সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তাজমহল নাকি তেজো মহালয়া? পৃথিবীর সপ্তম আশ্চর্য নিয়ে সম্প্রতি তীব্র বিতর্ক তৈরি হয়েছে। হিন্দুদের একটি গোষ্ঠীর দাবি, সেখানে হিন্দু দেবদেবীর মূর্তি ছিল। যা মেনে নিতে রাজি নয় মুসলিম সংগঠন। এই বিতর্কের জল গড়িয়েছে আদালত পর্যন্ত। এবার সব আলোচনায় জল ঢেলে আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া জানিয়ে দিল, তাজমহলের ভিতর কোনওদিনই হিন্দু মন্দির কিংবা দেবদেবীর মূর্তি ছিল না। হিন্দুত্ব গ্রুপের তেজো মহালয়ার দাবিও খারিজ করে দিয়েছেন ASI-এর আধিকারিক।
তাজমহলের (Taj Mahal) ভিতরে ২০টি কক্ষ খোলার দাবিতে গত শুক্রবার এলাহাবাদ হাই কোর্টে একটি পিটিশন দায়ের করা হয়। অযোধ্যা জেলার বিজেপির মিডিয়া ইনচার্জ রজনীশ সিং এই মামলাটি করেন। দাবি করা হয়েছিল, ওই কক্ষগুলিতে হিন্দুদের পূজিত মূর্তি থাকতে পারে। কিন্তু সেই মামলার শুনানিতে হাই কোর্ট এই আবেদন খারিজ করে দেয়। বলা হয়, ওই ২২টি কক্ষ খোলা যাবে না। এবার এএফআইয়ের তরফে জানানো হল, কক্ষগুলি স্থায়ীভাবে বন্ধ ছিল না। সেগুলি রক্ষণাবেক্ষণের কাজের জন্য সম্প্রতি খোলা হয়েছিল। তাছাড়া তাদের কাছে যে সমস্ত নথি রয়েছে, তাতে মন্দির বা দেবদেবীর মূর্তির অস্তিত্বের কোনও প্রমাণ নেই। তাই হিন্দুত্ব গ্রুপের দাবিকে মিথ্যে বলেই ব্যাখ্যা করছে ASI। এমনকী, তারা এও সাফ জানিয়ে দিয়েছে এই স্মৃতিসৌধটি তৈরির আগে এখানে কোনও শিব মন্দিরও ছিল না।
[আরও পড়ুন: ‘কেউ কাটমানি নিয়ে কাজ করেন? আমাদের জানান’, মমতার ছবি দিয়ে নেটদুনিয়ায় ঘুরছে ভুয়ো মেসেজ!]
এএসআইয়ের প্রাক্তন আঞ্চলিক ডিরেক্টর (নর্থ) কেকে মহম্মদ জানান, “তাজমহলের বেসমেন্টে মোট ১০০টি কক্ষ রয়েছে। যা দেখভালের দায়িত্ব রয়েছে এএসআইয়ের উপর। আমি এএসআই আগ্রার প্রধান থাকাকালীন ওই কক্ষে গিয়েছি। সেখানে এমন কোনও ধর্মীয় বিষয় চোখে পড়েনি।” নিরপত্তার স্বার্থেই তা পর্যটকদের জন্য বন্ধ রাখা হয় বলেও জানান তিনি।
বিজেপি সাংসদ দিয়া কুমারী দাবি করেছিলেন যে জয়পুরের রাজা জয় সিংয়ের জমিতে তৈরি হয়েছিল তাজমহল। সেই জমি মুঘল সম্রাট শাহজাহান দখল করে নিয়েছিলেন। জয়পুর রাজপরিবারের সদস্য দিয়ার কথায়, “আমাদের কাছে নথি রয়েছে যে জমিটি জয়পুর রাজ পরিবারের। এই জমিটি শাহজাহান অধিগ্রহণ করেছিলেন।” এই প্রসঙ্গে পালটা দিতে আসরে নামেন ইয়াকুব হাবিবউদ্দিন টুসি। যিনি আবার নিজেকে মোঘলদের বংশধর বলে দাবি করেছেন। একটি ভিডিওতে দিয়া কুমারীর দিকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছেন তিনি। বলছেন, সত্যিই যদি তাঁর কাছে জমি সংক্রান্ত নথি থাকে, তবে তিনি তা প্রকাশ্যে আনুন।