নন্দন দত্ত, সিউড়ি: লটারি কিনে সত্যিই কোটি টাকা জিতেছিলেন অনুব্রত মণ্ডল? সে সংক্রান্ত তথ্যের খোঁজে শুক্রবার বীরভূমের বোলপুরে লটারির দোকানে যান সিবিআই আধিকারিকরা। কিছুক্ষণ দোকানের কর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন তাঁরা। নথি নিয়ে সিবিআইয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পেও যান লটারি বিক্রেতা। তবে সিবিআই ক্যাম্প থেকে বেরনোর পর কার্যত বোমা ফাটালেন তিনি। ওই লটারি বিক্রেতা প্রথমে বলেন, তিনি কাকে লটারি বিক্রি করেছেন তা মনে নেই। পরে আবার তিনি বলেন, “না, আমি অনুব্রত মণ্ডলকে কোনও লটারির টিকিট বিক্রি করিনি।”
তদন্তে উঠে এসেছে, একটি এজেন্সির মাধ্যমে লটারির টিকিট কাটা হয়েছিল। এদিকে টাকা দিয়েছিল অন্য একটি এজেন্সি। আর সেখানেই দানা বেঁধেছে ধোঁয়াশা। মনে করা হচ্ছে, এভাবেই গরু পাচারের কালো টাকা লটারির মাধ্যমে সাদা করা হয়েছিল। সিবিআই সূত্রে খবর, অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mandal) নামে লটারির টিকিটটি কেনা হয়েছিল বোলপুরের একটি এজেন্সি থেকে। সেই এজেন্সির মালিক শেখ রাহুল। এবং লটারিটি ভাঙানো হয়েছিল গাঙ্গুলি এজেন্সি থেকে। ওই এজেন্সির মালিক বাপি গঙ্গোপাধ্যায়কে ইতিমধ্যেই নিজাম প্যালেসে ডেকে পাঠানো হয়। তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয়, ওই টিকিটটি অনুব্রত মণ্ডল নিজে নাকি তাঁর কোনও আত্মীয় বা কর্মীর মাধ্যমে কিনেছিলেন।
[আরও পড়ুন: ‘শুভেন্দু-মুক্ত’ করার ডাক নন্দীগ্রামে, বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিলেন ৫০০ কর্মী, সমর্থক]
উল্লেখ্য, চলতি বছরের জানুয়ারিতে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে একটি ছবি। সেখানে দেখা যায়, লটারিতে ১ কোটি টাকা জিতেছেন অনুব্রত মণ্ডল। প্রথমে এবিষয়ে অনুব্রত মুখ খুলতে চাননি। পরে জানান, দলের কাজে গাড়িতে ঘুরতে ঘুরতে একদিন গাড়ি চালক-নিরাপত্তারক্ষীর কাছে অনুব্রত শোনেন যে, তাঁরা সকলেই কমবেশি লটারির টিকিট কেনেন। সেই সময়ই অনুব্রত মজার ছলে তাঁদের বলেছিলেন, তাঁর জন্য টিকিট কিনতে। সেই মতোই তাঁরা টিকিট কেনে। কিন্তু সেটি ছিল নিরাপত্তারক্ষীদের কাছে। সেই কোটি টাকা প্রাপ্তিই এখন সিবিআইদের ভাবাচ্ছে।
সম্প্রতি রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ডিয়ার লটারি নিয়ে সরব হন। তিনি দাবি করেন, কালো টাকা সাদা করার মাধ্যমই হল লটারি। এই টানাপোড়েনের মাঝে অনুব্রত মণ্ডলের লটারি জয় নিয়ে সিবিআই তৎপরতার নেপথ্যে অবশ্য রাজনীতির গন্ধ পাচ্ছেন অনেকেই।