সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশি গার্হস্থ্য হিংসার মামলা (Domestic Violence) দায়ের হয়েছে বাংলায়। ২০২১ সালে এ রাজ্যের মেয়েরাই সবচেয়ে বেশি স্বামী বা শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের অত্যাচারের শিকার হয়েছে। বলছে ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরোর (NCRB) রিপোর্ট। একবছরে এ রাজ্যে ভারতীয় দণ্ডবিধি ৪৯৮এ ধারায় ১৯ হাজার ৯৫২টি গার্হস্থ্য হিংসার মামলা দায়ের হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে যোগীরাজ্য উত্তরপ্রদেশ। তৃতীয় স্থানে কংগ্রেসশাসিত রাজস্থান। উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে গার্হস্থ হিংসার রেকর্ডের নিরিখে এনসিআরবির রেকর্ডে তৃতীয় স্থানে ছিল। এবার একলাফে প্রথমস্থানে উঠে এল বাংলা।
এনসিআরবি রিপোর্ট বলছে, গার্হস্থ্য হিংসার ঘটনায় দ্বিতীয় স্থানে থাকা উত্তরপ্রদেশে একবছরে ১৮ হাজার ৩৭৫টি মামলা দায়ের হয়েছে। রাজস্থানে ঘটেছে ১৬ হাজার ৯৪৯টি গার্হস্থ্য হিংসার ঘটনা। এধরনের ঘটনা সবচেয়ে কম ঘটেছে গোয়ায়। সেখানে মাত্র একটি গার্হস্থ্য হিংসার ঘটনা ঘটেছে। নাগাল্যান্ডে ঘটেছে ২টি এবং সিকিমে ৩টি এধরনের ঘটনা ঘটেছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে রিপোর্টে। এই পরিসংখ্যানের নিরিখে বাংলার ছবিটা বেশ উদ্বেগজনক। এরাজ্যের প্রতি এক লক্ষ মহিলার মধ্যে ৪১.৫০ জন গার্হস্থ্য হিংসার শিকার হচ্ছেন। দেশে গার্হস্থ্য হিংসার গড় ২০.৫০ সেখানে রাজ্যে এধরনের ঘটনার গড় দ্বিগুণের চেয়ে বেশি-৪১.৫০। নিসন্দেহে এই পরিসংখ্যান রাজ্য প্রশাসনের মাথাব্যথা বাড়াবে।
[আরও পড়ুন: রাজ্যের কাছে পাওনা ৫৫ লক্ষ, কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ প্রাক্তন পাবলিক প্রসিকিউটর]
এ প্রসঙ্গে বলে রাখা দরকার অন্যান্য মহানগরের তুলনায় তুলনামূলক ভাল জায়গায় রয়েছে কলকাতা। এ শহরে ৮৪১টি গার্হস্থ্য হিংসার অভিযোগ দায়ের হয়েছে। এদিকে দিল্লিতে ৪ হাজার ৬৭৪. হায়দরাবাদে ১ হাজার ৬৭৮, জয়পুরে ১২০০ এবং লখনওয়ে ১ হাজার ১০১ জন মহিলা স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের দ্বারা হেনস্তার শিকার হয়েছে।
এ প্রসঙ্গ পশ্চিমবঙ্গ মহিলা কমিশনের চেয়ারম্যান লীনা গঙ্গোপাধ্যায় বলছেন, রিপোর্ট থেকে একটা বিষয় স্পষ্ট যে এ রাজ্যের মহিলারা অন্তত পুলিশ প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানাতে পারেন। যার ফলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়। তিনি আরও বলেন, “সমাজে গার্হস্থ্য হিংসার ঘটনা এখনও ঘটে, তা অস্বীকার করা সম্ভব নয়। তবে রিপোর্টে এটা স্পষ্ট যে বাংলার মেয়েরা অন্তত পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করতে পারে। অন্যান্য রাজ্যে তো পুলিশের কাছে পৌঁছতেই পারেন না বহু নির্যাতিতা।”