নন্দিতা রায়, নয়াদিল্লি: পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির প্রচারের কামান সামলাবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিই। ভোট প্রচারের ক্ষেত্রে তিনিই যে প্রধান ‘মুখ’ সেকথা বহুদিন আগে ঠিক করে রেখেছে বিজেপি। এবার শুধুমাত্র মোদির কর্মসূচি চূড়ান্ত করার পালা।
বিজেপি (BJP) সূত্রে খবর, বাংলায় এক ডজনেরও বেশি নির্বাচনী জনসভা করবেন প্রধানমন্ত্রী। তবে, সেই সমস্ত জনসভা হবে রাজ্যে ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা হওয়ার পরেই। ভোটের দিন ঘোষণার পরে জনসভা শুরু হলেও বাংলায় প্রধানমন্ত্রীর প্রচার অবশ্য তার অনেক আগেই শুরু হয়ে যাবে। আগামী বছরের জানুয়ারি মাস থেকেই প্রধানমন্ত্রীকে দিয়ে বাংলায় প্রচারের কাজ শুরু করে দেবে বিজেপি। দলীয় কর্মসূচি থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্প উদ্বোধনের মতো অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে মোদি কখনও ভারচুয়াল মাধ্যমে, কখনও বা সশরীরে হাজির থাকবেন বাংলায়। এই খবর পাওয়ার পরেই প্রধানমন্ত্রী কবে থেকে বাংলায় আসবেন রাজ্যে দলের নিচুতলার কর্মী-সদস্যদের মধ্যে সেই প্রশ্ন এখন থেকেই ঘুরপাক খেতে শুরু করে দিয়েছে। তাতে অবশ্য তড়িঘড়ি এখনই প্রধানমন্ত্রীকে দিয়ে প্রচার শুরু করা হবে না বলে ঠিক করেছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।
[আরও পড়ুন: ভারতের ম্যাপ থেকে বাদ কাশ্মীর! বিদেশমন্ত্রকের চাপে বিতর্কিত নোট প্রত্যাহার সৌদির]
রাজ্যে নির্বাচনী প্রচার যে সময় তুঙ্গে থাকবে তখনই বিজেপির পালে হাওয়া তুলতে মাঠে নামবেন নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi) । তিনি নিজে যেমন প্রচারের কামান সামলাবেন তেমনই তাঁর ‘মুখ’কে সামনে রেখে কেন্দ্র সরকারের সাফল্যের খতিয়ান তুলে ধরে ভোট প্রচার করবে দল। মোদি তো থাকবেনই সঙ্গে দলের তারকা প্রচারকদেরও বাংলায় ভোট প্রচারে নামানো হবে বলে ঠিক করেছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। দলের ‘ফায়ার ব্র্যান্ড’ নেতা ও উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে বাংলার নির্বাচনে প্রচারের কাজে বিশেষভাবে ব্যবহার করা হবে। মোদির পরেই তিনিই সবথেকে বেশি সংখ্যক জনসভা করবেন। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানির মতো তুখোড় বক্তাদের বেশি করে ব্যবহার করা হবে। একদিকে যেমন তুখোড় রাজনৈতিক বক্তাদের বাংলার ময়দানে নামানো হবে, অন্যদিকে আবার হেমা মালিনী, জয়াপ্রদা, রবি কিষেণ, মনোজ তিওয়ারির মতো ফিল্মি দুনিয়া থেকে রাজনীতির ময়দানে আসা তারকাদেরও বাংলায় ভোট প্রচারে ব্যবহার করা হবে।
ঠিক হয়েছে যে একঝাঁক কেন্দ্রীয় মন্ত্রীও রাজ্যে জনসভা করবেন। তাঁরা অবশ্য জানুয়ারি মাস থেকেই বাংলায় আসা-যাওয়া শুরু করে দেবেন। বেশ কয়েকজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা হলেই বাংলায় ঘাঁটি গাড়বেন এমন পরিকল্পনাও রয়েছে বিজেপির। বাংলা নির্বাচনের প্রচারকে অন্যমাত্রায় নিয়ে যেতে চাইছেন বাংলার ভোট প্রচারের রণকৌশল রচনার অন্যতম কারিগর শাহ। তবে, এই সমস্ত পরিকল্পনার অনেকটাই নির্ভর করছে দেশের করোনা পরিস্থিতির উপরে। সেকথা মাথায় রেখে প্রচারের ‘ব্যাক আপ প্ল্যান’ আগেই করে রেখেছেন শাহ। দলের আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্যকে বাংলায় দলের সহ-পর্যবেক্ষক হিসেবে দিন কয়েক আগেই নিয়োগ করা হয়েছে। এই প্রথমবার মালব্যকে কোনও রাজ্যের সাংগঠনিক দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। করোনার জেরে সশরীরে প্রচারের ক্ষেত্রে যে ঘাটতি থাকবে তা মালব্য ফেসবুক, টুইটার ও হোয়াটসঅ্যাপের মতো সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে প্রচার করে যে পুষিয়ে দেবেন, সেই বিষয়টি নিশ্চিতভাবে জেনেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত আরেক অমিতকে বাংলায় পাঠিয়েছেন।