সুব্রত বিশ্বাস: ট্রেনে উঠে সহযাত্রীকে মাদক মেশানো খাবার দিয়ে বেহুঁশ করে সর্বস্ব লুট করে পালানোর আগে আরপিএফের হাতে ধরা পড়ে গেল দুষ্কৃতী। রেলরক্ষী বাহিনীর তৎপরতায় সর্বস্ব খোয়াতে গিয়েও বাঁচলেন যাত্রী।
[আরও পড়ুন: ‘লড়াই থাক মাঠে, বাইরে যেন ভুলভ্রান্তি না হয়’, এমপি কাপের উদ্বোধনে সম্প্রীতির বার্তা অভিষেকের]
যাত্রীর সর্বস্ব লুঠ করতে ফরাক্কা থেকে সংরক্ষিত টিকিট নিয়ে এস ৬ কামরাতে চড়ে ধৃত দুষ্কৃতী। পাশের যাত্রীর সঙ্গে সখ্যতা করে তাঁকে ক্রিম বিস্কুট খেতে দেয়। সেই বিস্কুট খেয়ে মালদহ কালিয়াচকের বাসিন্দা ডাবলু শেখ অচৈতন্য হয়ে পড়েন। তারপরই তাঁর মালপত্র নিয়ে চম্পট দেওয়ার কাজটি শুরু করে ওই দুষ্কৃতী। কিন্তু ভাগ্যের ফেরে কিছুক্ষণের মধ্যেই ওই কামরায় প্রহরারত আরপিএফরা এসে পড়েন এবং খানিকটা সম্বিত ফায়ার পেয়ে দুষ্কৃতীকে চিহ্নিত করে আকার ইঙ্গিতে বিষয়টি বুঝিয়ে দেন আক্রান্ত যাত্রী ডাবলু শেখ। তারপরই আবার সংজ্ঞা হারান তিনি। এরপরই কলকাতা পোস্টের ওই বাহিনী পাশের সিটের যাত্রীকে ধরে ফেলে। জিজ্ঞাসাবাদে ভুল পরিচয় দিলেও পরে আধার কার্ডে দেখা যায় নাম গোপাল মিস্ত্রি। জগদ্দলের জয়া রোডের বাসিন্দা। এরপরই আরপিএফ তাকে গ্রেপ্তার করে। তার ব্যাগ থেক দু’পাতার তীব্র মাদক জাতীয় ওষুধ, ক্রিম বিস্কুট ও নানা সরঞ্জাম পাওয়া যায়।
জেরায় অপরাধ প্রবণতার কথা কবুল করে গোপাল আরপিএফকে জানিয়েছে, মাদক মিশ্রিত খাবার খাইয়ে লুঠপাঠ করাই তার পেশা। এজন্য দূরপাল্লা ট্রেনের যাত্রীরাই তার টার্গেট। গা ঢাকা দিতে সংরক্ষিত টিকিট কেটেই যাত্রা করে ট্রেনে। এই অপরাধের জন্য দীর্ঘ দিন সে জলপাইগুড়ি জেলে ছিল। করোনা কালে ছাড়া পেয়ে ফের পুরনো পেশায় ফিরে আসে। তার বিরুদ্ধে রেল পুলিশের একাধিক থানায় অভিযোগও রয়েছে। এজন্য সন্ধান চালাচ্ছিল পুলিশও।
ট্রেনে মাদক খাইয়ে লুটপাঠের মতো অপরাধ দীর্ঘদিন ধরে চলছে। বিশেষত বিহারের উপর দিয়ে আসা যাওয়া করা ট্রেনে এই ধরণের অপরাধ বেশি বলে রেল পুলিশ জানিয়েছে। অচেনা যাত্রীদের থেকে খাবার, পানীয় না গ্রহণ করার জন্য বারবার রেল প্রচার চালালেও অনেক যাত্রীই সে আবেদন অগ্রাহ্য করে থাকেন বেল পুলিশের মত। যার ফলে এই ধরণের ঘটনা বারাবার ঘটছে। এই অপরাধ ঠেকাতে পারে একামাত্র যাত্রী সচেতনতাই। তাই যাত্রীদের অপরিচতের খাবার ট্রেন ও স্টেশনে খেতে নিষেধ করে চলেছে রেল।