সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নিছক সমুদ্র অভিযানে গিয়ে আবিষ্কৃত হল গুপ্তধনের ভাণ্ডার। ঊনবিংশ শতাব্দীতে ডুবে যাওয়া এক জাহাজের সন্ধান পেল ব্রিটেনের এক ডুবুরি দল। জাহাজে সন্ধান চালিয়ে মূল্যবান সামগ্রীর পাশাপাশি পাওয়া গেল ১৭৫ বছরের পুরনো প্রচুর শ্যাম্পেনের বোতল। শত শত বছর ধরে সমুদ্রতলে পড়ে থাকা এই শ্যাম্পেনের দাম যে কার্যত অমূল্য তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
গত ১১ জুলাই বাল্টিক সাগরে অবস্থিত ওল্যান্ড দ্বীপের দক্ষিণ থেকে প্রায় ২০ নটিক্যাল মাইল দূরে ডুব দিয়েছিলেন ২ ডুবুরি। প্রায় ২ ঘণ্টা ধরে সেখানে অনুসন্ধান চালাচ্ছিলেন তাঁরা। সেখানেই তাঁদের নজরে পড়ে একটি ডুবন্ত জাহাজ। একটি ডাইভিং গ্রুপের সদস্য ছিলেন এই দুজন। বিষয়টি নজরে পড়ার পর নিজেদের গ্রুপকে বিষয়টি জানায় তাঁরা। এর পর সেখানে হাজির হয় ৪০ জন ডুবুরির একটি দল। ওই দলের প্রধান টমস স্টাচুরা বলেন, সমুদ্রের প্রায় ১৯০ ফুট গভীরে ওই জাহাজে সন্ধান চালিয়ে পাওয়া গিয়েছে সেল্টার নামের এক জার্মান ব্র্যান্ডের মিনারেল ওয়াটারের বোতল ও প্রচুর পরিমাণ শ্যাম্পেন। উনিশ শতকের ওই জাহাজটি কার্যত ভাল অবস্থাতেই রয়েছে। শ্যাম্পেন ও জলের বোতলগুলি বড় বড় ঝুড়িতে ভরা ছিল। আরও চমকপ্রদ বিষয় হল, জাহাজ থেকে পাওয়া গিয়েছে মাটির তৈরি কারুকাজ করা প্রচুর বাসনপত্র। ওই মাটির বাসন যে সংস্থার তৈরি সেই সংস্থা এখনও বর্তমান। সংস্থার তরফে স্বীকার করা হয়েছে বোতলগুলি তাদেরই তৈরি। তবে শ্যাম্পেনগুলি কোন সংস্থার তা এখনও স্পষ্ট নয়।
ঊনবিংশ শতাব্দীর চিনামাটির বাসন।
[আরও পড়ুন: নীতি আয়োগে মাইক বন্ধ ইস্যুতে মমতার পাশে বিরোধীরা, অভিযোগ খারিজ কেন্দ্রের]
পাশাপাশি সংবাদমাধ্যম সূত্রের খবর, জাহাজের মধ্য থেকে উদ্ধার হওয়া জলের বোতলের মাটির পরীক্ষা করে জানা গিয়েছে, সেগুলি ১৮৫০ থেকে ১৮৬৭ সালের মধ্যে তৈরি। অনুমান করা হচ্ছে, ওই জাহাজ কোনও বাণিজ্যিক জাহাজ ছিল। এবং সেই সময় এই সব মিনারেল ওয়াটার বাণিজ্যিকভাবে বিক্রি করা হত। মূলত রাজারা এই সব জল পান করতেন। এই সব জলের বোতলের এত দামি ছিল যে সেগুলি একস্থান থেকে অন্য স্থানে নিয়ে যাওয়ার জন্য পুলিশি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হত। পাথরের তৈরি ওই মিনারেল ওয়াটারের বোতলে তৎকালীন সময়ের সংস্থার নামও অবিকৃত অবস্থায় রয়েছে। সুইডিশ আধিকারিকদের ইতিমধ্যেই এই অনুসন্ধানের খবর দেওয়া হয়েছে। অনুমান করা হচ্ছে, জাহাজে যা মালপত্র রয়েছে তা উদ্ধার করতে এক বছর লেগে যেতে পারে।
[আরও পড়ুন: দুর্বিষহ অবস্থা, অসমের শরণার্থী শিবির দেখে ক্ষুব্ধ সুপ্রিম কোর্ট]
বিশেষজ্ঞদের দাবি, ১৮৫২ সাল নাগাদ রাশিয়াতে বাণিজ্য করতে যাচ্ছিল ওই অভিশপ্ত জাহাজটি। তবে মাঝপথেই দুর্ঘটনার কবলে পড়ে সমুদ্রে সলিল সমাধি হয় জাহাজটির। মনে করা হচ্ছে, সেই সময় রাশিয়ার রাজা ছিলেন প্রথম নিকোলাস।