বিক্রম রায়, কোচবিহার: রাজনৈতিক আঙ্গিনায় তাঁকে বারবার বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে দেখা গিয়েছে। তবে এবার সম্পূর্ণ অন্য ভূমিকায় ধরা দিলেন কোচবিহারের সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রদপ্তরের রাষ্ট্রমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক (Nishith Pramanik)। পিতা, মাতাহীন এক কন্যার বিয়ের সম্পূর্ণ দায়িত্ব নিজের ঘাড়ে তুলে নিলেন তিনি। নিজেই করলেন কন্যা সম্প্রদান। বিয়ের আয়োজনে কোনও খামতি রাখেননি তিনি। বরপক্ষকে সন্তুষ্ট করতে সোনার বিভিন্ন রকম অলংকার থেকে শুরু করে খাট, আলমারি ড্রেসিং টেবিলের মতো আসবাবপত্র প্রদানও করেছেন।
কোচবিহার শহরের ১০নং ওয়ার্ডের বিবেকানন্দ স্ট্রিট সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা সোনালী রাজভর। ছোটবেলায় হারিয়েছেন নিজের বাবা মাকে। আপন বলতে রয়েছেন দুই দিদি। বড়দিদি টুকি রাজভর নিজে বিয়ে না করলেও বোনেদের দায়িত্ব অন্যের বাড়িতে কাজ করে পালন করে গিয়েছেন। কয়েক বছর আগে মেজোবোনকে বিয়ে দিয়েছেন তিনি। বাকি ছিল এই ছোট বোন সোনালী। তাঁর বিয়ে ঠিকও করে ফেলেন দিদি। তবে পাত্রপক্ষের চাহিদা মেটাতে এবং বিয়ে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল আর্থিক অবস্থা। বাধ্য হয়ে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গে যুক্ত বিজেপিনেত্রী দীপা চক্রবর্তী সঙ্গে যোগাযোগ করেন তিনি। আর সেই বিজেপিনেত্রীর মাধ্যমে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে টুকির যোগাযোগ হয়, আর তাতেই মুশকিল আসান। বিয়ের সম্পূর্ণ দায়িত্ব নিজের ঘাড়ে তুলে নেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। গয়না, আসবাব, খাবার সবটাই দেন তিনি।
[আরও পড়ুন: একযুগ পর খুলল পার্টি অফিস, হলদিয়ায় ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখছে বামেরা]
বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার পর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রদপ্তরের রাষ্ট্রমন্ত্রী নিশীথ প্রামানিক জানান, তিনি যখন প্রথম শুনেছেন যে ওই পরিবারটিতে তিনবোন , মাথায় কোনও ছাদ নেই, তখনই পাশে দাঁড়ানোটা নিজের দায়িত্ব এবং কর্তব্য বলে মনে করেছেন। এরপরই তাঁর পক্ষে যতটুকু সম্ভব হয়েছে তিনি সহযোগিতা করেছেন। তাঁর নির্বাচনী এলাকায় এই ধরনের সমস্যা যদি আরও কারও হয়, সেক্ষেত্রেও পাশে থাকার আশ্রয় দেন তিনি। পাত্রী সোনালীর দিদি টুকি রাজভর বলেন, “বাবা-মায়ের অনেক আগেই মৃত্যু হয়েছে। কোনও মতে এক বোনকে বিয়ে দিয়েছিলেন। ছোট বোন সোনালীর বিয়ে কোচবিহার ২ নম্বর ব্লকের থানেশ্বর এলাকার বাসিন্দা মহেশ সোনারের সঙ্গে ঠিক করেছিলাম। খরচে কুলাচ্ছিল না।” পেশায় সোনা-রূপার ব্যবসায়ী পাত্র মহেশ সোনার বলেন, “কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিজে দাঁড়িয়ে থেকে বিয়ের আয়োজন করেছেন এর চেয়ে বড় গর্বের আর বিষয় কী হতে পারে। তাই এই বিয়েতে আমি অত্যন্ত খুশি।”