সুকুমার সরকার, ঢাকা: দুর্গাপুজো (Durga Puja) ঘিরে সাম্প্রদায়িক অশান্তির মতো ঘটনা আর ঘটবে না। এই মর্মে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আশ্বাস দিয়েছে বাংলাদেশ (Bangladesh) সরকার। রবিবার ঢাকায় বিদেশ মন্ত্রক থেকে বিদেশি দূতাবাস, রাষ্ট্রসংঘ ও আন্তর্জাতিক সংস্থাকে পাঠানো চিঠিতে সরকার আশ্বাস দিয়েছে হাসিনা প্রশাসন। চিঠিতে বলা হয়েছে, সব গণমাধ্যমে দায়িত্বশীল ও তথ্যভিত্তিক প্রতিবেদনের মাধ্যমে সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি ও জটিলতা দূর হবে। পাশাপাশি, যে বা যারা দেশে সম্প্রীতি নষ্টের চেষ্টা যারা করবে, তাদের কোনওরকম ছাড় দেওয়া হবে না।
ঢাকার বিদেশ মন্ত্রক থেকে লেখা ওই চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশে হিন্দু (Hindu) সম্প্রদায়ের নারীদের ধর্ষণ ও মৃত্যু নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিথ্যাচার ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে অপপ্রচার চলছে। তা নিয়ে বাংলাদেশ সরকার উদ্বিগ্ন। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ও রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার চেষ্টা চলছে। এর বিরুদ্ধে সরকার কঠোর অবস্থান নেবে। দেশে ও বিদেশে কোনও রাজনৈতিক বা অন্য কোনও পক্ষেরই এ ধরনের মিথ্যাচারকে প্রশ্রয় দেওয়া উচিত নয় বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
[আরও পডুন: হাত বাড়াল ফাইজার, করোনা মোকাবিলায় বাংলাদেশে শুরু কিশোর ও কিশোরীদের টিকাকরণ]
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিদেশ মন্ত্রকের এক আধিকারিক সংবাদমাধ্যমে জানান, ঢাকায় বিদেশি মিশনগুলোকে হিন্দু ধর্মীয় স্থানে হামলার ঘটনার বিষয়ে সরকারের অবস্থান নিয়ে পত্র পাঠানো হয়েছে। সেখানে সাম্প্রতিক হামলাগুলো মোকাবিলায় সরকারের প্রচেষ্টা, ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ানোর উদ্যোগ-সহ সরকারের সার্বিক দৃষ্টিভঙ্গি প্রতিফলিত হয়েছে। চিঠিতে দুর্গোৎসবের সময় হামলার খবর পাওয়ার পরপরই ৩৭টি জেলায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি (BGB) মোতায়েনের কথা তুলে ধরা হয়েছে। চিঠিতে বলা হয়েছে, হামলার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এখন তাদের বিচারপ্রক্রিয়া চলছে।
[আরও পডুন: ২৪ ঘণ্টাই খোলা থাকবে পেট্রাপোল-বেনাপোল সীমান্ত, ভারত-বাংলাদেশের যোগাযোগে নয়া পদক্ষেপ]
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (PM Sheikh Hasina) নিজে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে গুজবে কান না দেওয়ার এবং সবাইকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। সকলের কাছে তাঁর আবেদন, যে কোনও উপায়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে হবে। বিদেশ মন্ত্রকের চিঠিতে বলা হয়েছে, সরকারের বর্ষীয়ান নেতারা ক্ষতিগ্রস্ত স্থানগুলো পরিদর্শন করেছেন। তাঁরা হিন্দু আক্রান্তদের পর্যাপ্ত সুরক্ষা ও ক্ষতিপূরণের আশ্বাস দিয়েছেন। এরই মধ্যে অনেক স্থানে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে। হামলার ঘটনায় মামলা হয়েছে। ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, হিন্দু সম্প্রদায়ের দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। কোনও মন্দির ভাঙচুর হয়নি। হিন্দু সম্প্রদায়ের কাউকে ধর্ষণ করা হয়নি। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও বিভিন্ন ধর্মে বিশ্বাসীদের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের বিষয়ে সরকারের অঙ্গীকার চিঠিতে তুলে ধরা হয়েছে। সেখানে আরও বলা হয়েছে, সম্ভবত বাংলাদেশই বিশ্বে একমাত্র দেশ যেখানে সব ধর্মের উৎসবে সরকারি ছুটি পালন করা হয়।