সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: করোনা (Coronavirus) রোগীদের নিয়ে যে সামাজিক ছুঁৎমার্গ এখনও একচুলও যায়নি, তার প্রমাণ মিলল খাস কলকাতাতেই। মহামারী জয় করে বাড়ি ফিরে আসা নার্সকে পাড়াছাড়া করতে মরিয়া প্রতিবেশীরা। অভিযোগ, বেহালার রায় বাহাদুর রোডের নার্সকে রীতিমতো হুঁশিয়ারি দিয়ে প্রতিবেশীরা বলছেন, তাঁকে পাড়া ছেড়ে চলে যেতে হবে, আর পাড়ায় থাকতে হলে ছাড়তে হবে নার্সের চাকরি। গত কয়েকদিন ধরে প্রতিবেশীরা এই হুমকি শুনে সোমবার ফের বেহালা থানার দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি। পুলিশ নিরাপত্তার আশ্বাস দিয়েছেন।
গত ১০ তারিখ করোনায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভরতি হন আলিপুর কম্যান্ড হাসপাতালের নার্স। তাঁর রিপোর্ট পজিটিভ হওয়ায় ছেলে ও স্বামীও ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টাইনে (Home Quarantine) ছিলেন। তাঁদের কোভিড রিপোর্ট যদিও নেগেটিভই ছিল। এরপর ২০ তারিখ সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে করোনা নেগেটিভ রিপোর্ট হাতে নিয়ে বেহালার বাড়িতে ফেরেন ওই নার্স। অভিযোগ, তারপর থেকেই পাড়া, প্রতিবেশীদের বিরূপতার মুখে পড়তে হয় তাঁদের। করোনা জয় করে ফিরে আসা নার্সের থেকে সংক্রমণ ছড়াতে পারে, এই আশঙ্কায় পরিবার-সহ পাড়া ছেড়ে চলে যেতে বলা হয় তাঁকে। আরও অভিযোগ, তাঁর বাড়ি থেকে যাতে জঞ্জাল পরিষ্কার না করা হয়, পুরসভার সাফাইকর্মীদের সেকথাও বলে রাখেন প্রতিবেশীরা।
[আরও পড়ুন: সেপ্টেম্বরেই সংক্ষিপ্ত বিধানসভা অধিবেশন, করোনা সংক্রমণ এড়াতে বিশেষ ব্যবস্থা]
লাগাতার তিন, চারদিন ধরেই নার্সকে বারবার শুনতে হয়, হয় পাড়া ছেড়ে অন্যত্র চলে যেতে হবে, নয়তো নার্সের চাকরি ছাড়তে হবে। কারণ, পেশার কারণে তিনি হয়তো আরও করোনা রোগীর সেবা করবেন। তাতেই ফের সংক্রমণের আশঙ্কা এবং তাঁর থেকে পাড়ার অন্যান্য বাসিন্দাদের শরীরেও মারণ জীবাণু আক্রমণের ভয় থাকছে। ক্রমাগত এ ধরনের হেনস্তার মুখে পড়ে পুলিশের দ্বারস্থ হয় ওই পরিবার। পুলিশ গিয়ে পাড়ায় প্রতিবেশীদের বুঝিয়ে আসে। তবে হেনস্তা তারপরও কমেনি বলে অভিযোগ। সোমবার ফের থানায় যান নার্সের ছেলে। এবার পুলিশ তাঁদের নিরাপত্তার আশ্বাস দিয়েছে। তবে প্রতিবেশীদের এই মনোভাব নিয়ে কতদিন এভাবে তাঁরা পাড়ায় থাকতেন পারবেন, তা নিয়ে চিন্তিত সেবিকার পরিবার।
[আরও পড়ুন: এক ফোনে ফাঁকা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, যাদবপুর থেকে ধৃত আর্থিক প্রতারণা চক্রের পাণ্ডা]
The post হয় চাকরি ছাড়তে হবে, নয়তো পাড়া! খাস কলকাতায় করোনাজয়ী নার্সকে হুমকি প্রতিবেশীদের appeared first on Sangbad Pratidin.