সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিপজ্জনক মাত্রায় কীটনাশক রয়েছে ভারতীয় মশলায়! মাসখানেক ধরেই এনিয়ে নানা বিতর্ক চলছে। এবার ক্ষতিকারক রাসায়নিক ব্যবহারের প্রমাণ পেয়ে ভারতীয় মশলা প্রস্তুতকারক সংস্থা এভারেস্ট ও MDH-কে নিষিদ্ধ করল নেপাল! ক্ষতিকারক পদার্থ মেশানোর অভিযোগ তুলে গত কয়েকদিনে ভারতে তৈরি মশলা নিষিদ্ধ করেছে সিঙ্গাপুর, হংকংয়ের মতো দেশ। সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে ভারতীয় মশলা নিয়ে বাড়তি সতর্কতার পথে হেঁটেছে আমেরিকা। এই মশলা নিয়ে নতুন কড়াকড়ি চালু করেছে ব্রিটেনও।
বলে রাখা ভালো, মাত্রাতিরিক্ত ইথিলিন অক্সাইড জাতীয় কীটনাশক ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে এভারেস্ট ও MDH-এর বিরুদ্ধে। এই ইথিলিন অক্সাইডের অতিরিক্ত ব্যবহার মানব শরীরে ডেকে আনতে পারে ক্যানসারের মতো মারণরোগ। নানা দেশ থেকে ভারতীয় মশলা নিয়ে অভিযোগ ওঠার পর নড়েচড়ে বসে পড়শি দেশ নেপালও। এএনআই সূত্রে খবর, সেদেশের ফুড টেকনোলজি অ্যান্ড কোয়ালিটি কন্ট্রোল ডিপার্টমেন্টও ভারতীয় মশলার উপর পরীক্ষানিরিক্ষা চালাচ্ছিল। আর তা থেকেই নাকি তারা এই দুই কোম্পানির মশলায় ক্ষতিকারক উপদান থাকার প্রমাণ পেয়েছে। যেকারণে এখন নেপালে এই সংস্থাগুলোর মশলার ব্যবহার, বিক্রি ও আমদানি নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
এই বিষয়ে নেপালের ওই দপ্তরের মুখপাত্র মোহনকৃষ্ণ মহার্জন সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, "এভারেস্ট এবং MDH কোম্পানির মশলা আমদানি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আমরা সেগুলোর বাজারে বিক্রিও নিষিদ্ধ করেছি। ওই সংস্থাগুলোর তৈরি মশলায় ক্ষতিকারক রাসায়নিক পাওয়া গিয়েছে। এই দুটি বিশেষ ব্র্যান্ডের মশলা নিয়ে এখনও পরীক্ষা চলছে। চূড়ান্ত রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে।" জানা গিয়েছে, এই মশলাগুলো নিয়ে পরীক্ষা চালাচ্ছে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের মতো দেশও।
উল্লেখ্য, ভারতের মশলা প্রস্তুতকারক সংস্থা এভারেস্টের বিরুদ্ধে মারাত্বক অভিযোগ আনে সিঙ্গাপুরের খাদ্যসুরক্ষা দপ্তর। সংস্থার জনপ্রিয় ‘ফিস কারি’ মশলায় বিপজ্জনক মাত্রায় কীটনাশক মেশানোর নাকি প্রমাণ মিলেছে। যে কারণে বিবৃতি জারি করে ভারত থেকে সে মশলা আমদানি বন্ধ করে দেয় সিঙ্গাপুর সরকার। ক্ষতিকারক উপাদান মেশানোর অভিযোগ ওঠে আরেক ভারতীয় মশলা উৎপাদনকারী সংস্থা MDH-এর বিরুদ্ধেও। তার পর থেকেই বিভিন্ন দেশ ভারতীয় মশলায় আলাদা করে নজরদারি শুরু করে।
এদিকে, বিশ্বজুড়ে অভিযোগ পাওয়ার পরে নড়েচড়ে বসে ভারতও। মশলায় ‘বিষ’ ব্যবহার করা হচ্ছে কিনা তা যাচাই করতে এবার আরও নিখুঁত এক পদ্ধতি ব্যবহার করা হবে বলে সিদ্ধান্ত নেয় ‘ফুড সেফটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ডস অথোরিটি অফ ইন্ডিয়া’। ভারত থেকে অন্য দেশে পাঠানো মশলা, বাইরে থেকে আনা মশলা এবং দেশে ব্যবহারের জন্য যে মশলা তৈরি হয়, সবই যাচাই করে দেখা হবে। বাদ যাবে না প্যাকেটজাত মশলাও। ইতিমধ্যেই দেড় হাজার নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।