সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকেই মায়ানমারে (Myanmar) পরিস্থিতি ক্রমশ জটিল হয়ে উঠছে। গণতন্ত্রকামীদের প্রবল বিক্ষোভের পর এবার বার্মিজ সেনার বিরুদ্ধে মোর্চা খুলেছে বেশ কয়েকটি বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র সংগঠন। ফলে দেশটিতে গৃহযুদ্ধের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
[আরও পড়ুন: করোনা যুদ্ধে ভারতের পাশে জাপান, অক্সিজেনের ঘাটতি মেটাতে মদত টোকিওর]
জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার মায়ানমারের বায়ুসেনা ঘাঁটিতে রকেট হামলা চালানো হয়। সেনা সূত্রে খবর, মাগওয়ে শহরের বায়ুসেনা ঘাঁটিতে আছড়ে পড়ে চারটি রকেট। তারপর মধ্য মায়ানমারে মেইকটিলা বায়ুসেনা ঘাঁটিতেও আঘাত হানে পাঁচটি রকেট। যদিও ওই হামলায় কারও হতাহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। এই হামলার দায় এখনও কেউ স্বীকার করেনি বলে জানিয়েছে টাটমাদাও বা বার্মিজ সেনাবাহিনী। এই ঘটনার নেপথ্যে বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন ‘কাচিন ইন্ডিপেনডেন্স আর্মি’র (কেআইএ) হাত রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। বলে রাখা ভাল, দীর্ঘদিন ধরে চিনের সীমান্তবর্তী কাচিন প্রদেশের স্বাধীনতার দাবি জানিয়ে লড়াই চালাচ্ছে কেআইএ। এপ্রিলের ১১ তারিখ টারপেইন ব্রিজের কাছে দুটি পুলিশ আউটপোস্ট ও সেনঘাঁটিতে হামলা চালায় বিদ্রোহী সংগঠনটি। তারপর থেকেই সেখানে বিমান হানা শুরু করেছে বার্মিজ সেনা। ফলে ঘর ছাড়া প্রায় ৫ হাজার মানুষ। একইভাবে, থাইল্যান্ড সীমান্তে মায়ানমারের অন্যতম সংখ্যালঘু কারেন সম্প্রদায়ের জঙ্গিগোষ্ঠী ‘কারেন ন্যাশনাল ইউনিয়ন’-এর বিরুদ্ধে বিমান হামলা চালাচ্ছে দেশটির সেনাবাহিনী। ফলে ঘর ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছে প্রায় ২৫ হাজার মানুষ। সব মিলিয়ে মায়ানমারে তৈরি হয়েছে গৃহযুদ্ধের পরিস্থিতি।
উল্লেখ্য, গত ১ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ এনে গণতান্ত্রিক সরকারকে সরিয়ে মায়ানমারের রাশ নিজেদের হাতে নেয় সেনাবাহিনী। বন্দি করা হয় কাউন্সিলর আং সান সু কি-সহ নির্বাচিত সরকারের শীর্ষ কর্তাদের। তারপর থেকেই সে দেশে গণতন্ত্রের দাবিতে চলছে তুমুল বিক্ষোভ। পালটা অভিযান শুরু করেছে সেনাবাহিনী। এপর্যন্ত ফৌজের গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় ৭০০জন গণতন্ত্রকামী। এদিকে মায়ানমারে গৃহযুদ্ধের সম্ভাবনা ক্রমেই বাড়ছে।বিশেষ করে গত শনিবারের পর থেকেই। ওই দিন শতাধিক আন্দোলনকারীকে হত্যা করেছিল জুন্টা। তারপর থেকেই মায়ানমারের প্রত্যন্ত এলাকার গেরিলা বাহিনীগুলি সেনার বিরুদ্ধে গোপন প্রতিরোধ শুরু করেছে। ২০ বা তার বেশি সশস্ত্র গেরিলা বাহিনী গর্জে উঠেছে জুন্টার আচরণের বিরুদ্ধে।