্ধান পান।
[আরও পড়ুন: এশিয়ার বৃহত্তম! এবার ওয়ার্ল্ড বুক অফ রেকর্ডসের স্বীকৃতি কাশ্মীরের টিউলিপ গার্ডেনকে]
মুনেশ্বরম মন্দির (Munneswaram Temple) শ্রীলঙ্কায় খুবই জনপ্রিয় স্থান। কথিত আছে, রাবণকে বধ করার পর রামচন্দ্র এই মন্দিরেই মহাদেবের আরাধনা করেছিলেন। যাতে তিনি ব্রহ্মহত্যার মতো মহাপাপ থেকে মুক্তি পান। শ্রীলঙ্কার চিল্লাও থেকে ৬ কিলোমিটার উত্তরে রয়েছে মানাভারী মন্দির (Manavari Temple)। শিবের নির্দেশমতো নাকি এই মন্দিরে লিঙ্গ স্থাপিত করেছিলেন রামচন্দ্র।
দোলুকান্ড সঞ্জীবনী পর্বতমালা (Dolukanda Sanjeewanee Mountain)। লক্ষ্মণকে বাঁচাতে হনুমান যখন গন্ধমাদন পর্বত নিয়ে এসেছিলেন তার পাঁচটি টুকরো লঙ্কার পাঁচটি জায়গায় পড়ে। যার মধ্যে অন্যতম শ্রীলঙ্কার কুরুনেগালা জেলার হিরিপিতিয়া গ্রামের এই দোলুকান্ড পর্বত। এখানকার উদ্ভিদের সঙ্গে নাকি ভারতীয় উদ্ভিদের মিল রয়েছে। আবার এতে অনেক ঔষধি গুণও রয়েছে বলে বিশ্বাস স্থানীয়দের। বাকি চারটি জায়গা রুমাস্সালা, রিতিদালা, থাল্লাড়ি, কাচ্চাটিভুতে আছে বলে মনে করা হয়।
কথিত আছে, বর্তমানে শ্রীলঙ্কার সিগিরিয়া স্থানে রাবণের একটি প্রাসাদ ছিল। কুবের নাকি এই প্রাসাদটি তৈরি করেছিলেন। যাতে দুর্গ, সোপান, বাগান, পুকুর, খাল এমনকী ঝর্ণাও রয়েছে। এখানে নাকি লিফটের মতো ব্যবস্থাও ছিল।
দুনুভিলা লেক (Dunuvila) নামের একটি জায়গা শ্রীলঙ্কায় রয়েছে। এখানেই নাকি রাবণকে ব্রহ্মাস্ত্র দিয়ে বধ করেছিলেন রামচন্দ্র। ইয়ানগালায় (Yahangala) বিশাল এক পাথর আছে। মনে করা হয়, এই জায়গাতেই রাবণের দেহ রাখা ছিল। অনেক দূর থেকে এই পাথর দেখা যায়। রাবণ জলপ্রপাতও রয়েছে। এছাড়াও রয়েছে দিভুরুম্পোলা (Divurumpola) এই জায়গাতেই নাকি দেবী সীতা অগ্নিপরীক্ষা দিয়েছিলেন।