জ্যোতি চক্রবর্তী, বনগাঁ: নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (CAA) লাগু করার দাবি তুলে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছিলেন বনগাঁর বিজেপি (BJP) সাংসদ তথা মতুয়া সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি শান্তনু ঠাকুর। কেন আইন প্রণয়নের বছর ঘুরলেও এখনও লাগু হল না তা? এই প্রশ্নও তুলেছিলেন। এ নিয়ে দলের সঙ্গে নাকি তাঁর সাময়িক দূরত্ব তৈরি হয়। গত সপ্তাহে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াত ‘গৃহ সম্পর্ক অভিযানে’ বনগাঁয় এলেও সেই কর্মসূচিতে ছিলেন না বিজেপি সাংসদ। ফলে দূরত্বের জল্পনা আরও বাড়ে। কিন্তু শনিবার বনগাঁর ঠাকুরবাড়ি গিয়ে শান্তনুর সঙ্গে বৈঠক করে দলের কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয় বুঝিয়ে দিলেন, কোনও দূরত্ব নেই। মতুয়ারা বিজেপির সঙ্গেই রয়েছেন।
এদিন বেলার দিকে ঠাকুরনগরে পৌঁছে যান কৈলাস বিজয়বর্গীয় (Kailash Vijayvargiya)। মতুয়া মন্দির ঘুরে যান ঠাকুরবাড়িতে। সেখানে তাঁকে স্বাগত জানান ঠাকুরবাড়ির সদস্য তথা সাংসদ শান্তনু ঠাকুর। এরপর দু’জনের মধ্যে বেশ কিছুক্ষণ আলোচনা হয়। তারপরই কৈলাস বিজয়বর্গীয় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে জানান, ”সৌজন্য বৈঠক ছিল। দলের সঙ্গে মাননীয় সাংসদের কোনও দূরত্ব তৈরি হয়নি। সব ঠিক আছে। ওটা বিরোধীদের অপপ্রচার। এ সব নিয়ে বেশি কথা বলার প্রয়োজন মনে করছি না।” এরপর তিনি বেশ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গেই বলেন, ”মতুয়ারা বিজেপির উপরই আস্থা রাখছেন। এ রাজ্যে CAA লাগু হলে তাঁদের সুবিধা হবে। রাজ্য সরকার সহযোগিতা না করলেও এখানে CAA লাগু হবেই।”
[আরও পড়ুন: বাংলায় ‘স্লিপার সেল’, বীরভূমে গ্রেপ্তার JMB জঙ্গির ল্যাপটপ থেকে ফাঁস তথ্য়]
দলের সঙ্গে দূরত্ব নিয়ে শান্তনু ঠাকুর (Santanu Thakur) আলাদা করে কিছু বলতে চাননি। তবে CAA নিয়ে যে তিনি নিজের দাবিতে অনড়, তাও বুঝিয়ে দিলেন স্পষ্ট। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তাঁর বক্তব্য, ”নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন লাগু করার একটা পদ্ধতি থাকে, তা স্থির করতে হবে। আমি চাই, একবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এসে এখানে আশ্বাস দিন যে CAA লাগু হচ্ছে। আমি আশা করি, উনি এর মধ্যেই পদ্ধতি ঠিক করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।”
[আরও পড়ুন: নজরে ভোট প্রস্তুতি, রাজ্যে আসছেন উপ মুখ্য নির্বাচন কমিশনার-সহ দুই কর্তা]
আসলে, CAA ইস্যুতে একযোগে বিজেপির পাশে দাঁড়িয়েছে মতুয়া সম্প্রদায়। এতদিন পর তাঁদের পাকাপাকি এ দেশের নাগরিকত্ব পাওয়ার একটা আশা দেখা দিয়েছে। তাই তা যত তাড়াতাড়ি হয়, ততই নিশ্চিন্ত হন তাঁরা। আর মতুয়া সম্প্রদায়েরই প্রতিনিধি হয়ে শান্তনু ঠাকুর এ নিয়ে যে তৎপর হবেন, সেটাই স্বাভাবিক।