সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গত কয়েক মাস ধরে লোহিত সাগরে একের পর এক পণ্যবাহী জাহাজে হামলা চালাচ্ছে ইয়েমেনের হাউথিরা। ইরানের মদতপুষ্ট এই সশস্ত্র সংগঠনটি আক্রমণ শানাচ্ছে এডেন উপসাগরেও। পাশাপাশি এই অঞ্চলগুলোতে বেড়েছে জলদস্যুদের দৌরাত্ম্য। এর মাঝেই ইজরায়েলের বুকে ইরানের হামলার পর মধ্যপ্রাচ্যে ফের ঘনাচ্ছে যুদ্ধের মেঘ। এই আবহে লোহিত সাগর ও এডেন উপসাগর নিয়ে আশঙ্কার কথা শোনালেন নৌসেনা প্রধান আর হরিকুমার। দুই অঞ্চলের পরিস্থিতি খুবই উদ্বেগজনক বলেই জানালেন তিনি।
রবিবার নৌসেনা প্রধান যোগ দিয়েছিলেন গোয়ায় আইএনএস হংসের ঘাঁটিতে। সেখানে লোহিত সাগর ও এডেন উপসাগরের বর্তমান পরিস্থিতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "যদি আপনারা এই দুই অঞ্চলের পরিস্থিতি জানতে চান তাহলে আমি বলব, তা এখন বেশ উদ্বেগজনক। আমরা বহু বাণিজ্যিক জাহাজে ড্রোন হামলা দেখেছি। এখন জলদস্যুরাও ফের বাড়বাড়ন্ত শুরু করেছে। এখান থেকে একটা জিনিসই বোঝা যায়, যখন একটা অঞ্চলে কোনও সমস্যা হয় তখন কিছু মানুষ অপেক্ষা করে পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে সমস্যা আরও বাড়িয়ে তোলার। এবার তার মাধ্যমে লাভবান হওয়ার।"
ইরান ও ইজরায়েলের মধ্যে উত্তপ্ত পরিস্থিতির মাঝে ওই অঞ্চলগুলোতে ভারতীয় নৌসেনা কাজ করে চলেছে। এনিয়ে আর হরিকুমার বলেন, "আমরা ইতিমধ্যেই লোহিত সাগর ও এডেন উপসাগরে অভিযান চালাচ্ছি। ওটা একটা চোক পয়েন্ট। বাব-এল-মান্ডেব প্রণালী দিয়ে সমস্ত জাহাজকে যেতে হবে এবং এটি জলরাশির একটি সংকীর্ণ পথ। এখানেই প্রচুর হামলা হয়েছে। আমরা ভারতীয় কিংবা বিদেশী সকল নাবিকদের সাহায্য করার চেষ্টা করছি।”
তিনি আরও বলেন, "ভারত মহাসাগরের পশ্চিমে চলা অভিযান নিয়ে আমরা অবগত। গত চারমাসে আমরা প্রায় ১০টি রণতরী মোতায়েন করেছি। আমাদের বিমান ও ড্রোন নজরদারি চালাচ্ছে। গোটা পরিস্থিতির উপর তীক্ষ্ণ নজর রাখা হচ্ছে। আমরা পণ্যবাহী জাহাজগুলো নিরাপত্তার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।" পাশাপাশি ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলেকে নিরাপদ রাখতে জলদস্যু, অপহরণ, মিসাইল ও ড্রোন বিরোধী চারটি বিশেষ অভিযান শুরু করা হয়েছে বলেও জানান নৌসেনা প্রধান।
উল্লেখ্য, গত মার্চ মাসেই হাউথিদের হামলায় রক্তাক্ত হয়েছিল এডেন উপসাগর। ইয়েমেনের সশস্ত্র সংগঠনটি একটি পণ্যবাহী জাহাজে মিসাইল ছোড়ে। ওই হামলায় প্রাণ হারান ৩ জন। আহত হয়েছিলেন অনেকেই। হামলার খবর পাওয়া মাত্রই উদ্ধার অভিযান শুরু করেছিল ভারতীয় নৌসেনা। আক্রান্ত জাহাজ থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল ২১ জনকে।