শংকরকুমার রায়, রায়গঞ্জ: উত্তর দিনাজপুরে (North Dinajpur) পার্সেল বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় অবশেষে নিখোঁজ টোটোচালকের হদিশ পেল পুলিশ। রঞ্জন রায় নামে ওই টোটোচালককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদে বেশ কিছু তথ্য হাতে এসেছে পুলিশের, যার উপর ভিত্তি করে তদন্তে অগ্রগতির আশা করা হচ্ছে। উল্লেখ্য, ধৃত যুবকের বাবাই ছেলের হদিশ দিয়ে পুলিশকে সাহায্য করেছেন। ঘটনাস্থলে গিয়ে আজও পরীক্ষানিরীক্ষা চালান ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা।
গত শুক্রবারের ঘটনা। উত্তর দিনাজপুরের হেমতাবাদে বাহারাইল হাইস্কুলের পাশে ওষুধের দোকানে আসে একটি পার্সেল। বিকিকিনির মাঝে একটি টোটো ওষুধের দোকানের সামনে এসে দাঁড়ায়। তাতে কোনও যাত্রী ছিলেন না। টোটোচালক ওষুধের দোকানের মালিক বাবলু রহমান চৌধুরীর হাতে একটি পার্সেল তুলে দেয়। কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই দোকান ছেড়ে টোটো নিয়ে এলাকা ছাড়েন চালক। পার্সেলটি খোলেন ওষুধের দোকানের মালিকের ভাইপো। তা খোলার সঙ্গে সঙ্গে বিস্ফোরণ (Parcel Bomb Blast) হয়। প্রচণ্ড শব্দে কেঁপে ওঠে চতুর্দিক। গুরুতর জখম হন ওই যুবক। তাঁর পাশেই দাঁড়িয়ে থাকা ওষুধের দোকানের মালিক এবং বিস্ফোরণের সময় দোকানে থাকা এক ক্রেতাও জখম হন। তাঁরা রায়গঞ্জ (Raigunj) মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসাধীন। একজনের অবস্থা গুরুতর বলে হাসপাতাল সূত্রে খবর।
[আরও পড়ুন: ‘বিদ্রোহী’ শান্তনু ঠাকুরের সঙ্গে পিকনিকের জের, শোকজের মুখে বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ-রীতেশ]
এই ঘটনার তদন্তভার হাতে নেয় সিআইডি (CID)। এরপর রবিবার রঞ্জন রায় নামে ওই টোটোচালকের হদিশ মেলে। পকাম্বা এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়। সন্ধে নাগাদ তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানান রায়গঞ্জের পুলিশ সুপার সানা আখতার। জানা যায়, শুক্রবার পার্সেলটি ওষুধের দোকানে পৌঁছে দেওয়ার পর নিজের শ্বশুরবাড়িতে চলে গিয়েছিলেন বাহরাইলের বাসিন্দা রঞ্জন। কিন্তু বাড়ির সামনে টোটোটি রাখা ছিল। সেই সূত্র ধরে বাড়িতে গিয়ে তাঁর বাবাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন তদন্তকারীরা। বাবাই জানান যে টোটোর মালিক তাঁর ছেলে। আপাতত সে শ্বশুরবাড়ি পকাম্বায় রয়েছে। রবিবার সেখান থেকেই রঞ্জনকে আটক করা হয়েছে। পরে গ্রেপ্তার করা হয়।
[আরও পড়ুন: ওমিক্রনের গোষ্ঠী সংক্রমণ শুরু হয়েছে, দাপট বেশি বড় শহরগুলিতেই, দাবি কেন্দ্রের]
ধৃতকে জেরা করে পুলিশ জানতে পারে যে তাঁর কাছে এক ব্যক্তি গিয়ে পার্সেলটি পৌঁছে দেয় দুই ব্যক্তি। রঞ্জনকে ১০ টাকা দিয়ে বলা হয়, বাহরাইলের ওই ওষুধের দোকানে যেন পার্সেলটি পৌঁছে দেন টোটোচালক। তাদের কথামতোই রঞ্জন পার্সেল নিয়ে বাবলু চৌধুরীর দোকানে দিয়ে আসেন। রঞ্জনের দাবি, তিনি জানতেনই না যে কী রয়েছে ওই পার্সেলের ভিতর। পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃতকে সোমবার আদালতে পেশ করে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানাবে পুলিশ। যারা তাকে পার্সেলটি পৌঁছে দেওয়ার জন্য টাকা দিয়েছিল, সেই ব্যক্তিদের খোঁজে শুরু হয়েছে তল্লাশি।