সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ১৯৬৮ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি। দেশের বিমান সেনার ইতিহাসে এক অভিশপ্ত দিন হিসেবে তোলা রয়েছে এই তারিখ। ১০২ জন সেনা জওয়ানকে নিয়ে হিমাচল প্রদেশের রোটাং পাশে নিখোঁজ হয়ে যায় বায়ু সেনার এএন-১২ এয়ারক্র্যাফট। বহু অনুসন্ধানের পরও তার কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি। দীর্ঘ ৫৬ বছর তুষার ঘুমে থাকার পর অবশেষে জেগে উঠল অভিশপ্ত সেই বিমান। শুধু তাই নয়, বিমানের ধ্বংসাবশেষের পাশাপাশি উদ্ধার হয়েছে ৪ যাত্রীর দেহ।
সেনা সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯৬৮ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি চণ্ডীগড় থেকে লেহতে যাচ্ছিল বিমানটি। পথে হিমাচল প্রদেশের লাহুল জেলায় প্রতিকূল আবহাওয়ার জেরে ভেঙে পড়ে সেটি। দুর্ঘটনাটি ঘটে চন্দ্রভাগা-১৩ পর্বতশৃঙ্গের কাছে এক গ্লেসিয়ারে। ঘটনার ৫৬ বছর পর গত সোমবার ওই অঞ্চলে ৪টি দেহ উদ্ধারের তথ্য প্রকাশ্যে এসেছে। জানা যাচ্ছে, গত ১০ অক্টোবর থেকে ওই অঞ্চলে অভিযান চালাচ্ছিল ভারতীয় সেনার ডোগরা স্কাইট ও তরঙ্গা মাউন্টেন রেসকিউ দল। সেই সময়েই উদ্ধার হয় ৪ জনের দেহ। সোমবার স্যাটেলাইট ফোনের মাধ্যমে এই খবর জানিয়েছে অভিযানকারী দলটি।
অবশ্য ওই বিমান দুর্ঘটনার পর মৃতদেহ উদ্ধারের জন্য ওই এলাকায় একাধিক অভিযান চালিয়েছে সরকার। ২০০৩ সালে অটলবিহারী বাজপেয়ী ইন্সটিটিউট অফ মাউন্টেনিয়ারিং অভিযান চালানো সময় প্রথম ওই বিমানের ধ্বংসাবশেষ উদ্ধার করে। তার পর থেকে ২০০৫, ০৬, ১৯ সালে দফায় দফায় ওই অঞ্চলে অভিযান চালায় সেনাবাহিনী। তবে দুর্গম ওই অঞ্চলে পৌঁছতে পারেনি কেউ। শেষে ২০১৯ সালে অভিযান চালানোর সময় ৫টি দেহ উদ্ধার করা হয়। অবশেষে সেখান থেকে আরও ৪টি দেহ উদ্ধার করা হল। জানা যাচ্ছে, দীর্ঘ বছর ধরে সেখানে পড়ে থাকার জেরে দেহগুলিতে পচন ধরেছে। যদিও ৩টি দেহ চিহ্নিত করা গিয়েছে। তারা হলেন মালখান সিং, সেপোয় নারায়ণ সিং এবং থমাস চেরিয়ান। চতুর্থ দেহের পরিচয় এখনও জানা যায়নি।
এঁদের মধ্যে মালখান সিং ও নারায়ণ সিং সেনার মেডিক্যাল বিভাগের সদস্য ছিলেন। পাশাপাশি থমাস চেরিয়ান ছিলেন সেনার ইলেক্ট্রনিক্স ও মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়র। তাঁদের সঙ্গে থাকা পরিচয়পত্র দেখেই চিহ্নিত করা গিয়েছে ওই সেনা কর্মীদের। এত বছর পর পরিবারের সদস্যদের দেহ উদ্ধারের ঘটনায় দুঃখের মাঝেও স্বস্তিতে পরিবার।