সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: টেক্সাস আদালতের নির্দেশে খারিজ হয়ে গিয়েছে ‘ওবামাকেয়ার’ আইন৷ আর এই রায়কে ফের চ্যালেঞ্জ জানালেন প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট তথা এই আইনের স্রষ্টা বারাক ওবামা৷ আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আবারও এই ‘ওবামাকেয়ার’ আইনের পক্ষে সওয়াল করলেন তিনি৷ সোশ্যাল মিডিয়ায় মার্কিন নাগরিকদের দ্রুত ‘ওবামাকেয়ারে’ তাঁদের নাম নথিভুক্ত করার আবেদন করলেন তিনি৷
[সরবজিৎ সিং খুনের মামলায় মুক্ত দুই অভিযুক্ত, ক্ষুব্ধ ভারতীয়রা]
রায় ঘোষণা হওয়ার পরই সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ উগরে দেন ওবামা৷ সেখানে তিনি লেখেন, ”রিপাবলিকানদের দায়ের করা মামলার ভিত্তিতে ‘ওবামাকেয়ার’কে খারিজ করে দিয়েছে আদালত৷ তবে আদালতের এই রায় কার্যকর হতে অনেক সময় লাগবে৷ এই রায় কার্যকর হতে মাসখানেক সময় লাগতে পারে, বছরখানেকও লাগতে পারে৷ তাই আপনারা দ্রুত নিজেদের নাম ওবামাকেয়ারে নথিভুক্ত করুন৷” সাধারণ মানুষকে সস্তায় চিকিৎসা পরিষেবা দিতেই এই আইন তৈরি করেছিলেন প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা৷ সম্প্রতি এর পুরোটাই খারিজ করে দিয়েছে টেক্সাস আদালত। ‘অ্যাফর্ডেবল কেয়ার অ্যাক্ট’ নামে ওই আইনটি ‘ওবামাকেয়ার’ নামেই পরিচিত। ওই আইনের ‘ইনডিভিজুয়াল কভারেজ’-এর অংশটি ‘অসাংবিধানিক’ বলে রায় দিয়েছেন ওই বিচারক। এই রায়ের জেরে বড়সড় রাজনৈতিক জয় পেয়েছেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ওই আইনের বিরোধিতা করে তিনি বহুদিন ধরেই এর অবসান ঘটানোর চেষ্টা করছিলেন।
চলতি বছরের গোড়ায় বেশ কয়েকজন রিপাবলিকান গভর্নর ও প্রদেশের অ্যাটর্নি জেনারেলরা মামলা করে ‘ওবামাকেয়ার’-এর অবসান চেয়েছিলেন। ওই আইনে ফেডেরাল ইনসিওরেন্স এক্সচেঞ্জের অন্তর্গত বিভিন্ন বিষয়ে সই করার শেষ তারিখ ছিল শনিবার। তার আগেই ডিস্ট্রিক্ট কোর্টের বিচারক রিড ও’কোনর জানান, আইনে বলা রয়েছে যে, ‘অ্যাফর্ডেবল কেয়ার অ্যাক্ট’-এ চিকিৎসার সুবিধা পেতে হলে প্রতিটি নাগরিকের ‘স্বাস্থ্যবিমা’ থাকা আবশ্যক। কিন্তু মার্কিন কংগ্রেসের কর নির্ধারণের ক্ষমতা আছে বলেই এমন নিয়ম চালু রাখা যায় না। জর্জ ডব্লু বুশের আমলে নিযুক্ত বিচারকের মতে, ওই অংশটি ‘অসাংবিধানিক’। এবং যেহেতু গোটা আইনের সঙ্গে ওই অংশটি অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত, তাই আইনটিই খারিজ করে দেওয়া হয়েছে। এই রায় ঘোষণার পর স্বাভাবিকভাবেই উচ্ছ্বাস গোপন রাখেননি ট্রাম্প। টুইটে তাঁর প্রতিক্রিয়া, ”দারুণ খবর। কিন্তু অবাক নই। অত্যন্ত সম্মাননীয় এক বিচারক ওবামাকেয়ার-কে অসাংবিধানিক বলেছেন। আমেরিকার পক্ষে সুখবর। আমি বরাবরই বলে আসছি ওটা বিপর্যয়। কংগ্রেসের উচিত এবার কড়া আইন পাশ করা। যাতে আগের সমস্ত শর্ত বহাল থাকে।”
[প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা, সরে দাঁড়ালেন রাজাপক্ষে]
ক্ষমতায় এলে ওবামাকেয়ার বাতিল ও নতুন আইন আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ট্রাম্প। প্রথম দু’বছর সে বিষয়ে অক্লান্ত চেষ্টা করলেও ট্রাম্প এখনও সফল হতে পারেননি। এবং এবারও বিষয়টি সহজে মিটবে না। ইতিমধ্যেই এই রায়ের প্রতিবাদ জানিয়েছেন ডেমোক্র্যাটরা। রায়ের বিরুদ্ধে আবেদনের সম্ভাবনাও প্রবল। উল্লেখ্য, ২০১২ ও ২০১৫-য় ‘ওবামাকেয়ার’নিয়ে মামলায় আইনটি ‘সাংবিধানিক’বলে জানিয়ে দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। এদিকে, রাজনৈতিক দিক থেকে সাফল্যের দিনেই প্রশাসনিক ক্ষেত্রেও জট কাটানোর পথে এগোলেন ট্রাম্প। কয়েকদিন আগেই তিনি জানিয়েছিলেন, চিফ অফ স্টাফ জন কেলি এ বছরের শেষে দায়িত্ব ছাড়বেন। তাঁর জায়গায় কে, তা নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের অন্দরে টানাপোড়েন শুরু হয়েছিল। শুক্রবার প্রেসিডেন্ট বলেছেন, মুলভানি দারুণ কাজ করেছেন। তিনিই আপাতত দায়িত্ব সামলাবেন। সূত্রের খবর, বহু সম্ভাব্য প্রার্থী ট্রাম্পের প্রস্তাবে ‘না’ বলে দেন। যদিও হোয়াইট হাউসের দাবি সম্পূর্ণ উলটো।