সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ নিয়ে বিতর্কের অন্ত নেই। একাধিক রাজ্যে নিষেধাজ্ঞা, সমালোচনার মুখোমুখি হয়েও রমরমিয়ে ব্যবসা করেছে। এবার সেই সিনেমা নিয়েই বিস্ফোরক নাসিরুদ্দিন শাহ। সপাট জানালেন, “‘দ্য কেরালা স্টোরি’ দেখব না। ইচ্ছেও নেই। অনেক কিছু পড়েছি সিনেমা নিয়ে। সেটাই যথেষ্ট।”
প্রসঙ্গত, ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়ানোর অভিযোগে একাধিকবার বলিউড সিনেমাকে কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হয়েছে। প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে ছবির গল্পও। গতবছর ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’ নিয়ে কম বিতর্ক হয়নি। সেই উদাহরণের তালিকায় নয়া সংযোজন ‘দ্য কেরালা স্টোরি’। বিতর্কের পালে ভর করে বক্স অফিসে রমরমিয়ে ব্যবসা করলেও প্রচারমূলক সিনেমার তকমা কিন্তু এই দুটো সিনেমার ক্ষেত্রেই জুটেছে।
[আরও পড়ুন: অভিনয়ের টোপ দিয়ে ২০ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ! গ্রেপ্তার প্রসেনজিৎ-অঙ্কুশের পরিচালক]
উপরন্তু ধর্মকে হাতিয়ার করে যেভাবে দেশের রাজনীতি প্রভাবিত হচ্ছে কিংবা ভোটবাক্স ভরা হচ্ছে, সেই বিষয়েও এযাবৎকাল বহু বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বরা মুখ খুলেছেন। আর ধর্মীয় বিদ্বেষ যখন সিনেমার গল্প হয়ে ধরা দেয়, তখন আমজনতার মজ্জায় হিংসে ঢোকানো যে খুব একটা কঠিন হয় না, সেই কৌশল প্র্যাকটিস এদেশে অনেক আগে থেকেই চালু! এবার সেই প্রেক্ষিতেই বিস্ফোরক কথা নাসিরুদ্দিন শাহের মুখে।
তাঁর মন্তব্য, “বর্তমানে সিনেমাগুলোতে যা দেখানো হচ্ছে, তা পুরোপুরি ‘ইসলামোফোবিয়া’। অবশ্যই এটা চিন্তার কারণ। কেরামতির সঙ্গে এহেন বিদ্বেষমূলক ভাবনা আজকাল জোর করে ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে মানুষের মনে। মুসলিম বিরোধিতা করাটা যেন হালফিলের ফ্যাশন। ‘ভীড়’, ‘আফওয়া’, ‘ফরাজ’-এর মতো সিনেমাগুলো বক্স অফিসে চলছে না। তবে ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ দেখতে যাচ্ছেন দর্শকরা। আমি দেখিওনি এই ছবি। ইচ্ছেও নেই। অনেক কথা পড়ে ফেলেছি ইতিমধ্যেই এই সিনেমা নিয়ে।” এখানেই অবশ্য থামেননি তিনি।
[আরও পড়ুন: বাসের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ! ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে ‘পুষ্পা’ ২-এর কলাকুশলীরা]
নির্দিষ্ট কোনও রাজনৈতিক দলের বন্দনার জন্য সিনেমাকে যেভাবে হাতিয়ার করা হচ্ছে, তার বিরুদ্ধেও সুর চড়ালেন নাসিরুদ্দিন শাহ। কোনওরকম রেয়াত না করেই মোদি-সরকারকে বিঁধে বলিউডের প্রবীণ অভিনেতার মন্তব্য, “এই যে ট্রেন্ডটা চলছে, তা নিঃসন্দেহে মারাত্মক। হিটলার জমানায় নাৎজি জার্মানের যে পরিস্থিতি হয়েছিল, আমরা সেই পথেই এগোচ্ছি। পরিচালকদের জোর করে হিটলার-বন্দনার জন্য সিনেমাকে হাতিয়ার করা হচ্ছিল সেইসময়ে। যা সহ্য করতে না পেরে তখন বহু খ্যাতনামা পরিচালকরা জার্মানি ছেড়ে হলিউডে চলে যান। সেখানে ছবি করেন। এবার এদেশেও সেই একই বিষয় ঘটছে। বলাই বাহুল্য, এপ্রসঙ্গে তিনি যে বিজেপি সরকারকে খোঁচা দিয়েছেন। আশা করি খুব তাড়াতাড়ি এই পরিস্থিতির অবসান হবে। কতদিন আর মানুষ ঘৃণা ছড়িয়ে যাবে?”