সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সেনাশাসকরা ক্ষমতা ছিনিয়ে নেওয়ার পর প্রথমবারের জন্য স্কুল চালু হতে চলেছে মায়ানমারে (Myanmar)। মঙ্গলবার অর্থাৎ আজ থেকেই পড়ুয়া ও শিক্ষদের সময়মতো স্কুলে হাজির হওয়ার কড়া নির্দেশ দিয়েছে জুন্টা। কিন্তু সামরিক সরকারের নির্দেশ অমান্য করে হাজিরা এড়িয়ে গেলেন অধিকাংশ শিক্ষক ও পড়ুয়ারা।
[আরও পড়ুন: মর্কেল-সহ ইউরোপের নেতাদের উপর নজরদারি! কাঠগড়ায় আমেরিকা-ডেনমার্ক]
শিক্ষকদের দাবি, প্রোপাগান্ডা ছড়াতে ও পড়ুয়াদের মগজধোলাই করার কাজ দেওয়া হয়েছে তাঁদের। শিক্ষার নামে ছাত্রদের সেনার বশংবদ করে গড়ে তোলার কাজ তাঁরা করতে পারবেন না। তাই প্রতিবাদ জানাতে স্কুলে আসবেন না তাঁরা। সংবাদ সংস্থা এএফপি-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এক শিক্ষক বলেন, “আমি নির্যাতন বা গ্রেপ্তারিকে ভয় পাই না। কিন্তু আমি এমন একজন শিক্ষক হতে ভয় পাই যে পড়ুয়াদের মিথ্যা পাঠ দেবে।” প্রসঙ্গত, সেনাশাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানতে গেলে ২৮ বছরের ওই শিক্ষককে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়। তবে তিনি একা নন। জুন্টার বিরোধিতা করে চাকরি খুইয়েছেন কয়েক হাজার শিক্ষাকর্মী। কিন্তু এতেও প্রতিবাদ থামছে না। পড়ুয়া ও শিক্ষক উভয়পক্ষই সাফ জানিয়েছে তাঁরা স্কুলে আসবে না। বলে রাখা ভাল, করোনা মহামারীর জেরে মায়ানমারে প্রায় ১ বছর থেকে স্কুল বন্ধ ছিল। এছাড়া, গণতন্ত্র ফেরানোর আন্দোলনে প্রথম সারিতে ছিলেন শিক্ষক ও পড়ুয়ারা। ইতিমধ্যে সেনার গুলিতে মৃত্যু হয়েছে বেশ কয়েকজন শিক্ষক ও পড়ুয়ার বলে জানিয়েছে ‘সেভ দ্য চিলড্রেন’ নামের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।
উল্লেখ্য, গত ১ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ এনে গণতান্ত্রিক সরকারকে সরিয়ে মায়ানমারের রাশ নিজেদের হাতে নেয় সেনাবাহিনী। বন্দি করা হয় কাউন্সিলর আং সান সু কি-সহ নির্বাচিত সরকারের শীর্ষ কর্তাদের। তারপর থেকেই সে দেশে গণতন্ত্রের দাবিতে চলছে তুমুল বিক্ষোভ। পালটা অভিযান শুরু করেছে সেনাবাহিনী। এপর্যন্ত ফৌজের গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় ৭০০জন গণতন্ত্রকামী। এদিকে মায়ানমারে গৃহযুদ্ধের সম্ভাবনা ক্রমেই বাড়ছে।বিশেষ করে গত শনিবারের পর থেকেই। ওই দিন শতাধিক আন্দোলনকারীকে হত্যা করেছিল জুন্টা। তারপর থেকেই মায়ানমারের প্রত্যন্ত এলাকার গেরিলা বাহিনীগুলি সেনার বিরুদ্ধে গোপন প্রতিরোধ শুরু করেছে। ২০ বা তার বেশি সশস্ত্র গেরিলা বাহিনী গর্জে উঠেছে জুন্টার আচরণের বিরুদ্ধে।