চঞ্চল প্রধান, হলদিয়া: কাকাকে খুনের দায়ে যাবজ্জীবন সাজা হল ভাইপোর। শুক্রবার হলদিয়া মহাকুমা আদালতের বিচারক অঞ্জনকুমার সরকার এই রায় ঘোষণা করেছেন। ২০১৯ সালের ২৪ মে মহিষাদল থানার ধামাইৎনগরের বাসিন্দা মদন ঘড়াকে খুনের ঘটনায় গ্রেপ্তার হয় ভাইপো যুধিষ্ঠির ঘড়া ওরফে সমীর। বৃহস্পতিবার হলদিয়া মহকুমা আদালত উপযুক্ত তথ্য প্রমাণ এবং ১৬ জনের স্বাক্ষ্য গ্রহণের ভিত্তিতে দোষী সাব্যস্ত করেছিল। আজ শুক্রবার সাজা ঘোষণা করা হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সাজাপ্রাপ্ত যুধিষ্ঠির দীর্ঘদিন ধরে তাঁর বৌদি অষ্টমী ঘড়ার উপর অত্যাচার চালত। গৃহবধূর স্বামী কাজের সূত্রে বাইরে থাকায় আরও সুযোগ পেয়েছিল সে। বাড়িতে গৃহবধূর মাসি শাশুড়ি থাকলেও তাঁর প্রতিবাদকে পাত্তা দিত না সে। বাধা দিলে উলটে মারধর করত মাসিকে। প্রতিবেশী কাকা মদনও তাকে বাধা দিতেন। ২০১৯ সালের ২৩ মে যুধিষ্ঠির মদ্যপ অবস্থায় মাসি এবং বৌদিকে গালাগাল, মারধর করেন। পরের দিন ২৪ মে মদনবাবু যুধিষ্ঠিরকে বোঝাতে গেলে যুধিষ্ঠির কোদাল নিয়ে এসে কাকার মাথায় সজোরে দু'বার আঘাত করেন। মদনবাবু ঘটনাস্থলেই রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়েন। চিৎকার শুনে ছুটে আসেন প্রতিবেশীরা। তাঁকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। তবে চিকিৎসা চলাকালীন ২৬ মে তাঁর মৃত্যু হয়।
[আরও পড়ুন: ব্যান্ডেল গুলিকাণ্ডে গ্রেপ্তার মৃতের ভাইপো, পারিবারিক বিবাদে ‘খুন’?]
সেই ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হয় ভাইপো যুধিষ্ঠিরকে। পরিবারের সদস্যদের পাশাপাশি প্রতিবেশী মিলিয়ে মোট ১৬ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। প্রমাণ ও সাক্ষীর ভিত্তিতে হলদিয়া (Haldia Court) আদালত বৃহস্পতিবার অভিযুক্ত যুবককে দোষী সাব্যস্ত করে। এদিন যুধিষ্ঠিরের যাবজ্জীবন সাজা ঘোষণা হয়। সেই সঙ্গে ৫০০০ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে অতিরিক্ত ছয় মাস জেল সাজা ঘোষণা করেছেন বিচারক। এ বিষয়ে সরকারপক্ষের আইনজীবী সোমনাথ ভূঁইয়া জানিয়েছেন, "দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে মহিষাদলের ধামাইৎনগরের ভাইপোর হাতে কাকার খুন হওয়ার ঘটনার মামলা চলেছে। তাতে ভাইপো খুনি সে বিষয়ে যথেষ্ট তথ্য প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। তার ভিত্তিতেই মহামান্য আদালত উপযুক্ত সাজা ঘোষণা করেছে।" এই রায়ে ধামাইৎনগরের ঘড়া পরিবার, পাড়া-প্রতিবেশী সহ গ্রামবাসীরা সকলেই খুশি।