কৃষ্ণকুমার দাস: একসময় জোয়ার-ভাঁটা খেলত, নৌকা চলত কলকাতার আদিগঙ্গা দিয়ে। আবার সেই পরিস্থিতি ও পরিবেশকে ফিরিয়ে দিতে আদিগঙ্গাকে পুনরুদ্ধার করতে রাজ্য সরকার, কলকাতা পুরসভা এবং দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদকে নির্দেশ দিল জাতীয় পরিবেশ আদালত (National Green Tribunal)।
সোমবার আদালতের বিচারক শুধু পুনরুদ্ধার নয়, আদিগঙ্গার (Adi Ganga) দখলদারকে উচ্ছেদ করে পুনর্বাসন ও পুরনো মানচিত্র ধরে অ্যাকশন প্ল্যান তৈরির জন্যও নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এক মাসের মধ্যে আদিগঙ্গার পলি উত্তোলন ও কঠিন বর্জ্য অপসারণ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদকে সঙ্গে নিয়ে এক মাসের মধ্যে ‘অ্যাকশন প্ল্যান’ (Action Plan) তৈরি করতে হবে কলকাতা পুরসভাকে। ‘নমামী গঙ্গা’ প্রকল্পের অধীনে আদিগঙ্গাকে দূষণমুক্ত করতে কেন্দ্রকেও দ্রুত অর্থ বরাদ্দ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে জাতীয় পরিবেশ আদালতের তরফে।
[আরও পড়ুন: জঙ্গল কাটা রোধে কড়া আইনের পক্ষে সওয়াল, ব্রিটিশ সরকারের কাছে আরজি জনপ্রিয় খাদ্য সংস্থার]
এই নির্দেশ নিয়ে আদালত বান্ধব ও পরিবেশবিদ সুভাষ দত্ত জানিয়েছেন, “বাংলার মানুষের হৃদয়ে বিশেষ গুরুত্ব পাওয়া কলকাতার আদিগঙ্গা পুনরুদ্ধারে রাজ্য সরকার ও পুরসভাকে বিশেষ যত্নবান হতে হবে। সাধারণ মানুষও এগিয়ে আসবেন বলে আমার বিশ্বাস।” ইতিমধ্যে আদিগঙ্গাকে দূষণ মুক্ত করে পরিবেশ পুনরুদ্ধারে পুরসভা ৪৫৩ কোটি টাকার একটি প্রকল্প তৈরি করেছে। কিন্তু ‘নমামী গঙ্গা’ প্রকল্পে সেই অর্থ এখনও কেন্দ্রীয় সরকার দেয়নি বলে অভিযোগ।
আদিগঙ্গার পরিবেশ ও পরিস্থিতি ফেরাতে সোমবার আদালত রাজ্য সরকারের পরিবেশ দপ্তর, সেচ ও জলসম্পদ দপ্তর এবং পুরসভাকে একগুচ্ছ নির্দেশ এবং পরামর্শ দিয়েছে। গড়িয়ায় আদিগঙ্গার জলদূষণমুক্ত করতে আগামী ৩১ ডিসেম্বর মধ্যে সুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট বসাতে হবে কলকাতা পুরসভাকে। আদিগঙ্গায় বেআইনি দখলদারি করে খাটাল, বসতি ও বেআইনি নির্মাণ হয়েছে সেগুলিকে দ্রুত উচ্ছেদ করে পুনর্বাসন দিতে হবে। পরিবেশ বিধি মেনে দ্রুত সরাতে হবে আদিগঙ্গার ভিতর জমা পলি ও কঠিন বর্জ্য। ব্যবস্থাটি করতে হবে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের নজরদারিতে।
[আরও পড়ুন: করোনার কোপে বন্ধ অর্থসাহায্য, বিলুপ্তপ্রায় প্রাণীদের নিয়ে চিন্তায় অধিকাংশ চিড়িয়াখানা]
আদিগঙ্গার উপর তৈরি মেট্রো স্টেশনের নিচে কঠিন বর্জ্য সাফাই করতে হবে। বিষয়টি নজরদারি করতে এদিন একটি উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন কমিটি তৈরি করে দিয়েছে পরিবেশ আদালত। কমিটির সদস্য হচ্ছেন মুখ্যসচিব, পরিবেশ সচিব, সেচ ও জলসম্পদ সচিব, দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের সচিব, পুরসভার কমিশনার, টালিনালা প্রকল্পের ডিরেক্টর, মেট্রো রেলের জিএম। প্রকল্পটির নোডাল এজেন্সি হবে কলকাতা পুরসভা।