অর্ণব আইচ: তদন্ত শুরুর পর প্রায় ২ দিন পেরিয়ে গেলেও এখনও হদিশ মিলল না রসিকা আগরওয়ালের মোবাইল, ল্যাপটপের। স্বামীর সঙ্গে অশান্তি ছাড়া ১৬ ফেব্রুয়ারি আর কিছু ঘটেছিল কি না, তা এখনও জানতে পারেনি পুলিশ। ঘটনার শিকড়ে পৌঁছতে দফায় দফায় মৃতের বাপের বাড়ির লোকেদের সঙ্গে কথা বলছে পুলিশ। রসিকার মৃত্যুর নেপথ্যে বাপের বাড়ির অশান্তির তত্ত্বকেও উড়িয়ে দিতে পারছেন না তদন্তকারীরা।
সিঙ্গাপুর থেকে উচ্চশিক্ষা সেরে কলকাতায় ফিরেছিলেন রসিকা। ২০২০ সালে আগরওয়াল পরিবারের কুশলের সঙ্গে বিয়ে ঠিক হয় তাঁর। শোনা যাচ্ছে, মেয়ের বিয়েতে ৭ কোটি টাকা পণ দিয়েছিলেন রসিকার বাবা। বিয়ের পরপরই করোনার (Coronavirus) কারণে লকডাউন জারি হয়ে যায়। প্রথম কয়েকদিন সবকিছু স্বাভাবিক ছন্দই চলছিল। কিন্তু আচমকাই ছন্দপতন হয়। রসিকা বুঝতে পারেন, তাঁর স্বামী মাদকাসক্ত। এনিয়ে শুরু অশান্তি। স্বামীকে স্বাভাবিক জীবনে ফেরানোর চেষ্টা করেন ওই যুবতী। কিন্তু লাভ হয়নি। বরং অশান্তি চরমে পৌঁছেছে। রসিকার বাবা-মার দাবি, এরপর ওই যুবতী জানতে পারেন, বিয়ের পরও প্রাক্তন প্রেমিকার সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে কুশলের। রসিকা বারবার স্বামীকে বলেন ওই সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে। কিন্তু কুশল তা করেননি। বরং রসিকার উপর শুরু হয় অত্যাচার। জানা গিয়েছে, রসিকা বাবা-মাকে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে, তিনি অত্যাচার সহ্য করতে পারছেন না। ভাইকে মেসেজ করে ল্যাপটপের পাসওয়ার্ডও জানিয়েছিলেন। কিন্তু সেই ল্যাপটপ ও মোবাইল পাওয়া যায়নি বলে দাবি রসিকার বাপের বাড়ির পরিবারের। পুলিশ জানিয়েছে, এগুলির সন্ধান চলছে।
[আরও পড়ুন: দিঘা থেকে ফেরার পথে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উলটে গেল যাত্রীবোঝাই বাস, জখম কমপক্ষে ৩০ জন]
জানা গিয়েছে, রসিকার স্বামী ভ্যালেন্টাইনস ডে-তে বান্ধবীর কাছে গিয়েছিলেন। বিষয়টি নিয়ে ফের গোলমাল হয়। যদিও রসিকার আত্মহত্যা করার পিছনে এই কারণ কতটা গুরুত্বপূর্ণ, লালবাজারের গোয়েন্দারা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছেন। কারণ, তদন্তকারীরা জানতে পেরেছে, গত কয়েক মাস ধরেই রসিকা ও তাঁর স্বামী দেশ ও বিদেশের বিভিন্ন জায়গায় একসঙ্গে ছুটি কাটান। ঘটনার দিন দুপুরে রসিকা পাঁচ কোটি টাকার সোনা ও হিরের গয়না তাঁর মায়ের কাছে পাঠান। মৃত্যুর আগে দু’ঘণ্টা ধরে রসিকার মা মেয়েকে বেশ কয়েকবার ফোন করেছিলেন। মা ও বাবার মধ্যে কোনও সমস্যা থাকার ফলেই কি রসিকা মানসিক অবসাদে ভুগতে শুরু করেছিলেন? সেই প্রশ্নও উঠে এসেছে। যদিও রসিকার বাপের বাড়ির পক্ষে এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করা হয়নি। পুরো ঘটনাটির তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।