সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘হাওয়া বয় শনশন’ – প্রেমেন্দ্র মিত্রের কবিতায় হাওয়ার শব্দ ঠিক কেমন, তার একটা আভাস পাওয়া যায়। তবে সেই হাওয়ার কি একটাই শব্দ গোটা জগৎজুড়ে? তা তো নয়। একেক জায়গার হাওয়ার আওয়াজ তো আলাদা। অন্তত নাসার মঙ্গলযান তেমনটাই ইঙ্গিত দিচ্ছে। মঙ্গলের (Mars) আকাশে হাওয়া বয় খানিকটা – শোঁ শোঁ। ছবি, ভিডিও প্রকাশ্যে এসেছিল আগেই। এবার মঙ্গল থেকে শব্দতরঙ্গ প্রেরণ করল নাসার বিশেষ যান। লাল গ্রহের মাটিতে ঘুরে বেড়ানো রোভার পারসিভিয়ারেন্সের (Perseverance) থেকে প্রায় ৮০ মিটার দূরত্বে চক্কর কাটছিল হেলিকপ্টার। তার ডানার শব্দের সঙ্গে মঙ্গলের বায়ুপ্রবাহের শব্দ মিশে কেমন শোনাচ্ছে, সেটাই মাইক্রোফোনে রেকর্ড করেছে পারসিভিয়ারেন্স। তা হাতে পেয়ে নাসার তরফে ভিডিও প্রকাশ করে অডিও শোনানো হয়েছে। আওয়াজ অনেকটা নিচু সুরে বাঁধা তীক্ষ্ম। অনেকটা মশা কিংবা কোনও পতঙ্গ ওড়ার মতো শব্দ।
গত ফেব্রুয়ারিতে মঙ্গলের মাটিতে পা রাখা মাত্র সেখানকার অনেক তথ্যই পাঠাচ্ছে নাসার মঙ্গলযান পারসিভিয়ারেন্স। কখনও লাল গ্রহের নানা রঙের মাটি কিংবা আকাশের ছবি, অথবা ধুলোঝড়ের ভিডিও।কখনও আবার মঙ্গলে প্রাণধারণের ইঙ্গিতবাহী কোনও নমুনা পাঠিয়ে তা আরও ভালভাবে পরীক্ষার রাস্তা খুলে দিচ্ছে নাসার এই মঙ্গলযান। তা থেকে প্রতিবেশী গ্রহটিকে আরও ভালভাবে চেনা যাচ্ছে, জানা যাচ্ছে তার সম্পর্কে।
[আরও পডুন: ‘কন্যাশ্রী’র বিশ্বজয়! গুগল আর্টস অ্যান্ড কালচারে স্থান পেল মেমারির ছাত্রীর তৈরি মাস্ক]
এবার সে পাঠাল শব্দতরঙ্গ। নাসা সূত্রে খবর, গত ৩০ এপ্রিল হেলিকপ্টারের ওড়ার শব্দ রেকর্ড করে পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে মঙ্গলের বায়ুপ্রবাহের কেন আওয়াজ, তার বুঝতে কপ্টারের ডানার শব্দতরঙ্গ পৃথক করেন বিজ্ঞানীরা। এরপর বায়ুর শব্দতরঙ্গকে প্রবর্ধিত করে ভাল করে শোনেন তাঁরা। শনিবার হেলিকপ্টারটি মঙ্গলের মাটি থেকে মাত্র ৩৩ ফুট উপর দিয়ে উড়ে গিয়েছে। তাতে যে শব্দ পাওয়া গিয়েছে, তাও নাসার কন্ট্রোল রুমে পাঠিয়েছে পারসিভিয়ারেন্স।
[আরও পডুন: ইঁদুরের আকারের অতিকায় মথ! ছবি দেখে বিস্ময়ের ঘোর কাটছে না নেটিজেনদের]
বলা হচ্ছে, আওয়াজের তীক্ষ্মতা একটু বেশি, কিন্তু স্বরের মাত্রা নিচু তারে বাঁধা। অনেক দূর থেকে মশা কিংবা অন্য কোনও পতঙ্গ গুনগুনিয়ে এলে যেমন শব্দ হয়, ঠিক তেমনই মঙ্গলের হাওয়ার শব্দ। সোশ্যাল মিডিয়ায় নাসার প্রকাশ করা অডিওটি বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে নেটদুনিয়ায়। আসলে, পঞ্চেন্দ্রিয় দিযে জগৎকে অনুভব করার মধ্যে শব্দের তো একটা বড় ভূমিকা। তাই রকমারি শব্দতরঙ্গ শুনতে মন চায় আমাদের। নাসার কপ্টার সেই স্বপ্ন পূরণ করেছে।