সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ডহারবার: জীবন যেন সমুদ্রের জলের মতো। প্রতিবার সৈকতের টানে তীরে ফিরে আসে। একরাশ ভালবাসা নিয়ে আছড়ে পড়ে বালির উপর। এমনটাই ঘটেছে নদিয়ার জ্যোতি সরকারের (মণ্ডল) ক্ষেত্রে। ৩৬ বছর পর বৃদ্ধাকে খুঁজে পেয়েছেন তাঁর পরিবারের সদস্যরা।
ঠিকানা ভুলে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াতেন জোতিদেবী। অসুস্থ হয়ে ডায়মন্ড হারবারের (Diamond Harbour) জাতীয় সড়কের পাশে পড়েছিলেন বৃদ্ধা। কাকদ্বীপের এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কয়েকজন সদস্য তাঁকে দেখতে পান। সেখান থেকে তুলে এনে সপ্তাহখানেক আগে ডায়মন্ড হারবার হাসপাতালে ভরতি করা হয়। শুরু হয় চিকিৎসা।
[আরও পড়ুন: Corornavirus: রাজ্যে একদিনে করোনা আক্রান্ত ৭১৭, কমল দৈনিক মৃত্যু]
বিষয়টি জানতে পারেন হাসপাতালের অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপার সুপ্রীম সাহা। তিনিই হ্যাম রেডিওর (Ham Radio) সঙ্গে যোগাযোগ করেন। বৃদ্ধার সঙ্গে কথা বলে তাঁর নাম ও ঠিকানা জানার চেষ্টা করেন ওয়েস্টবেঙ্গল রেডিও ক্লাবের সম্পাদক অম্বরীশ নাগ বিশ্বাস ও তাঁর সঙ্গীরা। প্রথমে নিজের নাম ও ঠিকানা ভুল বলেছিলেন জ্যোতিদেবী। পরে সত্তোরোর্দ্ধ বৃদ্ধাকে আবার জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তখনই তাঁর আসল নাম জানা সম্ভব হয়। জানা যায়, দীয়ার চাকদার বল্লভপুরে বাড়ি জ্যোতি সরকারের (মণ্ডল)।
জ্যোতি সরকারের দেওয়া ঠিকানা অনুযায়ী নদিয়ায় যোগাযোগ করা হয়। খবর পাওয়া মাত্রই ছুটে আসেন বৃদ্ধার ছেলে মিঠুন সরকার ও ভাই কুসুম মণ্ডল চলে আসেন। তাঁরা এসে জ্যোতিদেবীকে চিনতে পারেন। জ্যোতি দেবীও ছেলে ও ভাইকে চিনতে পারেন। মাকে জড়িয়ে ধরেন মিঠুন সরকার। আনন্দে আপ্লুত হয়ে ওঠেন কুসুম মণ্ডল। তাঁরাই জানান, ৩৬ বছর আগে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছলেন জ্যোতি সরকার (মণ্ডল)। সেই সময় থেকেই তাঁর খোঁজ চলছে। থানায় অভিযোগও জানানো হয়েছিল। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। জ্যোতিদেবীকে খুঁজে পাওয়ার আশা প্রায় ছেড়েই দিয়েছিলেন তাঁর বাড়ির লোকজন। এভাবে জ্যোতিদেবীকে ফিরে পাবেন কল্পনাও করতে পারেননি মিঠুন সরকার। বৃহস্পতিবারই তিনি ও কুসুম মণ্ডল বৃদ্ধাকে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।